প্রকাশিত: জানুয়ারি ৭, ২০২৩, ১১:১৫ পিএম
ঢাকার একটি ঐতিহ্যবাহী মসজিদের নাম ‘তারা মসজিদ’। পুরান ঢাকার আরমানিটোলায় আবুল খয়রাত সড়কে অবস্থিত এটি। সাদা মার্বেলের গম্বুজের ওপর নীলরঙা তারায় খচিত মসজিদটি নির্মিত হয় আঠারো শতকের প্রথম দিকে। তবে, মসজিদের গায়ে এর নির্মাণ-তারিখ খোদাই করা ছিল না।
ঠিক কবে মসজিদটি নির্মাণ হয়েছে, তা জানা যায়নি। তবে মির্জা গোলাম পীর ওরফে মির্জা আহমেদ জান নামের এক ব্যবসায়ী এটি নির্মান করেছেন বলে জানা গেছে।
১৯২৬ সালে আলী জান বেপারী নামের এক ব্যবসায়ী মসজিদটি সংস্কার করেন। তিনি চিনামাটির প্লেট, পেয়ালা ও ছোট-বড় নানা রঙের কাচের টুকরার সমন্বয়ে এক বিশেষ পদ্ধতিতে মসজিদটি অলংকৃত করেন। এ পদ্ধতিকে চিনি দানার কাজ বা চিনিডিক্রি বলা হয়। কারুকার্যময় এই মসজিদের দেয়ালে ও ছাদে শোভা পেয়েছে নানা রঙের ফুল, পাতা ও চাঁদ-তারা নকশা। এর গম্বুজগুলো তারাখচিত নকশা দ্বারা অলংকৃত। সে জন্যই এটিকে তারা মসজিদ নামে ডাকা হয়।
১৯৮৭ সালে সরকারি অর্থায়নে মসজিদটির গম্বুজ তিনটি থেকে পাঁচটিতে উন্নীত করা হয়। সেই বছরের ৪ ডিসেম্বর এটিকে রাষ্ট্রীয়করণ করা হয়।
তারা মসজিদের দৈর্ঘ্য ২১ দশমিক ৩৪ মিটার, প্রস্থ ৭ দশমিক ৯৮ মিটার। প্রতিদিন অনেক দর্শনার্থী দূরদূরান্ত থেকে মসজিদটি পরিদর্শন করতে আসেন।
এই স্থাপনাটি কেন্দ্র করে ১৯৭৬ সালে বাংলাদেশ সরকার ৫ থেকে ৫০০ টাকা সিরিজের ব্যাংক নোট মুদ্রণ করে। বর্তমানে প্রচলিত ১০০ টাকা মূল্যমানের নোটেও রয়েছে পুরান ঢাকার এ স্থাপত্যটি।
এ ছাড়াও ২০১৬ সালের ১০ ডিসেম্বর এই মসজিদের ডিজাইনকে খাদি কাপড়ে ফুটিয়ে তোলে রাজধানীর রেডিসন ব্লু হোটেলে ফ্যাশন ডিজাইন কাউন্সিল অব বাংলাদেশ আয়োজনে অনুষ্ঠিত হয় খাদি ফ্যাশন শো।
স্থানীয় লোকজন নিয়ে গঠিত কমিটিই এর পরিচালনা করছে। পদাধিকারবলে এই কমিটির সভাপতি ও তত্ত্বাবধায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন ঢাকার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক। মসজিদের উন্নয়ন ও বিভিন্ন খরচ বাবদ প্রতিবছর বাংলাদেশ সরকার তিন লাখ টাকা প্রদান করে।
বর্তমান মসজিদটি বাংলাদেশ সরকারের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের তত্ত্বাবধানে রয়েছে।
সাজেদ/