প্রকাশিত: অক্টোবর ১, ২০২১, ০৬:৫৬ পিএম
স্মৃতিশক্তি হ্রাস হলো আলঝেইমার বা
ডিমেনশিয়ার প্রাথমিক লক্ষণ। এই লক্ষণগুলো ভুক্তভোগীর
প্রতিদিনের আচরণ পর্যবেক্ষণ করে
শনাক্ত করা যায়। স্মৃতিশক্তি
হ্রাসের কিছু লক্ষণ যা
আপনাকে অবশ্যই লক্ষ রাখতে হবে
তা হলো- অ্যাপয়েন্টমেন্টের তারিখ ভুলে
যাওয়া, সাম্প্রতিক ঘটনাগুলো ভুলে যাওয়া, সহজ
কাজগুলো বুঝতে অসুবিধা হওয়া, ঘোলাটে স্মৃতি, জিনিসপত্র ভুল জায়গায় রাখা
এবং মনোযোগ দিতে অসুবিধা হওয়া।
নিউরোলজি
জার্নালে প্রকাশিত একটি গবেষণা অনুসারে,
স্ট্রবেরি এবং কমলার মতো
কিছু ফল স্মৃতিশক্তি হ্রাসের
ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে। চলুন জেনে
নেওয়া যাক এ দুই
ফল কীভাবে স্মৃতিশক্তি হ্রাসের ঝুঁকি কমায়-
স্মৃতিশক্তি
হ্রাসের ঝুঁকি কমায় : যারা স্ট্রবেরি, কমলা,
মরিচ এবং আপেলের মতো
ফ্ল্যাভোনয়েড সমৃদ্ধ খাবার প্রতিদিন অর্ধেকটা হলেও খায় তাদের
স্মৃতিশক্তি দুর্বল হওয়ার ভয় কম থাকে।
কারণ এগুলো তাদের স্মৃতিশক্তি হ্রাসের ঝুঁকি ২০ শতাংশ কমাতে
পারে। এমনটাই বলা হয়েছে গবেষণায়।
ফ্ল্যাভোনয়েড
প্রাকৃতিকভাবে উদ্ভিদ থেকে পাওয়া যৌগিক
এবং শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হিসাবে বিবেচিত হয়। বিশেষজ্ঞরা বলেন,
বয়সের সঙ্গে সঙ্গে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট গ্রহণের পরিমাণ বৃদ্ধি না করলে তা
স্মৃতিশক্তি দুর্বল করতে ভূমিকা রাখতে
পারে।
গবেষণার
বিবরণ : গবেষণার শুরুতে ৪৮ গড় বয়সের
৪৯, ৪৯৩ জন নারী
এবং ৫১ গড় বয়সের
২৭৮৪২ পুরুষের ওপর জরিপ চালানো
হয়। তারা ২০ বছরেরও
বেশি সময় ধরে বিভিন্ন
খাবার কতবার খেয়েছে সে সম্পর্কে বেশ
কয়েকটি প্রশ্ন করা হয়। তাদের
বিভিন্ন ধরনের ফ্ল্যাভোনয়েড গ্রহণের পরিমাণ প্রতিটি খাবারের ফ্লেভোনয়েড কন্টেন্টকে তার ফ্রিকোয়েন্সি দ্বারা
গুণ করে গণনা করা
হয়েছিল।
নিউরোলজি
জার্নালে প্রকাশিত গবেষণায় দেখা গেছে যে,
কিছু মশলা এবং হলুদ
বা কমলা ফল এবং
শাকসবজিতে পাওয়া ফ্লেভোনয়েডের মধ্যে সবচেয়ে শক্তিশালী প্রতিরক্ষামূলক গুণাবলি রয়েছে এবং এটি স্মৃতিশক্তি
হ্রাসের ঝুঁকি ৩৮ শতাংশ পর্যন্ত
কমাতে সাহায্য করেছিল। যা বয়সের তুলনায়
তিন থেকে চার বছরের
ছোট হওয়ার সমতুল্য।
প্রতি
১০০ গ্রাম মরিচে প্রায় ৫ মিলিগ্রাম ফ্ল্যাভোন
থাকে। ব্লুবেরি, ব্ল্যাকবেরি এবং চেরিতে পাওয়া
অ্যান্থোসায়ানিন স্মৃতিশক্তি হ্রাসের ঝুঁকি কমায় ২৪ শতাংশ
পর্যন্ত। প্রতি ১০০ গ্রাম ব্লুবেরিতে
প্রায় ১৬৪ মিলিগ্রাম অ্যান্থোসায়ানিন
থাকে।
বিশেষজ্ঞ
মতামত : মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ওয়াল্টার উইলেট বলেন, ফ্ল্যাভোনয়েড সমৃদ্ধ রঙিন খাদ্য গ্রহণ
মস্তিষ্কের স্বাস্থ্যের দীর্ঘমেয়াদি উন্নতির জন্য একটি ভালো
উপায় বলে মনে হয়।
আমাদের গবেষণার ফলাফল ইতিবাচক। কারণ আমরা দেখতে
পেয়েছি যে আপনার খাদ্যে
সাধারণ পরিবর্তনগুলো কীভাবে স্মৃতিশক্তি হ্রাসের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করতে পারে। তিনি
আরও বলেন, গবেষণায় আমরা আরও দেখতে
পেয়েছি যে, যারা প্রতিদিন
অন্তত অর্ধেকটা কমলা, মরিচ, সেলারি, আঙ্গুর, আপেল ও নাশপাতি
খেয়েছেন তাদের স্মৃতিশক্তি অন্যদের তুলনায় বেশি তীক্ষ্ণ।
তারিক/এম. জামান