• ঢাকা রবিবার
    ২৪ নভেম্বর, ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

করোনার ভারতীয় ভ্যারিয়েন্টে উদ্বেগ

প্রকাশিত: মে ১০, ২০২১, ০৫:০০ পিএম

করোনার ভারতীয় ভ্যারিয়েন্টে উদ্বেগ

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) ভারতে শনাক্ত ধরনটি বিশ্বজুড়ে উদ্বেগ ছড়াচ্ছে। এই ভাইরাস ক্রমাগত নিজেকে বদলাতে থাকে। গত অক্টোবর মাসে প্রথম শনাক্ত করোনাভাইরাসের ভারতীয় ভ্যারিয়েন্টের বৈজ্ঞানিক নাম বি..৬১৭। এটি ছোঁয়াচে হয়ে ওঠায় টিকা কম কার্যকর হচ্ছে।

গত মে বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট পাওয়ার তথ্য দিয়েছে রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ গবেষণা ইনস্টিটিউট বা আইইডিসিআর। স্বাস্থ্য বিভাগের অতিরিক্ত মহাপরিচালক নাসিমা সুলতানা বলেন, ভারত থেকে বেনাপোল দিয়ে আসা আটজনের নমুনা পরীক্ষার পর ছয়জনের মধ্যে এই ভ্যারিয়েন্ট শনাক্ত হয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা করোনার ভারতীয় ধরনের বিষয়ে সতর্কতা সংক্রমণ রোধের জন্য ব্যবস্থা নেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।

বাংলাদেশের স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আসন্ন ঈদকে ঘিরে দেশের কোথাও করোনা বিধিনিষেধ মানা হচ্ছে না। ইতোমধ্যে দেশে ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট পাওয়া গেছে এবং তা প্রবলভাবে ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।

সতর্কতা হিসেবে গত ২৬ এপ্রিল থেকে ভারতের সঙ্গে স্থলসীমান্ত ১৪ দিন বন্ধ ঘোষণা করে বাংলাদেশ। গত মে আবারও তা ১৪ দিনের জন্য বাড়ানো হয়। দিকে ভারত থেকে দেশে ১০ জন করোনা রোগীর গ্রেফতারের বিষয়ে আদালতে মামলা হয়। আজ (১০ মে) তাদের মধ্যে সাতজনকে পুলিশ গ্রেফতার করে আদালতে সোপর্দ করেছে।

পুরো ভারতজুড়ে করোনা রোগী নিয়ে ত্রাহি ত্রাহি অবস্থা। অক্সিজেন টিকা সংকটে প্রতিদিনই মৃত্যু শনাক্তের হার বাড়ছে। মহামারি করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউয়ে বিপর্যস্ত ভারতে লাখ ৬৬ হাজার ৪৯৯ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। আর মারা গেছেন হাজার ৭৪৮ জন। আজ সোমবার (১০ মে) সকালে ওয়ার্ল্ডোমিটারের হিসাব অনুসারে, নিয়ে দেশটিতে মোট করোনা রোগী শনাক্তের সংখ্যা দাঁড়াল কোটি ২৬ লাখ ৬২ হাজার ৪১০ জন। মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল লাখ ৪৬ হাজার ১৪৬ জনে। গতকাল রোববার ( মে) দেশটিতে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা যান হাজার ৯২ জন। একই সময়ে করোনা শনাক্ত হয় লাখ হাজার ৫২২ জনের।

তিন কোটির কিছু বেশি মানুষের দেশ নেপাল। এক মাস আগেও দেশটিতে করোনা পরিস্থিতি ছিল বেশ নিয়ন্ত্রণে। দৈনিক ১০০ জনের মতো করোনা শনাক্ত হচ্ছিল। কিন্তু গত কয়েকদিনে গড়ে প্রতিদিন আট হাজারের বেশি মানুষের করোনা শনাক্ত হচ্ছে। ভারতের সঙ্গে নেপালের ১৮৮০ কিলোমিটার সীমান্ত রয়েছে। সেখানেও বিরাজ করছে ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট আতঙ্ক।

পাকিস্তানেও করোনায় শনাক্ত মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে। দেশটিতে বর্তমানে কোনো ধরনের লকডাউন নেই। তবে কিছু কিছু অঞ্চলে কড়াকড়ি রয়েছে। মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। স্বাস্থ্যবিধি মানাতে সেনা মোতায়েন করা হয়েছে। সেখানে ভারতীয় ধরন প্রতিরোধে সীমান্তে ব্যাপক কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে।

শ্রীলঙ্কায়ও মধ্য এপ্রিল থেকে করোনার সংক্রমণ বাড়ছে। গত শুক্রবার দেশটিতে হাজার ৮৯৫ জন নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন। পরিস্থিতি মোকাবিলায় কড়া পদক্ষেপের পাশাপাশি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। ভারত থেকে দেশটিতে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।

মালদ্বীপেও সংক্রমণ ঊর্ধ্বমুখী। দেশটিতে দৈনিক সংক্রমণ ছয়শছাড়িয়েছে। ভারতের প্রতিবেশী এসব দেশে সংক্রমণ বাড়ার জন্য ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট দায়ী কি না তা নিয়ে পর্যালোচনা চলছে। করোনার ভারতীয় ধরনে সংক্রমণের মাত্রা অত্যন্ত বেশি। গত সপ্তাহে দক্ষিণ এশিয়ায় নতুন করে ২৭ লাখ মানুষ করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন।

বকর/এম. জামান

স্বাস্থ্য সম্পর্কিত আরও

আর্কাইভ