• ঢাকা রবিবার
    ২৪ নভেম্বর, ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

মুখে ছত্রাক সংক্রমণ: কেনো হয়, কী করণীয়

প্রকাশিত: অক্টোবর ১৪, ২০২২, ০৭:২০ পিএম

মুখে ছত্রাক সংক্রমণ: কেনো হয়, কী করণীয়

সংগৃহীত ছবি

ডা. রাহেমিন সিপতি

মুখগহ্বরে বিশেষ করে জিহ্বা এবং মাড়িতে ফাংগাল প্রলিফারেশনকে ( ছত্রাকের সংক্রমণ) ওরাল থ্রাস বলা হয়। ওরাল থ্রাশ ইস্ট ফাঙ্গাস, ক্যানডিডা অ্যালবিকানস দ্বারা মুখের মিউকাস মেমব্রেনে সংক্রমণ সৃষ্টি করে থাকে। যখন ফাঙ্গাস ক্যানডিডা অ্যালবিকানস মুখের মিউকাস মেমব্রেনে জমা হয় তখন ওরাল থ্রাশের সৃষ্টি হয়।

আক্রান্ত স্থান : 

ওরাল থ্রাশ ক্রিমি হোয়াইট বা ক্রিম রঙযুক্ত সাদা সংক্রমণ সৃষ্টি করে যা সাধারণত জিহ্বা অথবা চিবুকের অভ্যন্তরে দেখা যায়। এ ধরনের সংক্রমণ ব্যথাযুক্ত হতে পারে আবার সংক্রমণ স্থল থেকে ব্রাশ করার সময় মৃদু রক্ত বের হতে পারে। শিশুদের ক্ষেত্রে ওরাল থ্রাশ ক্ষণস্থায়ী ক্যানডিডা সংক্রমণ। যা হোক- ক্যানডিডা সংক্রমণ তালু, মাড়ি, টনসিল এমনকি গলা পর্যন্ত বিস্তৃত লাভ করতে পারে, যা ক্যানডিডায়াসিস বা মনিলিয়াসিস নামে পরিচিত।

ওরাল থ্রাশে আক্রান্ত হয় যারা :

নবজাতক, কৃত্রিম দাঁত ব্যবহারকারী ডায়াবেটিক রোগী, অ্যান্টিবায়োটিক চিকিৎসাধীন রোগী, কেমোথেরাপি চিকিৎসাধীন রোগী, নেশাগ্রস্ত মানুষ, অপুষ্টিতে ভোগা দরিদ্র জনগোষ্ঠী এবং রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা ত্রুটিজনিত জনগোষ্ঠী।

ওরাল থ্রাশের লক্ষণ :

১. জিহবা এবং গালের ভিতর জ্বালাপোড়া

২. জিহবার উপর সাদা কিংবা হলুদের প্রলেপ

৩. খেতে গিয়ে স্বাদ না পাওয়া

৪. মুখে দূর্গন্ধ

৫. জিহবায় ছোট ছোট ক্ষত হয়ে ফুলে যাওয়া

৬. কখনো কখনো ক্ষত থেকে রক্তপাত হতে পারে

 

ওরাল থ্রাশের কারন:

১। দীর্ঘদিন এন্টিবায়োটিক ব্যবহার।

২। স্টেরয়েড ব্যবহার।

৩। এনিমিয়া ।

৪। ডায়বেটিস।

৫। দূর্বল ইমুউনিটি সিস্টেম।

৬। দীর্ঘদিন ডেনচার ব্যবহার ।

৭। স্মোকিং।

৮। দীর্ঘদিন মাউথওয়াশ ব্যবহার।

 

যেভাবে প্রতিকার করবেন:

১ । ব্রাশ করার সময় জিহবা পরিষ্কার রাখতে হবে।

২। হোম মেড কিছু রিমেডি আছে ওইগুলো মেনে চলতে হবে।

৩। গরম পানিতে ১ চামচ লবন নিয়ে কুলকুচি করবেন।

৪। ২ চামচ ভিনেগার+ ১/২ চামচ লবন এক গ্লাস গরম পানিতে মিশিয়ে কুলকুচি করবেন

৫। নারিকেল তেল ব্যবহার করতে পারেন

৬। টক দই খাবেন

৭। গ্রীন টি নিবেন

৮। বোরিক এসিড মাউথওয়াশ ব্যবহার করতে পারেন

৯। বেকিং সোডা দিয়ে মুছতে পারেন

 

ওরাল থ্রাশের চিকিৎসা :

যেসব কারণে ওরাল থ্রাশের সৃষ্টি হয়েছে তা নির্ণয় করে সেটির অপসারণ করতে হবে। অ্যান্টিফাঙ্গাল ওষুধ ব্যবহার করতে হবে। নিস্টাটিন ওরাল সাসপেনশন, অস্ফোটেরিসন ও মাইকোনাজল এসব ক্ষেত্রে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে। তা ছাড়া খাবার ওষুধও প্রয়োজন হতে পারে। তবে ওরাল থ্রাশের চিকিৎসায় অবশ্যই সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। কারণ ওরাল থ্রাশের চিকিৎসায় ব্যবহৃত কিছু ওষুধ অনেক সময় রোগীর দেহে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে। যাদের কিডনি রোগ রয়েছে, তাদের ক্ষেত্রে বিশেষ ব্যবস্থায় চিকিৎসা দিতে হবে। মুখের ফাঙ্গাল সংক্রমণে চিকিৎসা দেয়ার আগে রোগীর কোনো যৌনরোগ আছে কিনা তা-ও খতিয়ে দেখতে হবে। অহেতুক মুখস্থ ওষুধ প্রয়োগ বা সেবন না করাই উত্তম।

 

লিখেছেন 

ডা. রাহেমিন সিপতি

বিডিএস, পিজিটি (বিএসএমএমইউ)

ইন্টারন্যাশনাল ফেলোশিপ কোর্স ফ্রম থাইল্যান্ড

ওরাল এন্ড ডেন্টাল সার্জন (স্পার্ক অব টুথ)

 

এআরআই

স্বাস্থ্য সম্পর্কিত আরও

আর্কাইভ