প্রকাশিত: ডিসেম্বর ৬, ২০২১, ১২:২৩ এএম
দেশে
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ কমে আসায় আত্মতুষ্টিতে ভোগার কোনো সুযোগ নেই। কারণ
বাংলাদেশের দরজায় কড়া নাড়ছে করোনার দক্ষিণ আফ্রিকান ভ্যারিয়েন্ট ‘ওমিক্রন’।
রোববার (৫ ডিসেম্বর) দুপুরে নিয়মিত স্বাস্থ্য বুলেটিনে স্বাস্থ্য অধিদফতরের মুখপাত্র ও রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার পরিচালক অধ্যাপক ডা. নাজমুল ইসলাম এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, ‘সংক্রমণের হার বাংলাদেশে এখনও দুই শতাংশের নিচে, এতে আমাদের আত্মতুষ্টিতে ভোগার কোনো কারণ নেই। কারণ ঘরের দরজাতেই ওমিক্রন কড়া নাড়ছে। কাজেই আমরা যদি এই মুহূর্তে সর্বোচ্চ সতর্কতা নিশ্চিত করতে পারি, পরস্পর পরস্পরকে সহযোগিতা, যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলি, সঠিক উপায়ে নাক-মুখ ঢেকে আমরা যদি মাস্ক পরি, একই সঙ্গে টিকা কার্যক্রমকে যদি আমরা আরও বেগবান করতে সহায়তা করি, তাহলে সেটি ওমিক্রন হোক বা অন্য কোনো ভ্যারিয়েন্ট হোক সেটিকে আমরা যথাযথভাবে মোকাবিলা করতে সক্ষম হব।
অধ্যাপক ডা. নাজমুল ইসলাম বলেন, ‘ওমিক্রন মোকাবিলায় আমরা প্রস্তুত আছি। তবে এক্ষেত্রে কমিউনিটিতে আমাদের সবার প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ অংশগ্রহণ জরুরি। একই সঙ্গে অন্যকে অনুপ্রাণিত ও উদ্বুদ্ধ করা ও সহায়তার মধ্য দিয়েই আমরা এই ভাইরাসটিকে শতভাগ নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারব বলে মনে করি।’
নাজমুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা মনে করি ওমিক্রন নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার চেয়ে সতর্ক ও সচেতন হওয়া জরুরি। আমরা যদি নিজেরা সচেতন হই, নিজেদের মুক্ত রাখি, তাহলে আমাদের পরিবারও সুরক্ষিত থাকবে। এমনকি এটি প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে পুরো দেশকে সুরক্ষিত রাখবে। আমরা মনে করি রাজনীতিবিদ, সামাজিক ও ধর্মীয় নেতা, উন্নয়ন সহযোগীসহ প্রত্যেকের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ অংশগ্রহণের মাধ্যমে করোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ এবং প্রতিরোধের কাজটি আমরা করতে পারব।’
শুধু আফ্রিকান দেশগুলো থেকে যারা আসবে, তাদেরকেই প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিন করতে হবে, বাকি দেশগুলোর বিষয়ে স্বাস্থ্য অধিদফতর কী ভাবছে, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আফ্রিকান দেশগুলোতে কমিউনিটি ট্রান্সমিশন হয়েছে বলেই তাদের জন্য বাড়তি বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে। অন্য যেকোনো দেশেও যদি কমিউনিটি ট্রান্সমিশন হয়, তাহলে তাদের বেলায়ও আমরা একই রকম সিদ্ধান্ত নেব। কারণ হলো কমিউনিটি ট্রান্সমিশন আর ইমপরট্যান্ট কেইস কিন্তু এক নয়। আফ্রিকায় যেটি হয়েছে সেটি কমিউনিটি ট্রান্সমিশন, আর ইউরোপে যেটি হয়েছে সেটি ইমপরট্যান্ট কেইস।’
স্বাস্থ্য অধিদফতরের এ কর্মকর্তা বলেন, ‘ইউরোপের দিকেও আমরা গভীর মনোযোগ রেখেছি। সেখানে যদি কমিউনিটি ট্রান্সমিশন ঘটে, তাহলে বাংলাদেশের ১৭ কোটি মানুষের জীবন-জীবিকাকে নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় জনস্বাস্থ্য এবং জনস্বার্থ রক্ষা করার জন্য যেসব সিদ্ধান্ত নেয়া দরকার, তা নিতে স্বাস্থ্য অধিদফতর কখনই কুণ্ঠাবোধ করবে না।’
তিনি আরও বলেন, ‘মাস্ক আমার সুরক্ষা সবার। আমরা সবাই যদি সুরক্ষিত থাকি, ওমিক্রনসহ যেকোনো বৃষ্টি আসুক না কেন, আমাদের কোনো ক্ষতি করতে পারবে না। সেই সঙ্গে আমাদেরকে টিকা গ্রহণের কাজটিকে আরও বেশি গতিশীল করতে হবে। একই সঙ্গে ব্যক্তিগত স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার মাধ্যমে নিজেদের সুরকার দিকটিকে শতভাগ গুরুত্ব দিতে হবে।’
ওমিক্রন মোকাবিলায় প্রস্তুত কোভিড ডেডিকেটেড হাসপাতালের শয্যা ও চিকিৎসক। আফ্রিকাসহ ৭টি দেশ থেকে এলে বাধ্যতামূলক থাকতে হবে ১৪ দিনের কোয়ারেন্টিনে। ইতোমধ্যে আফ্রিকা থেকে চট্টগ্রামে আসা ৫ জনকে রাখা হয়েছে হোম কোয়ারেন্টিনে। এ অবস্থায় ভয়াবহ এ ভ্যারিয়েন্ট ঠেকাতে চট্টগ্রাম বন্দর ও বিমানবন্দরসহ সব প্রবেশমুখে সতর্ক বার্তা দিয়ে রেখেছে চট্টগ্রাম স্বাস্থ্য বিভাগ।
জেডআই/ডাকুয়া