প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ৮, ২০২১, ১২:৩৭ পিএম
একে একে এগিয়ে
আসছেন তারা। হাত পাতছেন। গুনে
গুনে নোট তুলে দেওয়া
হচ্ছে সেই হাতে। সেই
নোট পকেটে ঢুকিয়ে এগিয়ে যাচ্ছেন ভাবলেশহীন মুখে। অথচ এই মুখেই
এক সপ্তাহ আগে তালেবানবিরোধী স্লোগান
উঠেছিল। তালেবান শাসনের বিরুদ্ধে আফগান প্রতিরোধের প্রতিনিধি ছিলেন তারাই।
মঙ্গলবার
(৭ সেপ্টেম্বর) সেই তালেবানের কাছেই
আত্মসমর্পণ করে ‘পুরস্কারের অর্থ’ বুঝে
নিলেন পাঞ্জশিরের যোদ্ধারা। অন্তত এমনটাই দাবি আফগানিস্তানের তালেবানপন্থি
একটি টিভি চ্যানেলের। টাকা
দেওয়া-নেওয়ার দৃশ্যের একটি ভিডিও প্রকাশ
করেছে তারা। বিবরণে জানিয়েছে, আত্মসমর্পণকারী পাঞ্জশির যোদ্ধাদের হাতে টাকা তুলে
দিচ্ছে তালেবান।
ভিডিওটি
নেটমাধ্যমে দ্রুত ছড়িয়েছে। যা দেখে অনেকেই
প্রশ্ন তুলেছেন, তবে কি আফগানিস্তানের
তালেবানবিরোধী প্রতিরোধ এভাবেই শেষ হলো? পাঞ্জশিরের
মাটি বেচে দিলেন তার
রক্ষকেরাই? জবাব এসেছে অন্য
একটি সূত্র থেকে। আফগানিস্তানের আরও একটি টিভি
চ্যানেল জানিয়েছে, তালেবানবিরোধী বিদ্রোহের নেতা আহমেদ মাসুদসহ
তাঁর বিশ্বস্ত সঙ্গীরা এখনও পাঞ্জশিরেই রয়েছেন
এবং তাঁরা তালেবানের বিরুদ্ধে লড়াই থামাবেন না। ফেসবুকে একটি
অডিও বার্তায় এ কথা জানিয়েছেন
স্বয়ং মাসুদ। যদিও পুরো পাঞ্জশির
তালেবানের দখলে আসার পর
মাসুদ কী ভাবে তাঁর
লড়াই জারি রাখবেন, তা
স্পষ্ট করে বলা হয়নি
সেই বার্তায়। মাসুদের ভবিষ্যৎ নিয়েও আতঙ্কে রয়েছেন তাঁর শুভার্থীরা।
পাঞ্জশিরের
যোদ্ধাদের টাকা দেওয়ার ভিডিওটির
পাশাপাশি মঙ্গলবার আরও বেশ কয়েকটি
ভিডিও প্রকাশ করেছে তালেবানপন্থি বখতার নিউজ এজেন্সি নামের
ওই টিভি চ্যানেলটি। সেই
সব ভিডিওর কোনোটিতে দেখা যাচ্ছে পাঞ্জশিরের
যোদ্ধাদের থেকে তালেবানের হাতে
আসা বিপুল অস্ত্রের সংগ্রহ। কোনোটায় আবার ধরা পড়েছে
আত্মসমর্পণের পর পাঞ্জশিরের যোদ্ধাদের
ভ্যানে চাপিয়ে নিয়ে যাওয়ার দৃশ্য।
এমনকি পাঞ্জশিরের স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে তালেবান নেতাদের কথাবার্তার একটি ভিডিও প্রকাশ
করেছে তারা। যেখানে সম্ভবত পাঞ্জশিরের মানুষকে নির্ভয়ে থাকার কথা বলছেন এক
তালেবান নেতা।
গত
১৫ আগস্ট কাবুল দখলের পর প্রায় গোটা
আফগানিস্তান তালেবানের হাতে চলে এলেও
পাঞ্জশিরে প্রতিরোধ গড়ে তোলে মাসুদের
বাহিনী। তারপর থেকে গোটা বিশ্বেরই
নজর ছিল পাঞ্জশিরের দিকে।
শেষে সোমবার তালেবান দাবি করে পাঞ্জশিরের
প্রতিরোধ ভাঙতে পেরেছে তারা।
শামীম/ডাকুয়া