প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১৪, ২০২১, ১০:৩৮ এএম
তালেবান কাবুল নিয়ন্ত্রণের আগে থেকেই আফগানিস্তানের
১ কোটি ৮০ লাখ
মানুষ ত্রাণ সহায়তার ওপর নির্ভরশীল ছিলেন।
আর তালেবানের হাতে দেশটির ক্ষমতা
যাওয়ার পর সে সংখ্যা
আরও বেড়েছে বলে ধারণা করছে
জাতিসংঘ। এ ছাড়া অর্থ
ও খাদ্য ঘাটতির কারণে এ মাসের শেষ
দিকে খাদ্য সরবরাহ শেষ হয়ে যেতে
পারে। যার ফলে দেশটির
১ কোটি ৪০ লাখের
বেশি মানুষ অনাহারে পড়তে পারে বলেও
আশঙ্কা করা হচ্ছে।
এমন
পারস্থিতিতে আফগানিস্তানে
১০০ কোটি ডলারের বেশি
সহায়তার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে দাতাগোষ্ঠী। সোমবার (১৪ সেপ্টেম্বর) জেনেভায়
একটি সাহায্য সম্মেলনে জাতিসংঘের আহ্বানে সাড়া দিয়ে এ
অর্থ সহায়তার ঘোষণা দেয় বিশ্ব সম্প্রদায়।
কাতারভিত্তিক
সংবাদমাধ্যম আল–জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়, জাতিসংঘের
মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস দাতা সম্মেলনে অর্থ
সহায়তার বিষয়টি নিয়ে কথা বলেন।
এ সময় তিনি বলেন,
দেশটির প্রয়োজনীয় চাহিদা পূরণের জন্য জাতিসংঘ ৬০
কোটি ডলার জরুরি সহায়তার
জবাবে কী পরিমাণ অর্থের
প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল তা বলা অসম্ভব।
কনফারেন্সের
উদ্বোধনী বক্তব্যে গুতেরেস বলেন, টানা কয়েক দশক
যুদ্ধ, সংগ্রাম আর নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে
থাকার পর আফগানরা এখন
কার্যত তাদের সবচেয়ে কঠিন সময় পার
করছে। তিনি বলেন, আফগানিস্তানের
জনগণের এখন বেঁচে থাকার
রসদ প্রয়োজন। এই মুহূর্তে আফগানিস্তানে
অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড খুবই সীমিত। এর
মানে দেশটিতে মৌলিক অনেক অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড
হচ্ছে না।’
জেনেভা
থেকে আল-জাজিরার কূটনৈতিক
প্রতিবেদক জেমস বায়েস জানান,
আফগানিস্তানে সহায়তার বিষয়ে জাতিসংঘের আহ্বানে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় যেভাবে সাড়া দিয়েছে তাতে
মহাসচিব গুতেরেস ‘খুবই সন্তুষ্ট’।
সম্মেলন
শেষে যুক্তরাষ্ট্র ৬ কোটি ৪০
লাখ ডলার সহায়তার প্রতিশ্রুতি
দেয়, জাতিসংঘের আহ্বানে সাড়া দিয়ে আফগানিস্তানের
জন্য ১১ কোটি ৮০
লাখ ডলার সহায়তার প্রতিশ্রুতি
দিয়েছে ফ্রান্স।
পশ্চিমা
সমর্থিত আফগান সরকারের পতনের আগে দেশটি কয়েকশ
কোটি ডলার বিদেশি সহায়তা
পেয়ে আসছিল। কিন্তু তালেবানের ক্ষমতা দখলের পর সেই সহায়তা
হঠাৎ বন্ধ হয়ে যায়।
এ কারণে আফগানিস্তানে জাতিসংঘ পরিচালিত বিভিন্ন কর্মসূচির ওপর চাপ বেড়ে
যায়।
জাতিসংঘের
মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বলছেন, কাজ চালাতে তার
সংস্থা অর্থনৈতিকভাবে সংগ্রাম করছে। গত শুক্রবার (১০
সেপ্টেম্বর) সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘বর্তমান
পরিস্থিতিতে নিজ কর্মচারীদের বেতনও
দিতে পারছে না জাতিসংঘ।’
গত
১৫ আগস্ট তালেবান যোদ্ধাদের রাজধানী কাবুলে প্রবেশ এবং গোটা আফগানিস্তানে
নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে আফগানদের
নগদ অর্থের সংকট দেখা দেয়।
বিশ্বব্যাংক ও আন্তর্জাতিক মুদ্রা
তহবিল (আইএমএফ) থেকে অর্থপ্রবাহ বন্ধ
এবং যুক্তরাষ্ট্র আফগানিস্তানের রিজার্ভ আটকে দেওয়ায় পরিস্থিতি
এখন চরম আকার নিয়েছে।
আফগানিস্তানজুড়ে ব্যাংকব্যবস্থা এখনও সচল হয়নি।
মধ্যবিত্তরাও অর্থ উত্তোলন করতে
পারছেন না। অনেকে তুলতে
পারলেও সপ্তাহে তার সীমা নির্ধারণ
করে দেওয়া হয়েছে ২০ হাজার আফগানি।
নতুন
সরকার রিজার্ভে প্রবেশাধিকার পাচ্ছে না। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ও
অর্থ সহায়তা বন্ধ করে দিয়েছে।
সব মিলে পরিস্থিতি ভয়াবহ
আকার ধারণ করেছে।
টিআর/এএমকে