প্রকাশিত: জানুয়ারি ১৫, ২০২৩, ১০:৫৬ পিএম
প্রকৃতির কোনো রহস্য নাকি মানুষের হাতে গড়া এই স্টোনহেঞ্জ তা নিয়ে এখনো চলছে গবেষণা। কৌতূহলী মানুষ শত শত বছর ধরে সেই সকল রহস্যের সমাধানে নিজেদের সময়, শ্রম, অর্থ এমনকি জীবন পর্যন্ত বাজি রেখে আসছে। স্টোনহেঞ্জ তেমনি এক রহস্য যা বছরের পর বছর ধরে মানুষ কে আকর্ষণ করেছে আর করেছে প্রশ্নের সম্মুখীন। স্টোনহেঞ্জের সৌন্দর্য আর রহস্যময়তায় মুগ্ধ হয়ে সবাই জানতে চেয়েছে যে কারা এটা তৈরি করেছিল, কীভাবে আর কেনই বা তৈরি করেছিলো এই বিশালাকার পাথরের স্তম্ভ।
স্টোনহেঞ্জ ইংল্যান্ডের উইল্টশায়ারে অবস্থিত একটি প্রাগৈতিহাসিক স্মৃতিস্তম্ভ। নব্যপ্রস্তর যুগে তৈরিকৃত এই স্থাপনাটি এতই আগের যে এর সম্পর্কে খুব বেশি তথ্য পাওয়া যায়না। বৃত্তাকারে বড় বড় দণ্ডায়মান পাথরের চারপাশে মাটি দিয়ে তৈরি বাঁধ আছে। স্টোনহেঞ্জের গঠন খানিকটা জটিল। এর বাইরের দিকে একটি বৃত্তাকার পরিখা রয়েছে। প্রবেশপথটির কিছুটা দূরেই রয়েছে মাটির বাঁধ। এ বাঁধের ভেতর চারদিক বেষ্টন করে রয়েছে মাটির গহ্বর। পাথরগুলোর আকারও আলাদা আলাদা। কিছু বৃত্তাকার ও কিছু ঘোড়ার খুরের নলের আকারবিশিষ্ট পাথর। স্টোনহেঞ্জ নিয়ে প্রায় শত শত পৌরাণিক কাহিনী এবং কিংবদন্তি রয়েছে। এমনকি অনেকেই বিশ্বাস করেন ভিনগ্রহীরা এসে এই স্থাপত্য নির্মাণ করে গেছে।
তবে এবার ব্রিটিশ এক স্থপতি কিডনির পাথর দিয়ে তৈরি করলেন মিনি-স্কাল্পচার। পুরো বিশ্ব অবাক তার এই কাণ্ড দেখে। সাইমন লে বগিট নামের সেই স্থপতির কাছে কোনো কিছুই ফেলনা নয়। শিল্পের জন্য শিল্পীর কাছে সামান্য উপাদানও যথেষ্ট, এমনটাই মনে করেন সাইমন। হাতের কাছে যা পান তাই দিয়েই মনের মতো কিছু গড়ে ফেলেন স্থপতি। তার শিল্পকর্ম অবাক করে দিয়েছে বারবার।
সোশ্যাল মিডিয়ায় সাইমন এই স্টোনহেঞ্জের ছবি দিতেই তা ভাইরাল হয়ে যায়। হইচই পড়ে যায় পুরো বিশ্বে। সাইমন লে বগিট তার নিজের কিডনির স্টোন দিয়েই গড়েছেন এই স্টোনহেঞ্জ। নিওলিথিক ও ব্রোঞ্জ যুগের এই স্থাপত্যটি নিখুঁতভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন তার শিল্পকর্মে।
আলট্রাসোনোগ্রাফিতে কিডনিতে স্টোন ধরা পড়ার পরেই ভাবনাটা মাথায় আসে সাইমনের। তখনই ঠিক করে ফেলেন, এটা তো শরীরেরই জিনিস, তাই ফেলে দেওয়ার মানেই হয় না। কিডনি থেকে যত পাথর বের হবে তাই দিয়ে গড়ে ফেলবেন কোনো স্থাপত্য। এতে ডাক্তারদের অস্ত্রোপচারের সাফল্যকে সম্মান জানানোও হবে আবার নতুন কিছু করে দেখানোও যাবে।
সার্জারি করে সাইমনের কিডনি স্টোন বের করার পরে সেগুলো রেখে দিতে বলেছিলেন সাইমন। ছোট ছোট পাথর দিয়েই স্টোনহেঞ্জের মিনি-স্কাল্পচার তৈরি করে ফেলেন। পাথরের পরে পাথর জুড়ে তৈরি হয় স্থাপত্য। একদম অবিকল স্টোনহেঞ্জের মতোই। শুধু আকারে ছোট।
সাজেদ/