প্রকাশিত: আগস্ট ২২, ২০২১, ০৮:২৮ পিএম
রাজধানী কাবুলসহ আফগানিস্তানের সিংহভাগ এলাকা এখন তালেবানের নিয়ন্ত্রণে।
তবে পাঞ্জশিরকে এখনও দখলে নিতে
পারেনি। আফগানিস্তানের ৩৪টি প্রদেশের মধ্যে
তালেবান একমাত্র পাঞ্জশিরে তারা নিয়ন্ত্রণে নিতে
পারেনি।
দেশটির
শেষ প্রান্তের প্রদেশ পাঞ্জশিরে বসে বিদ্রোহের ঘোষণা
দিয়েছেন আফগান সরকারের ভাইস প্রেসিডেন্ট আমরুল্লাহ
সালেহ। তার সঙ্গে আছেন
গনি সরকারের প্রতিরক্ষামন্ত্রী জেনারেল বিসমিল্লাহ মোহাম্মদী ও প্রয়াত মোজাহিদীন
কমান্ডার শাহ আহমদ মাসউদের
ছেলে আহমদ মাসউদ। তালেবানের
বিরুদ্ধে তারা লড়াই চালিয়ে
যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। কিন্তু তালেবান তাদেরকে আত্মসমর্পণের জন্য সময় বেঁধে
দিয়েছে।
আন্তর্জাতিক
একটি গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে,
৪ ঘণ্টার মধ্যে আত্মসমর্পণ না করলে তালেবান
তাদের বিরুদ্ধে চূড়ান্ত লড়াইয়ে নামার ঘোষণা দিয়েছে।
খবরে
আরও বলা হয়েছে, তালেবানের
হাতে এই মুহূর্তে আফগান
সরকারকে আমেরিকার দেয়া বিপুল অস্ত্র
রয়েছে।
এক
হিসাব অনুযায়ী, আফগান সেনাকে আমেরিকা ৬ লক্ষ রাইফেল-বন্দুক জাতীয় হালকা অস্ত্র, ৮০ হাজারের বেশি
মাইন নিরোধক অত্যাধুনিক গাড়ি, যে কোনো রাস্তায়
চলতে পারে এমন ৪
হাজার ৭০০টি হামভি, ২০ হাজারেরও বেশি
গ্রেনেড, নাইট ভিশন গগলস
এবং ম্যানপ্যাক দিয়েছিল। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, আমেরিকার
অত্যাধুনিক অস্ত্র ভাণ্ডারের সবটাই এই মুহূর্তে তালেবানের
কাছে।
সমগ্র
আফগানিস্তান জয় করা তালেবানের
বিরুদ্ধে পাঞ্জশিরের বিদ্রোহীরা লড়াই করে জিততে
পারবেন কিনা অনেকে সেই
সমীকরণ মেলাতে শুরু করেছেন।
পাঞ্জশিরের
এক বাসিন্দা সংবাদ সংস্থা এএফপিকে বলেন, আমরা তালেবানকে পাঞ্জশিরে
প্রবেশ করতে দেব না।
সর্বশক্তি এবং ক্ষমতা দিয়ে
আমরা তাদের প্রতিরোধ করব এবং তাদের
বিরুদ্ধে লড়ব।
তালেবানের
বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করা ভাইস প্রেসিডেন্ট
আমরুল্লাহকে সমর্থন জানিয়েছেন তাজিকিস্তানে আফগান রাষ্ট্রদূত ও সাবেক সামরিক
কর্মকর্তা জহির আগবার। রয়টার্সকে
এক সাক্ষাৎকারে আগবার বলছেন, পাঞ্জশিরকে কেউ দখলে নিতে
এলে সেখানকার মানুষ রুখে দাঁড়াবে।
তবে
তালেবানের বিরুদ্ধে বিদ্রোহে সমর্থন দেয়া আফগানিস্তানের তাজিক
রাষ্ট্রদূত ইঙ্গিত দিয়েছেন- তালেবান চাইলে তাদের সঙ্গে সমঝোতা হতে পারে। এর
জন্য আফগানিস্তানে একটি জোট সরকার
গঠন করতে হবে। সেখানে
সব আফগান পক্ষকেই জায়গা দিতে হবে।
কিন্তু
তালেবান এতে রাজি হবে
কিনা- সেই প্রশ্নও উঠেছে।
ব্রিটিশ
সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান বলছে,
পাঞ্জশিরে লড়াই-ই হতে
পারে একমাত্র সমাধান। তালেবানের মধ্যে আগেরবারের শাসনে পাঞ্জশিরকে পরাস্ত করতে না পারার
ক্ষোভ রয়েছে। রাজনৈতিক গোষ্ঠী হিসেবে নিজেদেরকে আন্তর্জাতিকভাবে প্রতিষ্ঠিত করে এবার আরও
শক্তিশালী হয়ে কাবুল মসনদে
এসেছে তারা। ফলে তালেবানের বিপুল
শক্তির কাছে পাঞ্জশিরের বিদ্রোহীরা
থমকে যেতে পারেন।
শামীম/নির্জন