প্রকাশিত: জানুয়ারি ৬, ২০২৩, ১০:৩৮ পিএম
বেসরকারী একটি বিশ্বাবদ্যালয়ে বিবিএ তৃতীয় বর্ষে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থী শাহেদ, পড়ালেখায় খুব মেধাবী। তার অতীতের বোর্ড পরীক্ষায় ফলাফল খুব ভালো। পড়ালেখা শেষ করে একটি ভালো চাকরি করে দেশের উন্নয়নে অংশীদার হওয়ার কথা। তবে শাহেদের ইচ্ছা বিবিএ শেষ করে উচ্চতর ডিগ্রীর জন্য অস্ট্রেলিয়া পাড়ি জমাবেন এবং সেখানেই স্থায়ী হবেন।
দেশের বেসরকারী একটি প্রতিষ্ঠানে গুরুত্বপূর্ণ পদ প্রধান নির্বাহী হিসেবে কর্মরত আছেন তানজিনা আক্তার। তার মাধ্যমে অনেক লোকের কর্মসংস্থান হচ্ছে। কিন্তু তার সঙ্গে কথা বলে জানা গেল তিনি কানাডায় স্থায়ীভাবে বসবাসের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজ পত্র জমা দিয়েছেন।
বাংলাদেশের এসব মেধা এবং অভিজ্ঞতা ক্রমান্বয়ে বেরিয়ে যাচ্ছে দেশ থেকে এবং যা দেশের কোনো কাজেই আসছে না। কিন্তু এই মেধা এবং অভিজ্ঞতাই হলো একটি দেশের জনসম্পদ। এই জনসম্পদ দেশের থেকে বেরিয়ে যাওয়ার ফলে সামাজিক এবং অর্থনৈতিকভাবে দেশের উন্নয়নে পিছিয়ে পড়ে। দেশ এখন অবকাঠামোগত উন্নয়নে অনেক এগিয়ে যাচ্ছে। এই উন্নয়নকে টেকসই করতে হলে আমাদের এই দক্ষ জনবলকে সঠিকভাবে কাজে লাগানো দরকার।
তামিল নাড়ুর ‘মহানতি’ সিনেমায় একটি ডায়লগ আছে, ‘আসলে যাদের রাজনীতিতে আসা উচিত তারাই রাজনীতি ঘৃণা করে’। এখানে ব্যাপারটা এমন নয় যে শুধু রাজনীতির কারণে আমাদের মেধা ও অভিজ্ঞতা বেরিয়ে যাচ্ছে। দুর্নীতি, নিরাপত্তা, জীবন ব্যবস্থাও এর জন্য দায়ী।
যারা এই দেশের দুর্নীতি, নিরাপত্তা, জীবন ব্যবস্থা এবং বিভিন্ন সমস্যা দূর করতে কাজ করবে সেই মেধাগুলোই চলে যাচ্ছে ভিনদেশে। গত দশ বছরে দেশ থেকে এমন কত জনশক্তি বের হয়ে গেছে তার কোনো ইয়ত্তা নেই। দেশের অর্থ পাচারের মতোই এই জনশক্তি পাচার দেশের জন্য হুমকি স্বরুপ।
বিশেষজ্ঞদের মতে, নিরাপদ ও উন্নত জীবন ব্যবস্থার দিকে আমাদের শিক্ষিত সমাজের দুর্বলতা আগেও কাজ করত এবং এখন তা ধীরে ধীরে প্রকট আকার ধারন করছে। দেশের উন্নয়নে এই জনশক্তি সঠিকভাবে কাজে লাগানো দরকার।
আল আমিন শেখ বাংলাদেশের একটি স্বনামধন্য এনজিওতে উচ্চপদে কাজ করতেন। এখন পুরো পরিবার নিয়ে পাড়ি জমিয়েছেন কানাডায়। তিনি বলেন কানাডায় উন্নত জীবন ব্যবস্থা ও সন্তানের নিশ্চিত সুন্দর ভবিষ্যতের জন্যই এখানে এসেছেন।
তবে মুদ্রার বিপরীত পিঠও আছে। অনেক শিক্ষার্থী বিদেশে পড়াশোনা শেষ করে দেশে ফিরে দেশের উন্নয়নে কাজ করছেন। কর্মসংস্থান সৃষ্টি করছেন হাজার হাজার বেকার যুবকের। দেশের সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়নে ভূমিকা রাখছেন। তবে তার সংখ্যা অপ্রতুল।
সাজেদ/