• ঢাকা শুক্রবার
    ১৫ নভেম্বর, ২০২৪, ১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

বিশ্বের সবচেয়ে ‘ঘিনঘিনে’ খাবার

প্রকাশিত: নভেম্বর ৩০, ২০২১, ০১:৪৩ এএম

বিশ্বের সবচেয়ে ‘ঘিনঘিনে’ খাবার

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে হাজার হাজার মাইল পাড়ি দেন ভ্রমণপিপাসুরা। কেউ ভালোবাসেন অ্যামাজনের গহিন জঙ্গলে রোমাঞ্চকর মুহূর্তের স্বাদ নিতে, কারও আবার পাতায়া সৈকতে গা এলিয়ে সমুদ্রস্নানের মুগ্ধতায় জড়াতে ভালো লাগে।

তবে পৃথিবীর যেকোনো প্রান্তে ঘুরতে গিয়ে সেখানকার সংস্কৃতির সঙ্গে মিশতে না পারলে অপূর্ণতা থেকে যায়। আর ভিন্ন দেশের ভিন্ন গোত্রে সংস্কৃতির পার্থক্য সবচেয়ে বেশি ফুটে ওঠে খাবারে। বিশ্বজুড়ে কিছু কিছু খাবারের উৎসব আছে, যেমন পোকামাকড় থেকে জন্তু-জানোয়ারের নানা রকম বিচিত্র অঙ্গপ্রত্যঙ্গএসব খাবার দেখলে চোখ কপালে উঠতে বাধ্য!

এক একটি দেশের আচার-বিচার যেমন এক এক রকম, তেমনি বিচিত্র সব খাদ্যাভ্যাস। হয়তো কোনো পদ কোনো দেশের সবচেয়ে প্রিয় খাদ্য, অথচ সেটাই আপনি কোনো দিন মুখে তোলার কথা ভেবেই দেখবেন না। দেখে নেয়া যাক তেমনি কিছু অদ্ভুত খাবারের তালিকা।



ট্যারান্টুলা ভাজা, কম্বোডিয়া :

ভাতের সঙ্গে মাকড়সা ভাজা খাওয়ার কথা তো সচরাচর কেউ ভাববেন না। কম্বোডিয়ায় ট্যারান্টুলা খাওয়ার চল শুরু হয়েছিল চরম দারিদ্র্য থেকেই। কিন্তু ধীরে ধীরে বেশ জনপ্রিয় হয়ে ওঠে এই খাবার। শোনা যায় অনেকটা কাঁকড়ার মতোই খেতে নাকি!


বালুট, ফিলিপিন্‌স :

হাঁসের নিষিক্ত ডিম জ্যান্ত অবস্থায় ভেজে ফেলা হয়। তাকেই বলে বালুট। নুন, সস আর ভিনেগার দিয়ে পরিবেশন করা হয়। প্রথমে সামান্য ফাটিয়ে নিয়ে তরলটা গিলে ফেলতে হয়। তার পর বাকিটা খাওয়ার রীতি। ভ্রূণ যদি খানিক পরিণত হয়ে যায়, তা হলেও সবটা খেয়ে ফেলারই কথা।


টুনা মাছের চোখ, জাপান :

টুনা মাছের চোখ আকারে বেশ বড়। তাই আলাদা করে বাজারে বিক্রি হয়। বিভিন্ন রেস্তোরাঁয়ও এগুলো সয়াসস দিয়ে ভাপিয়ে রান্না করা হয়। খেতে অনেকটা স্ক্যুইডের মতো।


শিরাকো, জাপান :

শিরাকো মানে ‘সাদা সন্তান। মাছের শুক্রাণুর থলি দেখতে অনেকটা মস্তিষ্কের মতো, কিন্তু খেতে নাকি মিষ্টি কাস্টার্ডের মতো!


সাদা পিঁপড়ের ডিমের স্যুপ, লায়োস :

পিঁপড়ের ডিম, কিছু পরিণত ভ্রূণ এবং কিছু সাদা পিঁপড়ে নিয়ে এই স্যুপ তৈরি হয়। নিঃসন্দেহে দুনিয়ার সবচেয়ে অদ্ভুত স্যুপগুলোর মধ্যে অন্যতম। খেতে নাকি বেশ সুস্বাদু!


হরিণের নাক, কানাডা :

হরিণের মাংস অনেক জায়গাতেই খাওয়া হয়। কিন্তু নাক নিয়ে সাধারণত বেশি কেউ ভাবেন না। কানাডায় অবশ্য অন্য ব্যাপার! মুসের (এক ধরনের হরিণ) নাক প্রথমে সিদ্ধ করে সব চুল সরিয়ে ফেলে মশলা মাখিয়ে রান্না করা হয়। তার উপর একটি ঝোল সামান্য জমিয়ে একটা জেলির মতো তৈরি করা হয়। খেতে কতটা সুস্বাদু হয়, তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে।


আইরাগ, মঙ্গোলিয়া :

ঘোড়ার দুধ পচিয়ে খেয়েছেন কখনও? মঙ্গোলিয়ায় এটি এমন কিছু অবাক করার মতো খাবার নয়। ঘোড়ার দুধ পচিয়ে মদের মতো তরল তৈরি করা হয়। ঠাণ্ডা করে বাটিতে পরিবেশন করা হয়।


মুকটুক, গ্রিনল্যান্ড :

গ্রিনল্যান্ডের ইনুয়িটরা এই খাবার প্রায়ই খেয়ে থাকেন। তিমি মাছের চামড়া এবং চর্বি দিয়ে তৈরি এই খাবার কাঁচাই খেতে হয়। বড়জোর সামান্য আচার লাগানো থাকে। খেতে নাকি অনেকটা হেজেলনাটের মতো!


হকার্ল, আইসল্যান্ড :

কী করে এই খাবার আইসল্যান্ডের জাতীয় পদ হয়ে গেল কেউ জানেন না। কিন্তু আইসল্যান্ডের হাঙর ধরে মাথা কেটে ফেলা হয়। তার পর বালি এবং পাথরে পুঁতে রাখা হয় দু-তিন মাস। তার পর আবার বার করে রোদে শুকনো হয় আরও কিছু মাস। শোনা যায়, প্রথম বার যারা খান, তাদের পক্ষে খুব একটা সুখকর হয় না অভিজ্ঞতাটা।


পুরনো ডিম, চীন :

কোনো ডিম পচে গেলে কি আপনি খাবেন? চীনে কেউ খেয়েছিলেন। এবং তার পর হঠাৎই এই খাবার দেশের অন্যতন সেরা পদ হয়ে যায়! ছাই এবং মাটি মাখিয়ে ডিম রাখা হয় অনেক দিন। কুসুম পচে যখন সবুজ হয়ে সালফারের কড়া দুর্গন্ধ বেরোবে, তখন নাকি পরিবেশন করা হয়!

নূর/এএমকে/এম. জামান

আর্কাইভ