প্রকাশিত: ডিসেম্বর ১৬, ২০২১, ১১:২১ পিএম
করোনাভাইরাস ছড়িয়ে আছে বিশ্বজুড়ে। ইতোমধ্যে শনাক্ত হয়েছে ভাইরাসটির নতুন এক ভ্যারিয়েন্ট। দক্ষিণ আফ্রিকায় প্রথম শনাক্ত হয় এ ভ্যারিয়েন্টটি। আর ওমিক্রন নিয়ে বিশ্বজুড়ে ছড়িয়েছে আতঙ্ক। ভাইরাসের নতুন এ ধরনটি ঠিক কতটা ভয়ঙ্কর সেটি জানতে সারা বিশ্বেই পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলছে। তবে সম্প্রতি প্রকাশিত এক গবেষণা বলছে, ভাইরাসের ডেল্টা বা মূল করোনাভাইরাসের তুলনায় ৭০ গুণ বেশি দ্রুতগতিতে মানুষকে সংক্রমিত করতে পারে ওমিক্রন।
এছাড়া
ভারতে প্রথম শনাক্ত ভাইরাসের ডেল্টা ধরনের চেয়ে ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট
কম গুরুতর অসুস্থতা সৃষ্টি করে। ইউনিভার্সিটি অব
হংকংয়ের একটি গবেষণায় এই
তথ্য উঠে এসেছে বলে
এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম ব্লুমবার্গ।
দক্ষিণ
আফ্রিকায় করোনার এ ধরনটি প্রথম
শনাক্তের পর প্রায় একই
ধরনের কথা বলেছিলেন দেশটির
চিকিৎসক ও স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।
ইউনিভার্সিটি অব হংকংয়ের গবেষণায়
প্রাপ্ত তথ্য মূলত আফ্রিকার
চিকিৎসকদের মতামতের পাল্লাকেই ভারী করেছে।
বুধবার
(১৫ ডিসেম্বর) এক বিবৃতিতে হংকংয়ের
ওই বিশ্ববিদ্যালয়টি জানায়, সংক্রমণের ২৪ ঘণ্টা পরে
মানব ব্রঙ্কাসে ওমিক্রনের বিস্তারের সুপারচার্জড গতি পাওয়া গেছে।
মাইকেল চ্যান চি-ওয়াইয়ের নেতৃত্বে
ইউনিভার্সিটি অব হংকংয়ের একদল
গবেষক এই গবেষণায় অংশ
নেন।
গবেষণায়
দেখা গেছে, মানুষের ফুসফুসের টিস্যুতে সংক্রমণের মাধ্যমে মূল করোনাভাইরাস যে
ধরনের গুরুতর ক্ষতি করতে পারে ওমিক্রন
ভ্যারিয়েন্টে গুরুতর অসুস্থতার সম্ভাবনা তার চেয়ে ‘১০
গুণেরও অধিক’ কম।
এতে
আরও বলা হয়েছে, একজনের
কাছ থেকে অন্যজন সহজে
সংক্রমিত হলেও ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট
আক্রান্ত ব্যক্তির ফুসফুসের ততটা ক্ষতি করে
না যতটা ভাইরাসের পূর্ববর্তী
স্ট্রেনগুলো করতে পারে।
দক্ষিণ
আফ্রিকায় প্রথম শনাক্ত হওয়ার পর গত তিন
সপ্তাহের বেশি সময়ে অত্যন্ত
দ্রুতগতিতে বিশ্বের ৭৭টি দেশে ছড়িয়ে
পড়েছে ওমিক্রন। তবে ভাইরাসের এই
ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্তদের কেবল হালকা উপসর্গ
দেখা দিচ্ছে এবং তাদের হাসপাতালে
ভর্তি হওয়ার প্রয়োজন পড়ছে না। ইউনিভার্সিটি
অব হংকংয়ের গবেষণায়ও মূলত এ বিষয়টিই
উঠে এসেছে।
দক্ষিণ
আফ্রিকার সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞরা বলছেন,
ওমিক্রন সুপার-স্প্রেডার, দ্রুতগতিতে ছড়াতে পারে। তবে এর গুরুতর
অসুস্থতা সৃষ্টির ক্ষমতা ভাইরাসের ডেল্টা ধরনের চেয়ে অনেক কম।
ওমিক্রনের কারণে কোনো জটিল রোগও
হতে দেখা যায়নি।
এছাড়া
ডেল্টার চেয়ে ওমিক্রনে সংক্রমণের
উপসর্গও কিছুটা আলাদা। ওমিক্রনে সংক্রমিতদের সাধারণ কিছু উপসর্গ হচ্ছে-
প্রচণ্ড মাথাব্যথা, হাত-পাসহ শরীর ব্যথা,
গলা ব্যথা, ক্লান্তি ও গলা শুকিয়ে
যাওয়া। এছাড়া ওমিক্রনে আক্রান্ত হলে পালস রেট
এবং শরীরের তাপমাত্রা বেড়ে যেতে পারে।
এর পাশাপাশি সংক্রমণ বেশি হলে প্রচণ্ড
ক্লান্তি, শরীর ব্যথা ও
মাথাব্যথা শুরু হচ্ছে।
উল্লেখ্য,
গত ২৪ নভেম্বর দক্ষিণ
আফ্রিকায় প্রথমবারের মতো ওমিক্রনে আক্রান্ত
রোগী শনাক্ত হয়। এরপরই তা
বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়ে।
করোনার বি.১.১.৫২৯ নামক এই
ভ্যারিয়েন্টকে গ্রিক বর্ণমালার ১৫ নম্বর অক্ষর
অনুযায়ী ‘ওমিক্রন’ নামকরণ করে বিশ্ব স্বাস্থ্য
সংস্থা।
এআরআই/এম. জামান