• ঢাকা শনিবার
    ২৮ ডিসেম্বর, ২০২৪, ১৩ পৌষ ১৪৩১

কাবুলে মহিলা সাংবাদিকের পোশাক বদল!

প্রকাশিত: আগস্ট ১৮, ২০২১, ১২:০৬ পিএম

কাবুলে মহিলা সাংবাদিকের পোশাক বদল!

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

আফগানিস্তানের নেতৃত্ব এখন তালেবান যোদ্ধাদের হাতে। দেশটিতে বিরাজ করছে আতঙ্ক। বিশেষ করে বেশি ভয়ে রয়েছেন আফগানিস্তানে বসবাসরত নারীরা। এর মাঝে নতুন আলোচনার জন্ম দিয়েছেন সিএনএনের টিভি রিপোর্টার ‘ক্লারিসা ওয়ার্ড’। আমেরিকান এই নারী সাংবাদিক রীতিমতো ভাইরাল হয়ে গেছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ঘুরপাক খাচ্ছে তার নানা রূপী ছবি। যেখানে বিভিন্ন পোশাকে দেখা যায় তাকে। 

এরমধ্যে একটি ছবিতে ক্লারিসা ওয়ার্ডকে পশ্চিমের প্রফেশনাল পোশাকে দেখা যায়। অন্য একটি ছবিতে তাকে ইসলামি পোশাকে দেখা গেছে। এই পোশাক সাধারণত শিয়া মুসলিম মহিলারা পরেন। অনেকেই বলছেন, তালেবানদের ভয়ে ক্লারিসা তার পোশাক পরিবর্তন করেছেন।



ভাইরাল হওয়া এই ছবিগুলো সম্পর্কে কিছু সোশ্যাল মিডিয়া পোস্ট দাবি করে, তালেবান ক্ষমতায় আসার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তার পোশাক বদলে গেছে। যদিও এই বিষয়ে, ক্লারিসা নিজেই সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি বিবৃতি দিয়েছেন।

বিবৃতিতে ক্লারিসা বলেন, এই ছবিগুলো ভুলভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে। প্রথম ছবিটি একটি প্রাইভেট কম্পাউন্ডারের ভেতরে তোলা। দ্বিতীয়টি কাবুলের। অতীতে রিপোর্টিংয়ের জন্য যখনই আমি কাবুলের রাস্তায় যাই, আমি সবসময় মাথায় স্কার্ফ ব্যবহার করতাম। যদিও আমার মাথা পুরোপুরি ঢাকা ছিল না এবং আমি আবায়া পোশাকে ছিলাম না। অবশ্যই একটি পরিবর্তন হয়েছে। কিন্তু ছবিতে যা দেখানো হয়েছে সেই স্তরের নয়।

আন্তর্জাতিক রিপোর্টার হিসেবে ইসলামিক অনেক দেশ পরিদর্শন করেছেন ক্লারিসা। ২০১২ সালে তিনি সিরিয়ার আলেপ্পো শহর থেকে রিপোর্টিং করেছিলেন। পরের বছর তিনি মিশর থেকে রিপোর্টিং করেন। ২০১৪ সালে, তিনি আবার সিরিয়ায় গিয়েছিলেন এবং সেখানে আমেরিকান এবং নেদারল্যান্ডস জিহাদিদের সাক্ষাৎকার নিয়েছিলেন। ২০১৯ সালে, ওয়ার্ড আফগানিস্তানের তালেবান শাসিত অঞ্চলে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে রিপোর্টিং করেন। তিনি তালেবান নেতাদের সাক্ষাৎকারও নিয়েছিলেন। ২০২১ সালেই স্থানীয় সাংবাদিকদের কাছে তার প্রতিবেদনের জন্য সমালোচিত হন এবং তাকে ‘প্যারাসুট সাংবাদিক’ বলে অভিহিত করা হয়।



রোববার আফগানিস্তান নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে গনি সরকারকে ক্ষমতা থেকে হটানোর পর মঙ্গলবার প্রথম সংবাদ সম্মেলন করে তালেবান। 

সেখানে নারীদের অধিকার প্রসঙ্গে তালেবানের নীতি নিয়ে মুখপাত্র জাবিউল্লাহ মুজাহিদ বলেন, ‘নারীরা আমাদের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করতে যাচ্ছে। আমরা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে আশ্বস্ত করতে চাই যে কারো মধ্যে কোনো বৈষম্য থাকবে না।’

১৯৯৬ সালে প্রথম আফগানিস্তানের রাষ্ট্র ক্ষমতায় আসে তালেবান। এ সময় গৃহযুদ্ধের মাধ্যমে তৎকালীন ক্ষমতাসীন সংগঠন মুজাহিদিনকে পরাজিত করে ক্ষমতা দখল করে তারা। এরপর পাঁচ বছর ক্ষমতায় থাকার পর ২০০১ সালে বিধ্বংসী এক সামরিক অভিযানে তালেবানকে ক্ষমতাচ্যুত করে যুক্তরাষ্ট্র ও তার ন্যাটো মিত্ররা। 



এরপর টানা ২০ বছর আফগানিস্তানের সামরিক নিয়ন্ত্রণ ছিল যুক্তরাষ্ট্রের হাতে। কিন্তু মাত্র কয়েক দিবসেই বদলে গেছে দৃশ্যপট। চলতি বছরের জুলাইয়ের প্রথম সপ্তাহে রাতের অন্ধকারে কাবুলের নিকটবর্তী বাগরাম বিমানঘাঁটি ত্যাগ করে মার্কিন সৈন্যদের শেষ দল। তার ৬ সপ্তাহ পার না হতেই আফগানিস্তানের অধিকাংশ ভূখণ্ড দখল করে নেয় তালেবান যোদ্ধারা।

হেরাত ও কান্দাহারের মতো গুরুত্বপূর্ণ শহরসহ দেশটির ১০টি প্রাদেশিক রাজধানী অল্পসময়েই দখল করে নেয় তালেবান। কিন্তু এতেই থেমে থাকেনি তারা। গত ১৫ আগস্ট আফগান রাজধানী কাবুলও দখল করে নেয় সংগঠনটি।

টিআর/সবুজ/নির্জন

আর্কাইভ