প্রকাশিত: জানুয়ারি ২, ২০২৩, ০৯:০৬ পিএম
সুগন্ধ আর দুর্গন্ধের বর্ণনা দিতে গিয়ে হাছন রাজা তাঁর একটি গানে উলেখ করেছেন, ‘নাকে পয়দা করিয়াছে খুশবয় আর বদবয়।’
অর্থাৎ নাক জন্ম দিয়েছে সুগন্ধ আর দুর্গদ্ধ। তাঁর এই গানের চয়নগুলো আপ্লুত করেছিল কবিগুর রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে। রবীন্দ্রনাথ হাছন রাজার গানে দর্শনের একটি বড় তত্ত্ব খোঁজে পেয়েছিলেন। তবে আমরা দর্শনের তত্ত খোঁজার জন্য এই চয়নগুলো উদ্ধৃত করিনি। সুগদ্ধ উপলব্ধির উপমা দিতে গিয়েই দারস্থ হয়েছি হাসন রাজার গানের।
হ্যা, সুগন্ধ। মানুষ চিরকালই সুগন্ধের পূজারি। দুর্গন্ধ কখনোই মানুষ গ্রহণ করতে পারে না। কিন্তু কোনো সুগন্ধ যখন বাতাসে ভাসে, প্রাণভরে তার নিশ্বাস নেই আমরা! তা আমাদেরকে শুধু বিমোহিতই করে না, দেহ-মনকে করে পরিশুদ্ধ! সে জন্য ব্যক্তিক আকর্ষণ বৃদ্ধিতে আমরা যেমন নামি-দামী পারফিউম ব্যবহার করি তেমনি আনুষ্ঠানিক পরিবেশকে উপভোগ্য করতেও ব্যবহার করি নানা জাতের সুগন্ধি। এরমধ্যে আগর-আতর অন্যতম। সুগন্ধি হিসেবে আগর যেমন বিশ্বব্যাপী সমাদৃত তেমনি আতরেরও প্রচলন রয়েছে সারা দুনিয়ায়। এই আগর-আতর কিন্তু সব দেশে উৎপাদিত হয় না। বিশেষ বিশেষ অঞ্চলে এর আবাদ হয়ে থাকে। ভূ-প্রাকৃতিক পরিবেশের উপর নির্ভর করে বেড়ে ওঠে আগরের গাছ।
আমাদের দেশে, বিশেষ করে সিলেট অঞ্চল আগর চাষের উপযোগী হওয়ায় দীর্ঘকাল ধরেই ‘শ্রীভূমি’তে অব্যাহত রয়েছে এর চাষাবাদ। প্রথমে বাড়ির আঙিনায় আগরের আবাদ করা হলেও সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এর পরিসর বৃদ্ধি পেয়ে এখন তা শিল্প হিসেবে প্রতিষ্ঠা পেয়েছে। যার ফলে সিলেটে এখন বাণিজ্যিকভাবেই আগরের চাষ হচ্ছে। ব্যক্তির পাশাপাশি সরকারি উদ্যোগেও শুরু হয়েছে এর আবাদ। যার সুফল পাচ্ছে অসংখ্য মানুষ। এ অঞ্চলের লাখো মানুষের জীবিকা নির্বাহের অবলম্বন হয়ে দাঁড়িয়েছে এই শিল্প। শুধু তাই নয়, আগর-আতর রফতানি করে প্রতিবছর অর্ধশত কোটি টাকার রাজস্ব আয় হচ্ছে। কিন্তু পরিতাপের বিষয়, আজও এ শিল্পে আধুনিকতার ছোয়া লাগেনি! উল্টো বেশ কিছু সমস্যা এই শিল্পের অগ্রযাত্রায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে চলেছে। সেগুলো নিরসন কল্পেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কোনো মাথাব্যাথা নেই। অথচ সঠিক পরিকল্পনা প্রণয়ন করে সরিকারি পৃষ্ঠপোষকতা করা হলে এই শিল্পের মাধ্যমে যেমন নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি হতো তেমনি বাড়তো বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের মাত্রা। ব্যবসায়ীদের দাবি, তাহলে প্রতিবছর এই খাত থেকে কম করে হলেও শত কোটি টাকার রাজস্ব আয় করা যেত।
