প্রকাশিত: নভেম্বর ১৩, ২০২১, ০৫:২৬ পিএম
আদিবাসী যোদ্ধাদের সম্মান জানাতে আগামী সপ্তাহে বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে
মধ্য প্রদেশ সরকার। রাজ্যের রাজধানী ভোপালে আয়োজিত সেই মেগা অনুষ্ঠানে ভারতীয়
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি উপস্থিত থাকবেন। সর্বোচ্চ চার ঘণ্টা তিনি শহরে
থাকবেন। মঞ্চে থাকবেন মাত্র ১ ঘণ্টা ১৫ মিনিট। অথচ সেই অনুষ্ঠানের জন্যই অন্তত ২৩
কোটি রুপি খরচ করছে শিবরাজ সিং চৌহান সরকার।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের খবর, আদিবাসী যোদ্ধা বিরসা মুণ্ডার স্মরণে আগামী ১৫
নভেম্বর জনজাতীয় গৌরব দিবস উদযাপন করবে মধ্য প্রদেশ সরকার। সেদিন জাম্বুরি
ময়দানের সমাবেশে প্রধানমন্ত্রী মোদি ভাষণ দেবেন এবং দেশটির প্রথম সরকারি-বেসরকারি
অংশীদারত্বে তৈরি হাবিবগঞ্জ রেলওয়ে স্টেশনের উদ্বোধন করবেন।
ভোপালে মোদির সেই অনুষ্ঠানে জন্য এক সপ্তাহ ধরে তিনশ জনেরও বেশি শ্রমিক
জাম্বুরি ময়দানে কাজ করছেন। বানানো হয়েছে পাঁচটি সুবিশাল গম্বুজ। আদিবাসীদের জন্য
তৈরি হচ্ছে বড় বড় প্যান্ডেল। ময়দান চত্বর আদিবাসী চিত্রকলা ও আদিবাসী সম্প্রদায়ের
গুণীজনদের ছবি দিয়ে সাজানো হয়েছে।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন মধ্য প্রদেশের ৫২টি জেলার মানুষ। তাদের যাতায়াত, খাওয়া-দাওয়া ও থাকার জন্য ১২ কোটি রুপির বেশি খরচ করা হবে। মঞ্চের পাঁচটি
গম্বুজ, তাঁবু, ময়দান সাজানো এবং
অনুষ্ঠানের প্রচারের জন্য খরচ হচ্ছে ৯ কোটির বেশি।
করোনাভাইরাস মহামারির মধ্যে গোটা বিশ্বের মতো ভারতের অর্থনীতিও যখন ধুঁকছে, তখন একটি অনুষ্ঠানের জন্য বিপুল অর্থ ব্যয় নিয়ে এরই মধ্যেই প্রশ্ন তুলেছেন
অনেকে। তবে এর পেছনে বিজেপির রাজনৈতিক স্বার্থই দেখছেন বিশ্লেষকেরা।
মধ্য প্রদেশে ৪৭টি আসন রয়েছে তফশিলি জাতি এবং উপজাতিদের জন্য সংরক্ষিত। এর
মধ্যে ২০১৩ সালে ৩১টি আসনে জিতেছিল বিজেপি। কিন্তু ২০১৮ সালে তা কমে হয় ১৬। ফলে
আদিবাসী ভোটারদের ফের নিজেদের দিকে টানতেই যে বিজেপি এমন ব্যয়বহুল আয়োজন করছে, তা বুঝতে কারো তেমন কষ্ট হচ্ছে না।
তাৎপর্যের বিষয় হলো, ভারতের জাতীয় ক্রাইম রেকর্ড ব্যুরোর তথ্য
অনুযায়ী, ভারতের মধ্যে ২০২০ সালে আদিবাসীদের আক্রান্ত
হওয়ার ঘটনা সবচেয়ে বেশি ঘটেছে এই মধ্য প্রদেশেই– ২ হাজার ৪০১টি। ২০১৯ সালেও এর
সংখ্যা ছিল ১ হাজার ৯২২। তার আগের বছর ঘটেছিল ১ হাজার ৮৬৮টি। অর্থাৎ, মাত্র দু’বছরে ব্যবধানে রাজ্যটিতে আদিবাসীদের বিরুদ্ধে সহিংসতা বেড়েছে প্রায়
২৮ শতাংশ।
শামীম/ডাকুয়া