প্রকাশিত: অক্টোবর ৮, ২০২১, ১২:২৮ পিএম
আফগানিস্তানের ক্ষমতা দখলের পর তালেবান মুখপাত্র বলেছিলেন, মানুষের অধিকারের বিষয়গুলোর দিকে নজর দেবে তালেবান সরকার। প্রতিশোধমূলক কাজ
করবে না। আধুনিক তালেবান শাসন প্রতিষ্ঠিত হবে। কিন্তু বাস্তবের চিত্র তার সঙ্গে
মিলছে না বলেই মনে করছেন আফগানিস্তানের বাসিন্দারা। তালেবানদের ভয়ে বিদেশি
সংবাদসংস্থার সঙ্গে যে সাংবাদিকরা কাজ করতেন তাদের অনেকেই দেশ ছেড়ে পালাতে বাধ্য
হয়েছেন। যারা এখনও আফগানিস্তানে,
ভয় এবং আশঙ্কায় দিন কাটছে
তাদের।
ডিডাব্লিউ বেশ কয়েকজন সাংবাদিকের সঙ্গে কথা বলেছে। কিন্তু তাদের নিরাপত্তার
কারণে নামপ্রকাশ করা হচ্ছে না।
পূর্ব আফগানিস্তানের গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চল নানগারহার। সেখানকার এক সাংবাদিক
ডিডাব্লিউকে জানিয়েছেন, 'এখনও পর্যন্ত কোনো হুমকি শুনতে হয়নি আমায়।
কিন্তু কাজ করতে অসুবিধা হচ্ছে। তালেবান সাংবাদিকদের সঙ্গে কোনো কথা বলে না। তাদের
বিরুদ্ধে খবর লিখলে হুমকি দেওয়া হচ্ছে, এমন ঘটনা চোখের
সামনেই দেখেছি।'
ওই একই অঞ্চলের আরেক সাংবাদিক ডিডাব্লিউকে জানিয়েছেন, কাবুলে পালিয়ে আসতে বাধ্য হয়েছেন। কারণ, তাকে হুমকি দেওয়া
হয়েছে। তবে তাকে হুমকি শুনতে হয়েছে ইসলামিক স্টেটের একটি সংগঠনের কাছ থেকে। তাদের
বিরুদ্ধে খবর করেছিলেন তিনি।
কুনার অঞ্চলের এক সাংবাদিক জানিয়েছেন, সশস্ত্র তালেবান
তার বাড়িতে গিয়েছিল। তিনি তখন ঘরে ছিলেন না। তার বাবাকে বলে আসা হয়, ছেলে এলে যেন খবর দেওয়া হয়। তার সঙ্গে জরুরি দরকার আছে। তার পর থেকে ওই
সাংবাদিক গা-ঢাকা দিয়ে আছেন। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ, জেহাদ-বিরোধী
প্রোপাগান্ডা করেছেন তিনি। কিছুদিন বিদেশি সংবাদসংস্থার সঙ্গেও কাজ করেছেন।
হিউম্যান রাইটস ওয়াচের একটি রিপোর্ট বলছে, ১৫ আগস্ট থেকে
চলতি মাস পর্যন্ত ৩২ জন সাংবাদিককে আটক করেছে তালেবান। কয়েকজনকে অবশ্য ছেড়ে দেওয়া
হয়েছে। কাবুলের তেমনই এক আটক হওয়া সাংবাদিক জানিয়েছেন, তিনি আট দিন আটক ছিলেন। তার বাবা বহু চেষ্টা করে তাকে ছাড়িয়েছেন।
নারী সাংবাদিকদের অবস্থা আরও ভয়াবহ। তালেবান জানিয়ে দিয়েছে, ক্যামেরার সামনে নারীরা আসতে পারবেন না। রেডিও-তে কথা বলতে পারেন। তবে সেই
অফিসে সকলকে নারী হতে হবে।
এক নারী সাংবাদিক ডয়চে ভেলেকে জানিয়েছেন, বহু সংবাদসংস্থার
অফিস বন্ধ হয়ে গেছে। নারীরাও কাজ ছেড়ে দিচ্ছেন। তিনি যে রেডিও-তে কাজ করেন, সেখানে টেকনিশিয়ানরা পুরুষ। ফলে তিনি অফিসে যেতে পারছেন না।
কাবুলের মতো জায়গায়, খবর পছন্দ না হলে সাংবাদিকদের রাস্তায় ফেলে
পেটানো হয়েছে, এমন ঘটনাও ঘটেছে। সম্প্রতি দুইজনকে এভাবে মারা
হয়েছে। একজনকে মারতে মারতে অজ্ঞান করে দেওয়া হয়েছে।
শামীম/ডাকুয়া