প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১৫, ২০২১, ০৩:২২ পিএম
চীনের সরকার তার নাগরিকদের ভ্রমণ
বিষয়ে আবার সতর্কবার্তা দিয়েছে।
দেশটির দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশ ফুজিয়ানে সম্প্রতি করোনা সংক্রমণ বাড়ার জেরে এ সতর্কবার্তা
দেওয়া হয়েছে। বুধবার (১৪ সেপ্টেম্বর) এক
প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে
দেশটির রাষ্ট্রায়ত্ত বার্তাসংস্থা সিনহুয়া।
সিনহুয়ার
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ফুজিয়ানে
সংক্রমণ বৃদ্ধির কারণে দেশটির বেশ কয়েকটি অঞ্চলে
অনির্দিষ্টকালের জন্য নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে
সরকার। এ অঞ্চলগুলো হলো
-উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশ জিলিন, দক্ষিণাঞ্চলীয় প্রদেশ মাওমিং ও গুয়াংঝু, উত্তরাঞ্চলীয়
প্রদেশ শাংজি ও হেইলংজিয়াং এবং
চীনের স্বায়ত্তশাসিত এলাকা ইনার মঙ্গোলিয়ার শিফেং
ও হোহুত। এ সব প্রদেশের
নাগরিকদের নিজেদের শহর ও প্রদেশের
বাইরে ভ্রমণের ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে।
করোনাভাইরাসের
অতি সংক্রামক ধরন ডেল্টার প্রভাবে
চীনের ফুজিয়ানে সম্প্রতি বাড়ছে সংক্রমণ। গত ৫ দিনে
প্রদেশের বিভিন্ন শহরে করোনা পজিটিভ
হিসেবে শনাক্ত হয়েছেন দেড়শরও বেশি মানুষ। করোনা
ছড়িয়ে পড়া রোধে এই
ভ্রমণ সতর্কতা জারি করা হয়েছে
বলে জানিয়েছে সিনহুয়া।
এদিকে,
আগামী সপ্তাহ থেকে মধ্য শরৎ
উৎসব শুরু হচ্ছে চীনে,
পাশাপাশি অক্টোবরের ১ তারিখ থেকে
জাতীয় দিবস উদযাপন উৎসব
শুরু হবে চীনে, যা
চলবে প্রায় এক সপ্তাহ পর্যন্ত।
দীর্ঘ
ছুটি থাকায় বছরের এই সময়টি ভ্রমণের
জন্য বেছে নেন অনেকেই।
সেপ্টেম্বরের শেষার্ধ থেকে অক্টোবরের প্রথম
সপ্তাহ- এই তিন সপ্তাহকে
ধরা হয় চীনের প্রধান
পর্যটন মৌসুম হিসেবে।
এদিকে,
চীনের অপর রাষ্ট্রায়ত্ত ট্যাবলওয়েড
পত্রিকা গ্লোবাল টাইমস সরকারের এই সিদ্ধান্তের সমালোচনা
করেছে। মঙ্গলবার পত্রিকাটির সম্পাদকীয়তে বলা হয়েছে, ‘করোনা
প্রতিরোধে সরকারের যে সাফল্য তাকে
ধরে রাখা অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ,
কিন্তু দেশের অর্থনীতি ও নাগরিকদের মানসিক
স্বাস্থ্যের বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে দীর্ঘমেয়াদি নিষেধাজ্ঞা
দেওয়া থেকে সরকারের বিরত
থাকা উচিত।’
‘তার পরিবর্তে করোনা
টেস্ট ও টিকার আওতা
বাড়ানো এবং কেবলমাত্র উপদ্রুত
এলাকাসমূহের মানুষদের কোয়ারেন্টাইনে রাখা অনেক কার্যকর
পদ্ধতি।’
তবে
চীনের রাষ্ট্রায়ত্ত টেলিভিশন জানিয়েছেন, ফুজিয়ান প্রদেশের যে শহরে গত
৫ দিন আগে প্রথম
সংক্রমণ দেখা দিয়েছিল, সেই
পুতাইন থেকে গত ২৬
আগস্ট থেকে ১০ সেপ্টেম্বর
পর্যন্ত প্রায় ৩০ হাজার মানুষ
দেশের বিভিন্ন প্রদেশে ভ্রমণ করেছেন। আরও বলা হয়েছে,
পুতাইনের পাশাপাশি ফুজিয়ানের বন্দরশহর কুয়ানঝুতে গত এক সপ্তাহে
১৫২ জন নতুন শনাক্ত
রোগী পাওয়া গেছে।
তারপরও
সরকারের এই নিষেধাজ্ঞার সমালোচনা
করেছেন দেশটির অর্থনীতিবিদদের একাংশ। চীনের রাজধানী বেইজিংয়ের জ্যেষ্ঠ অর্থনীতিবিদ জুলিয়ান ইভান্স প্রিচার্ড এক বার্তায় বলেছেন,
‘পর্যটনের মৌসুমে চীনের ব্যবসা বাণিজ্য ও অর্থনীতিতে এক
প্রকার গতি আসে, যার
একটি উল্লেখযোগ্য প্রভাব রয়েছে দেশের বার্ষিক জিডিপিতে। দীর্ঘমেয়াদে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার কারণে সৃষ্ট অর্থনৈতিক ক্ষয়ক্ষতি দ্রুত কাটিয়ে ওঠা কঠিন হবে।’
শামীম/ডাকুয়া