প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ৪, ২০২১, ১০:২৬ এএম
ব্যাপক সংঘর্ষের পর আফগানিস্তানের পাঞ্জশির উপত্যকা নিজেদের দখলে নেওয়ার দাবি করেছে তালেবান। শুক্রবার (৩ সেপ্টেম্বর) তালেবানের তিনটি সূত্র ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে এই তথ্য জানিয়েছে।
তালেবানের এক কমান্ডার বলেছেন, পুরো আফগানিস্তান এখন আমাদের নিয়ন্ত্রণে। সমস্যা সৃষ্টিকারীরা পরাজিত হয়েছে এবং পাঞ্জশির এখন আমাদের নিয়ন্ত্রণে।
তালেবানের জয়ের দাবি উড়িয়ে দিয়ে পাঞ্জশিরে তালেবানবিরোধী ন্যাশনাল রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্টের (এনআরএফ) মুখপাত্র আলী নাজারি বলেছেন, ‘প্রকৃতপক্ষে’ তালেবানকে পিছু হটিয়ে দেওয়া হয়েছে।
বিরোধী যোদ্ধাদের অন্যতম নেতা সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট আমরুল্লাহ সালেহ টেলিভিশন স্টেশন টোলো নিউজকে বলেছেন, তার পালিয়ে যাওয়ার যে খবর বেরিয়েছে, সেটি মিথ্যা।
আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুল থেকে ৪৮ কিলোমিটার দূরে পাঞ্জশির উপত্যকা। এলাকাটি উঁচু-নিচু পাহাড়ি ও দুর্গম হওয়ায় অনেকটা সুবিধাজনক স্থানে ছিল তালেবান প্রতিরোধ গোষ্ঠী। উপত্যকাটিতে ঢোকার রাস্তা খুবই সরু। সেখানে কয়েক হাজার তালেবানবিরোধী যোদ্ধা অবস্থান করছিল।
এই অঞ্চলটি এনআরএফের নিয়ন্ত্রণে ছিল। এই গোষ্ঠীটি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন আফগান প্রতিরোধের নায়ক বলে পরিচিত আহমদ শাহ মাসুদের ছেলে আহমদ মাসুদ। আহমদ শাহ মাসুদ ছিলেন একজন শক্তিশালী গেরিলা কমান্ডার। যিনি তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়নের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ যুদ্ধে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন।
এরপর তিনি ১৯৯০-এর দশকে বিদ্রোহী জঙ্গিদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে আফগান সামরিক বাহিনীর নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। তালেবান নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার পরও ২০০১ সালে তাকে হত্যার আগ পর্যন্ত তালেবান শাসনের বিরুদ্ধে তিনিই ছিলেন প্রধান বিরোধী কমান্ডার।
এদিকে আফগানিস্তানের রাষ্ট্রক্ষমতা নিয়ন্ত্রণে নেয়ার ২১ দিনের মাথায় শনিবার (৪ সেপ্টেম্বর) নতুন সরকারের ঘোষণা দেবে তালেবান। শুক্রবার জুমার নামাজের পর তালেবানের নতুন সরকার গঠনের ঘোষণা দেয়ার কথা থাকলেও শনিবার সেই ঘোষণা আসবে বলে জানিয়েছেন তাদের মুখপাত্র জাবিউল্লাহ মুজাহিদ।
এর আগে বার্তা সংস্থা রয়টার্স সূত্রের বরাতে জানিয়েছিল, আফগানিস্তানে যে নতুন সরকার গঠিত হতে যাচ্ছে তার প্রধান হতে যাচ্ছেন তালেবানের রাজনৈতিক শাখার প্রধান মোল্লা আবদুল গনি বারাদার।
নতুন সরকারে বারাদার ছাড়াও শীর্ষে পদে থাকবেন তালেবানের প্রতিষ্ঠাতা মোল্লা মোহাম্মদ ওমরের ছেলে মোল্লা মোহাম্মদ ইয়াকুব, শীর্ষ তালেবান নেতা শের মোহাম্মদ আব্বাস স্তানিকজাই ও হাক্কানি নেটওয়ার্কের প্রধান সিরাজুদ্দিন হাক্কানি।
টিআর/এএমকে