প্রকাশিত: অক্টোবর ১৩, ২০২১, ০৩:০৫ পিএম
করোনাকালীন বিধিনিষেধের
কারণে পরিষ্কার হয়ে গিয়েছিল দিল্লির আবহাওয়া। কল-কারখানা বন্ধ। যানবাহন চলছিল না।
প্রতিবেশী রাজ্যে খড় পোড়ানো হচ্ছিল না। তাই পরিবেশ পরিচ্ছন্ন হয়েছিল। যমুনায়
ফিরে এসেছিল নীল জল। আবার তাতে মাছের দেখা মিলেছিল। কিন্তু দিল্লিবাসীর কপালে সেই
সুখ দীর্ঘস্থায়ী হলো না। সেখানে আবার ফিরছে ভয়ঙ্কর দূষণ।
বায়ুদূষণের ফলে ভারতের রাজধানী শহরে দিন দিন বেড়ে চলেছে এ জনিত কারণে অসুস্থ মানুষের সংখ্যা। সম্প্রতি এক গবেষণায় ব্যাপারটি আরও একবার স্পষ্ট হলো। রাজধানী নয়াদিল্লিভিত্তিক গবেষণা সংস্থা দ্য এনার্জি অ্যান্ড রিসোর্স ইনস্টিটিউট (টেরি) সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, দিল্লির ১৪ থেকে ১৭ বছর বয়সী কিশোর-কিশোরীদের ৭৫ দশমিক ৪ শতাংশই মৃদু কিংবা মাঝারি মাত্রার শ্বাসকষ্টে ভুগছে।
তার বাইরে চোখে চুলকানি ও জ্বালা-পোড়াজনিত উপসর্গে ভুগছে ২৪ দশমিক ২ শতাংশ, দীর্ঘস্থায়ী সর্দিতে ভুগছে ২২ দশমিক ৩ শতাংশ এবং শুকনো কাশিতে ভুগছে ২০ দশমিক ৯ শতাংশ অপ্রাপ্তবয়স্ক।
টেরির গবেষণা প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে বুধবার (১৩ অক্টোবর) এ তথ্য জানিয়েছে ভারতের জাতীয় দৈনিক হিন্দুস্তান টাইমস। গবেষণা প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, বায়ুদূষণের কারণে শ্বাসতন্ত্র ও হৃদযন্ত্রের নানাবিধ সমস্যায় আক্রান্ত অপ্রাপ্তবয়স্কদের সংখ্যাও প্রতিদিন বাড়ছে দিল্লিতে।
টেরির গবেষক দলের অন্যতম সদস্য কানাহাইয়া লাল হিন্দুস্তান টাইমসকে বলেন, ‘স্বাস্থ্যকর ও দূষণমুক্ত প্রতি ঘনমিটার বাতাসে সর্বোচ্চ ৬০ ন্যানোগ্রাম পর্যন্ত সিসা বা অন্যান্য ধাতব অণু থাকতে পারে।’
‘কিন্তু দিল্লিতে ২০১৯ সালে প্রতি ঘনমিটার বাতাসে সিসা ও অন্যান্য ধাতব অনুর পরিমাণ ছিল ২৩৩ ন্যানোগ্রাম এবং ২০২০ সালে তা বেড়ে পৌঁছায় ৪০৬ ন্যানোগ্রামে; তার মধ্যে মারাত্মক বিষ আর্সেনিক অণুর উপস্থিতি ছিল ৩ ন্যানোগ্রাম।’
ভারতের চিকিৎসক ও জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, দিল্লির বাতাসের বর্তমান যে পরিস্থিতি, তাতে দিল্লিবাসীদের অধিকাংশই মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকিতে আছেন। বাতাসে সিসার পাশাপাশি নিয়মিত বাড়ছে ক্যাডমিয়াম ও আর্সেনিকের উপস্থিতি এবং তার ফলে ক্যান্সার, কিডনি সমস্যা, উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস ও হৃদযন্ত্রের সমস্যার মতো শারীরিক অসুস্থতা বাড়ছে দিল্লির বাসিন্দাদের মধ্যে।
জেডআই/এম. জামান