আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আফগানিস্তানের ক্ষমতা বর্তমানে তালেবানের দখলে। ক্ষমতা দখলের পরই আফগান ছেড়ে পালাচ্ছে সাধারণ নাগরিকরা। তেমনি আফগানিস্তান থেকে পালানোর পথে যুক্তরাষ্ট্রের এক উদ্ধারকারী সামরিক বিমানে সন্তান প্রসব করেছেন এক নারী।
যুক্তরাষ্ট্রের এয়ার মবিলিটি কমান্ড টুইটারে এক বার্তায় জানায়, পরিবারের সাথে যুক্তরাষ্ট্রের এক বিশেষ ফ্লাইটে কাবুল থেকে কাতার হয়ে জার্মানির রামস্টিন বিমান বন্দরে যাচ্ছিলেন ঐ আফগান প্রসূতি। পথে তার প্রসব বেদনা শুরু হয়। তার পরিস্থিতি সংকটজনক হয়ে পড়লে পাইলট বিমানের উচ্চতা কমিয়ে আনেন যাতে কেবিনের ভেতরে বাতাসের চাপ বাড়িয়ে প্রসূতির জীবনরক্ষা সম্ভব হয়।
বিমানটি অবতরণের পর রামস্টিন বিমানবন্দরে মার্কিন সামরিক চিকিৎসা কর্মীরা ঐ নারীকে সন্তান প্রসবে সহায়তা করেন বলে জানিয়েছে এয়ার মবিলিটি কমান্ড।
এরপর মা ও নবজাত কন্যা শিশুকে স্থানীয় হাসপাতালে পাঠানো হয়। দু'জনেই সুস্থ রয়েছে বলে জানিয়েছেন মার্কিন কর্মকর্তারা।
তবে আকাশে জন্ম নেয়া ঐ শিশুর জাতীয়তা কী হবে তা নিয়ে সোশাল মিডিয়ায় নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়েছে।
কেউ কেউ বলছেন, শিশুটি যেহেতু মার্কিন পতাকাবাহী এবং যুক্তরাষ্ট্রে নিবন্ধন করা সামরিক বিমানে জন্মগ্রহণ করেছে সেজন্যে তার মার্কিন নাগরিকত্ব পাওয়া উচিত।
আরেক পক্ষ বলছেন, যেহেতু বিমানটি জার্মানিতে অবতরণের পর শিশুটি ভূমিষ্ঠ হয়েছে, তাই জার্মান নাগরিকত্বই তার প্রাপ্য।
এ বিষয়ে এভিয়েশন বিষয়ক এক পত্রিকার নিবন্ধে সামনার হাল লিখেছেন, বিমানপথে জন্ম নেয়া শিশুর নাগরিকত্বের বিষয়টি একটু জটিল।
তিনি লিখেছেন, স্বাভাবিক নিয়ম অনুযায়ী, শিশুর নাগরিকত্ব নির্ধারিত হয়ে থাকে তার মায়ের (এবং বাবার) নাগরিকত্ব অনুযায়ী, যাকে বলে 'জুস স্যাংগুইনিস' (রক্তের অধিকার)।
কিন্তু কোন কোন দেশ তার সীমানার মধ্যে শিশুর জন্ম হলে তাকে নাগরিকত্ব দেয়। যেমন, যুক্তরাষ্ট্রে এই নিয়ম আছে।
তবে মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের ফরেন অ্যাফেয়ার্স ম্যানুয়াল অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রের ভৌগলিক সীমানার বাইরে যে কোন স্থান যেমন দূতাবাস, কনসুলেট, সামরিক বিমান কিংবা ঘাঁটি ইত্যাদিতে জন্ম নিলেও কোন শিশু মার্কিন নাগরিকত্বের অধিকারী হবে না, যদি না তার পিতামাতার অন্তত একজনের মার্কিন নাগরিকত্ব থাকে।
তবে এই ম্যানুয়াল অনুযায়ী, আমেরিকার সীমান্তের ভেতরে ১২ নটিক্যাল মাইলের মধ্যে কোন শিশুর জন্ম হলে তাকে নাগরিকত্ব দেয়ার বিধান রয়েছে। একে বলে 'জুস সলি' বা ভূমির অধিকার।
কিন্তু অন্যান্য দেশে, যেমন জার্মানিতে, এই অধিকার থাকে না। সে দেশের নাগরিকত্ব পেতে হলে পিতা-মাতার অন্তত একজনের জার্মান নাগরিকত্ব থাকতে হবে এবং অন্যান্য বেশ কিছু শর্ত পূরণ করতে হবে।
আর শরণার্থী শিশুর নাগরিকত্বের বিষয়টিতেও একেক দেশে একেক আইন ব্যবহার করা হয়।
ইফাত
ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন