প্রকাশিত: অক্টোবর ১৮, ২০২১, ১১:৫৯ পিএম
অ্যাজমা ও শ্বাসকষ্টের রোগীদের
ফুসফুসে ওষুধ প্রয়োগের বহুল
পরিচিত যন্ত্রটির নাম নেবুলাইজার। এ
যন্ত্রটি দিয়ে তরল ওষুধকে সংকুচিত
করে বায়ু বা অক্সিজেন দিয়ে
স্প্রে বা অ্যারোসলে রূপান্তরিত
করা হয়, যা খুব
সহজেই নিঃশ্বাসের সঙ্গে ফুসফুসের শ্বাসনালী ও অ্যালভিউলিতে ঢুকে
শ্বাসকষ্ট দূর করে।
নেবুলাইজার
কোনো ওষুধ নয়, এটি
একটি বিশেষ ধরনের শ্বাস-প্রশ্বাসের ডিভাইস বা যন্ত্র, যা
ফুসফুসের বিভিন্ন সমস্যা, যেমন- অ্যাজমা, হাঁপানি, শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা, সিস্টিক ফাইব্রোসিস ইত্যাদিতে ব্যবহার করা হয়। তবে
এর সঠিক ব্যবহার না
জানা থাকলে ঠিকমতো ওষুধ প্রয়োগ করা
হয় না আর ওষুধ
প্রয়োগেই যদি ভুল হয়
তবে অসুখ সারানো নিয়ে
সন্দেহ থাকবেই। আর বেশির ভাগ
মানুষ এর সঠিক যত্নও
নিতে পারেন না।
নেবুলাইজার ব্যবহারে সচেতনতা প্রসঙ্গে পরামর্শ দিয়েছেন ব্র্যাক গবেষক ড. কামরান-উল-বাসেত। তিনি বলেছেন, নেবুলাইজার নিয়মিত ব্যবহার কোনো স্থায়ী সমাধান নয়। এতে রোগীর শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যার সাময়িক সমাধান হয় মাত্র। দুইবারের বেশি ব্যবহারে শ্বাসকষ্ট না কমলে হাসপাতালে নিতে হবে।
অনেকেই
প্রয়োজনে চিকিৎসকের কাছে গিয়ে নেবুলাইজার
দেন। আবার কেউ কেউ
বাসাতেই নিয়ে আসেন নেবুলাইজার
মেশিন। তিন ধরনের নেবুলাইজার
পাওয়া যায়। জেট, আলট্রাসাউন্ড
ও মেশ বা জালের
মতো নেবুলাইজার। এদের মধ্যে সবচেয়ে
সহজ পদ্ধতির বলে বাংলাদেশে সবচেয়ে
বেশি ব্যবহার হয় জেট নেবুলাইজার।
অ্যাজমা, দীর্ঘমেয়াদি শ্বাসকষ্ট ও অন্যান্য শ্বাসনালীজনিত
রোগের তীব্রতা বাড়লে নেবুলাইজার দেয়ার প্রয়োজন হয়। এর কয়েকটি
অংশের মধ্যে তরল ওষুধ প্লাস্টিকের
টিউবের মাধ্যমে স্প্রে করে দেহে প্রবেশ
করানো হয়।
নেবুলাইজারে
ওষুধের মাত্রা : নেবুলাইজ করার সময় রোগীকে
আরামদায়কভাবে শোয়া অবস্থায় রাখতে
হবে। নেবুলাইজারের বিভিন্ন অংশ জোড়া দিয়ে
২৩ মিলি পানি, ৫-১ সালবিউটামল ও
প্রয়োজনে ৫ মিলি ইপ্রাট্রোসিয়াম
সলিউশন মিশিয়ে নিতে হবে। বিদ্যুৎ
সুইচ অন করে মাস্ক
মুখে নিয়ে রোগীকে ধীরে
ও লম্বা শ্বাস নিতে হবে। ৩-৬ মিলি তরল
৫-১০ মিনিটে নেবুলাইজ
করা হয়।
নেবুলাইজারের
ব্যবহারের নিয়ম : নেবুলাইজার ব্যবহারের আগে ও পরে
সাবান দিয়ে হাত ধুয়ে
নিতে হবে। ব্যবহারের পর
নেবুলাইজারের কমপ্রেসার, টিউব, মাস্ক ও নেবুলাইজার আলাদা
করে ফেলতে হবে। মাউথপিস ও
নেবুলাইজার গরম পানিতে ৩০
সেকেন্ড ভিজিয়ে ধুয়ে শুকিয়ে নিতে
হবে। টিউব ও কমপ্রেসার
ভেতরে পরিষ্কার করা যায় না
বলে বাইরের দিকটা পরিষ্কার করতে হবে। মাস্ক
ছয় মাস পর পর
বদলাতে হবে। ফিল্টারে ময়লা
দেখা দিলেই তা বদলে ফেলতে
হবে।
নেবুলাইজার
ব্যবহারে কখনও কখনও অক্সিজেন
দেয়ার প্রয়োজন হতে পারে। এর
ব্যবহারে অনেক সময় পটাশিয়ামের
মাত্রা কমে যাওয়ায় পটাশিয়াম
সাপ্লিমেন্ট দিতে হতে পারে।
তাই নেবুলাইজার ব্যবহারে সতর্কতা ও সচেতনতা জরুরি।
তারিক/এম. জামান