প্রকাশিত: এপ্রিল ৮, ২০২৩, ১০:১৩ পিএম
রাজশাহী জেলা সদর হতে প্রায় ৪১ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্বে বাঘা উপজেলায় অবস্থিত একটি ঐতিহাসিক স্থাপনা ‘বাঘা মসজিদ’। মসজিদটি ১৫২৩-১৫২৪ সালে (৯৩০ হিজরি) হুসেন শাহী বংশের প্রতিষ্ঠাতা আলাউদ্দিন শাহের পুত্র সুলতান নুসরাত শাহ নির্মাণ করেন। পরবর্তীতে বিভিন্ন সময় এই মসজিদের সংস্কার করা হয় এবং মসজিদের গম্বুজগুলো ভেঙ্গে গেলে ধ্বংসপ্রাপ্ত মসজিদে নতুন করে ছাদ দেয়া হয় ১৮৯৭ সালে।
মসজিদটি ২৫৬ বিঘা জমির ওপর অবস্থিত। এর আঙিনা তৈরি করা হয়েছে সমভূমি থেকে থেকে ৮-১০ ফুট উঁচু করে। উত্তর পাশের ফটকের ওপরের স্তম্ভ ও কারুকাজ ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়েছে। মসজিদটিতে ১০টি গম্বুজ আছে। আর ভেতরে রয়েছে ছয়টি স্তম্ভ। এ ছাড়াও চারটি মিহরাব রয়েছে যা অত্যন্ত কারুকার্য খচিত। যার দৈর্ঘ্য ৭৫ ফুট, প্রস্থ ৪২ ফুট ও উচ্চতা ২৪ ফুট ছয় ইঞ্চি। মাঝখানের দরজার ওপর ফার্সি ভাষায় লেখা একটি শিলালিপি রয়েছে।
মসজিদটির ভেতরে এবং বাইরের দেয়ালে মিহরাব ও স্তম্ভ রয়েছে। বাঘা মসজিদের দৈর্ঘ্য ২২.৯২ মিটার, প্রস্থ ১২.১৮ মিটার এবং উচ্চতা ২৪ ফুট ৬ ইঞ্চি। এর দেয়াল ২.২২ মিটার পুরু। মসজিদটিতে সর্বমোট ১০টি গম্বুজ, ৪টি মিনার (যার শীর্ষদেশ গম্বুজাকৃতির) এবং ৫টি প্রবেশদ্বার রয়েছে। মসজিদটির চারদিকে প্রাচীর দিয়ে ঘেরা এবং প্রাচীরের দুদিকে দুটি প্রবেশদ্বার রয়েছে। মসজিদের ভেতরে-বাইরে সর্বত্রই টেরাকোটার নকশা বর্তমান। মসজিদের পাশে অবস্থিত বিশাল দিঘিও একটি দর্শনীয় স্থান।
এ ছাড়া বাঘা মসজিদের পাশেই রয়েছে একটি মাজার শরীফ। বাঘা মসজিদটির গাঁথুনি চুন এবং সুরকি দিয়ে। মসজিদের ভেতরে এবং বাইরের দেয়ালে সুন্দর মিহরাব ও স্তম্ভ রয়েছে। এ ছাড়া আছে পোড়ামাটির অসংখ্য কারুকাজ, যার ভেতরে রয়েছে আমগাছ, শাপলা ফুল, লতাপাতাসহ ফার্সি খোদাই শিল্পে ব্যবহৃত হাজার রকম কারুকাজ। এ ছাড়া মসজিদ প্রাঙ্গণের উত্তর পাশেই রয়েছে হজরত শাহদৌলা ও তার পাঁচ সঙ্গীর মাজার।
মসজিদের ভেতরে উত্তর-পশ্চিম কোণে একটু উঁচুতে নির্মিত একটি বিশেষ নামাজের কক্ষ আছে। এ মসজিদ সংলগ্ন এলাকায় প্রতিবছর ঈদুল ফিতরের দিন থেকে তিনদিন পর্যন্ত `বাঘার মেলা`র আয়োজন করা হয়। এ মেলাটি ৫০০ বছরের ঐতিহ্য।