প্রকাশিত: ডিসেম্বর ২৫, ২০২১, ০২:২৫ এএম
২২ বছর পর প্রথমবারের মতো অস্ট্রেলিয়ার তাসমানিয়ার উপকূলে দেখা মিলেছে বিরল
প্রজাতির হাতওয়ালা (হ্যান্ডফিশ) গোলাপি মাছের।
দেশটির গবেষকরা গভীর সমুদ্রে ধারণ করা ফুটেজ বিশ্লেষণ করে এ তথ্য জানিয়েছেন।
এর আগে তাসমানিয়ার একজন ডুবুরি ১৯৯৯ সালে এই গোলাপি মাছ দেখতে পান। অস্তিত্ব সংকট
বিবেচনা করে সম্প্রতি একে বিপন্ন প্রজাতি ঘোষণা করে অস্ট্রেলিয়া কর্তৃপক্ষ। অস্ট্রেলিয়ার তাসমানিয়ায় দক্ষিণের দ্বীপ এলাকায়
এ ধরনের ১৪ রকম হ্যান্ডফিশ দেখা যায়। খবর- বিবিসির
গোলাপি হ্যান্ডফিশের বিশেষত্ব হচ্ছে, মাছগুলোর ছোট হাত থাকায় সাঁতারের পাশাপাশি হাতের ওপর ভর দিয়ে সমুদ্রের তলদেশে
হেঁটে বেড়াতে পারে। এ বছরের শুরুতে ধারণ করা ফুটেজ বিশ্লেষণ করে গবেষকরা বলছেন, দীর্ঘদিন পর আবার দেখা মিলেছে এই মাছের।
গত ফেব্রুয়ারিতে তাসমানিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক নেভিল ব্যারেটের
নেতৃত্বাধীন গবেষক দল তাসমান ফ্র্যাকচার মেরিন পার্কে সমুদ্রের তলদেশে একটি
ক্যামেরা স্থাপন করেন। প্রবাল, লবস্টার ও বিভিন্ন মৎস্য প্রজাতি নিয়ে জরিপ
চালানোর উদ্দেশ্যে তারা এই কাজ করেন। ফুটেজে দেখা যায়, বড় একটি লবস্টারের তাড়া খেয়ে সমুদ্রের তলদেশের শিলাস্তর থেকে ১৫ সেন্টিমিটার
দৈর্ঘ্যের মাছটি বের হয়ে আসছে। প্রথমে মাছটি কয়েক সেকেন্ড সেখানে থেমে থাকে ও
পরিস্থিতি বোঝার চেষ্টা করে। এরপর সেটি সাঁতার কেটে চলে যায়।
গবেষক দলের এক সদস্য গত অক্টোবরে ফুটেজ বিশ্লেষণের সময় মাছটি শনাক্ত করেন।
তিনি দেখতে পান, অনেকগুলো বড় আকারের সামুদ্রিক প্রাণীর ভিড়ে
অদ্ভুত এক প্রাণীও রয়েছে। ওই গবেষক বলেন, ‘আমি খসড়া
ভিডিওগুলোর একটি দেখছিলাম। তখন দেখলাম, প্রবাল প্রাচীরের
ওপর একটি ছোট মাছ লাফালাফি করছে। এটিকে একটু অন্য রকম মনে হচ্ছিল। ফুটেজ আরেকটু বড়
করে দেখলাম এর ছোট ছোট হাতও আছে।’
মাছটি সম্পর্কে নতুন তথ্যও মিলেছে। আগের চেয়ে অনেক বেশি গভীর ও খোলা পানিতে
বসবাস করছে এ মাছ। তাসমানিয়ার বনাঞ্চল-সংলগ্ন দক্ষিণ উপকূলে ৩৯০ ফুট গভীর পানিতেও
এ মাছের অস্তিত্ব পাওয়া যাচ্ছে।
প্রধান গবেষক ও সামুদ্রিক জীববিজ্ঞানী নেভিল ব্যারেট বলেন, ‘এটি গুরুত্বপূর্ণ আবিষ্কার। এর মধ্য দিয়ে গোলাপি হ্যান্ডফিশের টিকে থাকার
ব্যাপারে আশার সঞ্চার হয়েছে। অতীতে যেমনটা ভাবা হতো, তার তুলনায়
বিস্তৃত আবাসস্থলে তারা বাস করে।’