সিলেট বিভাগের হেরিটেজ হিসেবে বিবেচিত হওয়া আগরের চাষাবাদ এ অঞ্চলে ঠিক কবে থেকে শুরু হয়েছে এর সঠিক কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। আগর ব্যবসায়িদের ভাষ্য অনুযায়ি, প্রায় চারশ বছর ধরে মৌলভীবাজার জেলায় আগরের চাষ হচ্ছে। সে কারণে অনেকে মৌলভীবাজারকে আগর-আতরের জেলা বলে থাকেন। এই জেলার বড়লেখা উপজেলার সুজানগর গ্রামটি আগর-আতরের গ্রাম হিসেবে বিশ্বব্যাপী পরিচিতি পেয়েছে। সুজনগরের লোকজন বংশ পরম্পরায় আগর-আতর ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। আগর-আতর উৎপাদনে নারী-পুরুষ সম্মিলিতভাবে কাজ করে থাকেন।
যদিও এক সময় প্রাকৃতিকভাবে এই অঞ্চলের বন-জঙ্গলে আগরগাছ জন্মাত। তা খুঁজে এনে আতর উৎপাদন করা হতো। চাহিদা এবং আগর-আতর রফতনি বৃদ্ধি পাওয়ার পর থেকে সুজানগরে বাণিজ্যিকভাবে আগরের চাষ হচ্ছে। এ গ্রামের এমন কোনো বাড়ি পাওয়া যাবে না, যে বাড়িতে আগর গাছ নেই। কোথাও বা এক-দুই বিঘা বা তারও বেশি জায়গায় গড়ে তোলা হয়েছে আগর বাগান। এলাকার পাহাড়-টিলাগুলোও আগরগাছে ভরপুর। ছোট ছোট সবুজ পাতায় রোদের ঝিলিক আর বাতাসের আবেশে তৈরি হওয়া ঢেউ অন্য এক আবহের সৃষ্টি করে আগর বাগানে। বৃষ্টিভেজা সবুজ পাতার ডগা থেকে শিশিরের মতো ঝড়ে পড়ে জলের ফোটা। রোদ-বৃষ্টি, আলো-আধারের সঙ্গে মিতালী করে একেকটি আগর গাছ বেড়ে ওঠে। ছোট, বড়, মাঝারি প্রত্যেকটি আগর গাছই অর্থের উৎস। এক একটি পরিণত আগর গাছ বিক্রি হয় লক্ষাধিক টাকায়। আগর কাঠর মানের তারতম্য অনুসারে এ গুলোকে ডবল সুপার, আগর প্রপার, কলাগাইছ আগর এবং ডোম আগর হিসাবে চিহ্নত করা হয়। কেউ কেউ আবার আতরকে ‘তরল সোনা’ বলে থাকেন।
বড়লেখা শহর থেকে প্রায় ১২ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত সুজানগরে আগর-আতরের বাগান দেখতে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা উৎসুক মানুষের ভিড় লেগেই থাকে। আগর শিল্পের আয় বদলে দিয়েছে এখানকার মানুষের জীবনযাত্রা। শুধু এই গ্রামেই নয়; বড়লেখা উপজেলার সচেতন মানুষমাত্রেই আগর-আতর চাষের সঙ্গে সম্পৃক্ত। বড়লেখার পাশাপাশি মৌলভীবাজার জেলার অন্যান্য উপজেলাগুলোতেও হচ্ছে আগর-আতরের চাষ।
আগরগাছে প্রাকৃতিকভাবে কোনো ক্ষত সৃষ্টি হলে তাতে কষ জমা হয়। গাছ কেটে ক্ষতস্থান বেছে নিয়ে জ্বাল দিয়ে উৎপাদন করা হয় আগর-আতর। এ জন্য বছরের পর বছর অপেক্ষা করতে হতো। কিন্তু ২০ বছর পূর্বে স্থানীয়রা আগর গাছে কৃত্রিমভাবে ক্ষত সৃষ্টি করে এ থেকে উৎপাদনের কথা চিন্তা করেন। প্রাথমিকভাবে আগর গাছে লোহার পেরেক ঢুকিয়ে ক্ষত সৃষ্টি করে দেখা হয়। তাতে সুফল পায় চাষিরা। এরপর থেকে এই পদ্ধতি জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। বর্তমানে এই পদ্ধতিতেই আগর আতর উৎপাদন