
প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২১, ২০২১, ০২:৩১ এএম
দুই দশক পর আবারও
আফগানিস্তানের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে তালেবান। ক্ষমতা দখল নেওয়ার পর বিশ্বব্যাপী এখন
প্রশ্ন উঠেছে যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশটি কীভাবে চালাবে তালেবান। অর্থনৈতি সংকট কীভাবে
সামাল দেবে তারা?
কিন্তু জানেন কি, যুদ্ধবিধ্বস্ত এই আফগানিস্তানের মাটির নিচেই রয়েছে রাশি রাশি ‘গুপ্তধন’, যা অল্প সময়েই ঘুরিয়ে দিতে দেশটির অর্থনীতির চাকা। এই ‘গুপ্তধন’-এর খোঁজ তালেবানের অজ্ঞাত ছিল। গত ২০ বছর ধরে আফগানিস্তানে ঘাঁটি গেড়ে আমেরিকার সেনাবাহিনী ও সে দেশের ভূতত্ত্ববিদরা সেই খবরই পেয়েছিল বছর দশেক আগে। আফগানিস্তানে রয়েছে ১ লাখ কোটি ডলার মূল্যের ‘গুপ্তধন’।
দুই হাজার বছর পুরনো ব্যাক্ট্রিয়ান ধনভাণ্ডারের সন্ধান করবে বলে জানিয়েছে তালেবান। এই ব্যাক্ট্রিয়ান ধনভাণ্ডার অনেকের কাছে ব্যাক্ট্রিয়ান গোল্ড নামেও পরিচিত। এই ধনভাণ্ডারের খোঁজ পাওয়ার পর কেউ যদি দেশের বাইরে পাচারের চেষ্টা করে তাহলে তা রাষ্ট্রদ্রোহিতা বলে গণ্য করা হবে বলে হুঁশিয়ারি করেছে তালেবান। এর সঙ্গে জড়িতদের কঠোর সাজা দেওয়া হবে বলেও জানা গেছে।তালেবানের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সাংস্কৃতিক কমিশনের উপ প্রধাম আহমদুল্লাহ ওয়াসিক এসব কথা বলেছেন।
গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ১৯৭৮-৭৯ সালে প্রথম এই সম্পদের সন্ধান পাওয়া গিয়েছিল। সে সময় ছয়জন ধনী যাযাবরের কবর খনন করে উদ্ধার হয়েছিল প্রচুর সম্পত্তি।
ঐতিহাসিকদের মতে, এটা ছিল মূলত মধ্যএশিয়া থেকে আসা যাযাবরদের কবর। খ্রিস্টপূর্ব প্রথম শতক থেকে প্রথম শতক পর্যন্ত এই যাযাবর শ্রেণীর যাতায়াত ছিল আফগানিস্তানের ওপর দিয়ে। করবগুলো পাওয়া গিয়েছিল উত্তর আফগানিস্তানের শেরবার্গান জেলার তপা বা হিল অব গোল্ড এলাকায়। ওই এলাকাতেই আরও ধনভাণ্ডার আছে কী না সেটাই তালেবান সন্ধান করে দেখবে বলে জানা গেছে।
কবরগুলো খননের পর উদ্ধার হয়েছিল চীন থেকে ইউয়েজি, সোনার কামরা, ডলফিন, দেবতা, ড্রাগন। এছাড়াও পাওয়া গিয়েছিল পান্না, পলা, হীরের মত দামি দামি পাথর। সেই সময় খনের ফলে প্রায় ২০ হাজার সামগ্রী উদ্ধার করা হয়েছিল। পাওয়া গিয়েছিল সোনার আংটি, কয়েম, অস্ত্র, কানের দুল, চুড়ি, হার, মূল্যবান অস্ত্র ও মুকুট।
মস্কোর প্রত্নতাত্ত্বিক ভিক্টর সারিয়ানিদির নেতৃত্বেই খনকার্য চালান হয়। তিনি এই সমাধিগুলোকে ১৯২২ সালে উদ্ধার হওয়া তুলেনখামামেনের সমাধির সঙ্গে তুলনা করেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, তুতেনখামেনের সমাধি যেমন সমগ্র বিশ্বকে নাড়িয়ে দিয়েছিল এগুলোও তেমনই।
সেই সময়ই তিনি প্রশ্ন তুলেছিলেন প্রাচীন কালে এই যাযাবর শ্রেণির মানুষেরা কী করে নানান জায়গার সামগ্রী একত্রিত করেছিল। কারণ তিনি দাবি করেছিলেন এসব মূল্যবান বস্তু চীন, রোম, সাইবেরিয়া-সহ একাধিক এলাকা থেকে আনা হয়েছিল। তার বেশ কিছু প্রমাণও দিয়েছিলেন তিনি।
তিনি জানান, এগুলোর মধ্যে রোমান মুদ্রা ও সাইবেরিয়ান তলোয়ানও ছিল। চীনাদের মত জুতাও পাওয়া গিয়েছিল।
জেডআই/