আন্তর্জাতিক ডেস্ক
অক্সিজেনের অভাবে চোখের সামনে দম বন্ধ হয়ে আসছিল করোনা আক্রান্ত স্বামীর। নিঃশ্বাস নিতে প্রচণ্ড কষ্ট হচ্ছিল তার। স্বামীকে এভাবে দেখে সহ্য করতে পারছিলেন না রেনু। কোনোভাবে স্বামীকে বাঁচাতে চাইছিলেন তিনি।
নিজে আক্রান্ত হবেন যেনেও স্বামীর মুখে মুখ লাগান রেনু। নিজের অক্সিজেনটুকু দিতে চেষ্টা করেন মৃত্যুপথযাত্রী স্বামীর মুখে। কিন্তু সব চেষ্টাই ব্যর্থ হয় তার। আগ্রার একটি হাসপাতালের বাইরে অটোর মধ্যেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পরেন স্বামী রবি সিংঘাল।
সম্প্রতি আগ্রার এই ছবিটি সবার চোখে পানি এনে দিয়েছে। স্ত্রীর সব চেষ্টা ব্যর্থ করে স্বামীর মৃত্যু যেন চারদিকে হাহাকার ছড়িয়েছে। রেনুর স্বামী হারানোর দুঃখে যেন তখন বাতাসও ভারী হয়ে উঠেছিল।
রেনু সিংঘাল উত্তরপ্রদেশের আগরার আভাস বিকাশ সেক্টর-৭-এর বাসিন্দা। তার স্বামীর হঠাৎ করেই শ্বাসকষ্ট দেখা দেয়ায় তিনি তাকে স্বরোজিনি নাইরু মেডিকেল কলেজ অ্যান্ড হসপিটালে (এসএনএমসি) নিয়ে যান।
রেনু একটি অটোতে করে রবিকে নিয়ে হাসপাতালের উদ্দেশ্যে বেরিয়ে পড়েন। তারা সরকারি ওই হাসপাতালের কাছাকাছি পৌঁছানোর পরপরই রবির অবস্থা খারাপ হতে থাকে। রেনু আপ্রাণ চেষ্টা করেন যেন হাসপাতাল পর্যন্ত রবিকে নিয়ে যাওয়া যায়। যখন দেখলেন রবি কিছুতেই শ্বাস নিতে পারছেন না; তখন তিনি মুখ দিয়ে স্বামীর মুখে অক্সিজেন দেয়ার চেষ্টা করতে থাকেন। কিন্তু এতেও কোনো কাজ হয়নি। তিনি রবিকে বাঁচাতে পারেননি।
প্রতিবেশী দেশ ভারতে অক্সিজেনের অভাবে মারা যাচ্ছে হাজারো মানুষ। স্বজনদের কোনো চেষ্টাই কাজে লাগছে না। বাঁচানো যাচ্ছে না মা, বাবা, ভাই, বোন, স্ত্রী, স্বামী বা সন্তানকে। স্বজনদের বুক খালি করে প্রিয় মানুষগুলো চলে যাচ্ছেন না ফেরার দেশে। একটুখানি অক্সিজেন যে বেঁচে থাকার জন্য কতটা প্রয়োজন তা হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছে সবাই।
উত্তরপ্রদেশে হাসপাতালে বেডের সংকট, অক্সিজেনের সংকট দিন দিন তীব্র থেকে তীব্রতর হয়ে উঠছে। হাসপাতালগুলোতে রোগীর চাপ ক্রমাগতই বাড়ছে। অনেক হাসপাতালে জায়গা না থাকায় রোগীকে ফিরিয়ে দেয়া হচ্ছে।
সবুজ/এএমকে
ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন