• ঢাকা শনিবার
    ২৮ ডিসেম্বর, ২০২৪, ১৩ পৌষ ১৪৩১

‘মৃত্যুর জন্য তাদের সেখানে যাওয়ার দরকার ছিল না’

প্রকাশিত: আগস্ট ২৮, ২০২১, ০৪:৪০ পিএম

‘মৃত্যুর জন্য তাদের সেখানে যাওয়ার দরকার ছিল না’

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

কাবুল জয়ে তালেবানদের সাফল্য বিশ্বকে চমকে দিয়েছে। ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্রের ব্যর্থতা প্রকাশ পাওয়ায় দেশটির সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বর্তমান প্রেসিডেন্ট বাইডেনের সমালোচনা করেছেন। তালেবানদের সাফল্য বিশ্ববাসীর হজম হতে না হতে কাবুল বিমানবন্দরে আত্মঘাতী বোমা হামলায় বিপুল সংখ্যক প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে। হামলায় ১৬২ জন আফগান বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়। পাশাপাশি প্রাণ হারায় ১৩ মার্কিন সেনা। মৃত্যুর সংখ্যা আরও বাড়ার শঙ্কা রয়েছে।

আত্মঘাতী বোমা হামলার ঘটনায় আবারও যুক্তরাষ্ট্রের ব্যর্থতা প্রমাণিত হয়েছে। আর সুযোগ পেয়ে বাইডেনের সমালোচনা করতে ছাড়েননি সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। গত এক দশকে কোনো একক ঘটনায় এটাই ছিল আফগানিস্তানে যুক্তরাষ্ট্রের সর্বাধিক প্রাণহানির ঘটনা। সুযোগ পেয়ে ডোনাল্ড জানিয়েছেন, তিনি প্রেসিডেন্ট থাকলে এমন ঘটনা ঘটত না।

দিকে বোমা বিস্ফোরণের ঘটনায় গোয়েন্দা ব্যর্থতা নিয়েই সবচেয়ে বেশি আলোচনা হচ্ছে। আগেভাগে জানতে পারার পরও হামলা প্রতিরোধ করতে না পারার ব্যর্থতা সর্বাধিক আলোচিত হচ্ছে। কাবুল বিমানবন্দরে হামলা হতে পারে, যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দারা এমন আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন। তাদের পাশাপাশি আরও কয়েকটি দেশের গোয়েন্দা সংস্থা হামলার ইঙ্গিত দিয়েছিল। তাদের আশঙ্কার ১২ ঘণ্টার ব্যবধানে হামলার ঘটনা ঘটে। আত্মঘাতী হামলাকারী জনতার মধ্য থেকে হেঁটে গিয়ে বিমানবন্দরের গেটে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটায়।

এখন প্রশ্ন উঠছে যেখানে সেখানে তালেবানরা চেকপোস্ট বসিয়ে পাহারা দিচ্ছে; সেখানে কিভাবে হামলাকারী নির্বিঘ্নে চেকপোস্ট পার হলো তা নিয়ে। আর একটা প্রশ্ন- জানার পরও যুক্তরাষ্ট্রের সেনারা সম্ভাব্য হামলার স্থানে কেন অবস্থান করছিল তা নিয়ে জল্পনা-কল্পনা চলছে।

ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্রের সেন্ট্রাল কমান্ডের প্রধান জেনারেল ফ্রাঙ্ক ম্যাকেঞ্জি বলেন, ‘কোথাও একটা ভুল ছিল। তাছাড়া সেনাদের অন্য কোথাও থাকার উপায়ও ছিল না। কেননা সেখানে যাত্রীদের ব্যাপক ভিড় ছিল। তাদেরকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে সেখানে সেনা উপস্থিতি প্রয়োজন ছিল।

তালেবানরা কাবুল দখলের পর ঝুঁকিতে থাকা আফগানদের দেশের বাইরে নিয়ে যাওয়ার প্রক্রিয়া চলছে। কিন্তু তৃতীয় দেশে তাদের বাসস্থান নির্বাচন করা এবং অন্যসব কাজে ধীরগতির জন্য সব কাজ বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। একপর্যায়ে কাবুল থেকে বিমান চলাচল ঘণ্টার জন্য বন্ধ হয়ে যায়। সে সময়ে স্বাভাবিকভাবে বিমানবন্দরের বাইরে ভিড় বেড়ে যায়। বিশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে আনতে সেনাদের বিমানবন্দরের গেটে যেতে হয়েছিল বলে একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন।

ব্যাপারে একজন সেনা কর্মকর্তা বলেন, ‘এটার দরকার ছিল না। মৃত্যুর জন্য তাদের সেখানে যাওয়ার দরকার ছিল না।

কাবুল বিমানবন্দরে এখনও পাঁচ হাজার মার্কিন সেনা রয়েছে। ঘটনার পর যুক্তরাষ্ট্র আরও দ্রুত তাদের সেনা প্রত্যাহারের কাজ জোরদার করবে। সেই সঙ্গে সতর্কতাও বাড়িয়েছে তারা। একই সঙ্গে পরবর্তী সময়কে অভিযানের জন্য সবচেয়ে বিপজ্জনক বলে মনে করছে হোয়াইট হাউস।

যুক্তরাষ্ট্রের ভাষায় হামলাকারীরা আর নেই, বিমান অভিযানে তাদের হত্যা করা হয়েছে। এক কর্মকর্তার মতে, প্রকৃত ঘটনা এখনও শেষ হয়নি। কেননা ঘটনার রকেট হামলা বাড়তে পারে, একই সঙ্গে আত্মঘাতী হামলাও বাড়িয়ে দিতে পারে হামলাকারীরা।

শামীম/এম. জামান

আর্কাইভ