চলছে। আগরগাছে শত শত লোহার পেরেক ঢুকিয়ে গাছে কৃত্রিম ক্ষত সৃষ্টি করা হচ্ছে। সেই ক্ষতস্থানে কষ জমা হলে পুরো গাছটি কেটে টুকরো টুকরো করে পেরেক খোলা হয়। পেরেক খোলা হলে শ্রমিকরা ক্ষতচিহ্নিত অংশ আলাদা করে তা পানির পাত্রে ১৫ দিন থেকে এক মাস পর্যন্ত ভিজিয়ে রাখেন। সেই অংশগুলো বড় পাত্রে জ্বাল দেয়া হয়। ৮ থেকে ১৫ দিন বা তারও বেশি সময় ধরে জ্বাল দিতে হয়। এই পাত্র থেকে একটি পাইপ দিয়ে জলীয় ও বাষ্পীয়ভাবে ফোঁটা ফোঁটা করে তরল অন্য একটি পাত্রে জমা হয়। পাত্রে জমা হওয়া তরলই হচ্ছে আতর। ৪০ থেকে ৫০ কেজি ক্ষতময় কাঠের টুকরা থেকে পাঁচ থেকে সাত তোলা পরিমাণ আতর উৎপন্ন হয়ে থাকে। প্রতি তোলা আতর সাড়ে পাঁচ হাজার থেকে ছয় হাজার টাকায় বিক্রি হয়। সিদ্ধ হওয়া টুকরাগুলো ভুসি হিসেবে সংগ্রহ করা হয়। ভুসির সঙ্গে অন্যান্য উপাদান মিশ্রিত করে তৈরি করা হয় আগর।
সংশ্লিষ্টদের কাছ থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ি, শুধু বড়লেখায় বছরে আগরের নির্যাস (তেল) প্রায় ১ হাজার লিটার উৎপাদিত হয়। সবমিলিয়ে সিলেট বিভাগের বাগানগুলো থেকে প্রতিবছর যে পরিমাণ আগর-আতর উৎপাদিত হচ্ছে চাহিদার বিপরীতে একেবারেই অপ্রতূল। কারণ সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বিশ্ববাজারে চাহিদা বাড়ছে আগর-আতরের। চাহিদা বৃদ্ধির প্রমাণ পাওয়া যায় যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান গ্লোবাল ইন্ডাস্ট্রি অ্যানালিস্টিসের প্রতিবেদনে। তাদের দাবি, ২০২০ সালে বিশ্বে সুগন্ধির বাজার দাঁড়াবে চার হাজার কোটি ডলারের। বাংলাদেশি টাকায় যার পরিমাণ ৩ লাখ ২০ হাজার কোটি টাকার সমান। এ থেকেই অনুমান করা যায় আতর জাতীয় পণ্যের চাহিদা। কিন্তু এই চাহিদা পুরণে তেমন একটা ভূমিকা রাখতে পারছে না বাংলাদেশের আগর-আতর। কাঁচামাল সঙ্কটের কারণেই সেটা সম্ভব হচ্ছে না।
বর্তমানে দুবাই, সৌদি আরব, কাতার, কুয়েত, বাহরাইন, মালয়েশিয়া, ওমান, ইয়েমেন, সিরিয়াসহ ইউরোপের কয়েকটি দেশে আতর রফতানি করা হচ্ছে। কুয়েত, সৌদি আরব, থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া এবং আরব আমিরাতের দুবাইয়ে বাংলাদেশিদের আগর-আতর কারখানা আছে। কিন্তু চাহিদার বিপরীতে যোগান দেয়া যাচ্ছে। তবে, এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের জন্য উদ্যোগী হয়েছে বনবিভাগ। সংশ্লিষ্টদের কাছ থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ি, আগর শিল্প রক্ষায় বনবিভাগ দেশের প্রায় ৭শ’ ৮৫ দশমিক ৬৭ হেক্টর জমিতে আগর বাগান গড়ে তুলছে। আগর শিল্পের কাঁচামাল সংকট দুর করতে ১৯৯৮ সাল থেকে পরীক্ষামূলকভাবে বনবিভাগের পক্ষ থেকে আগর বনায়ন প্রকল্প শুরু করা হয়। পাশাপাশি ব্যাক্তিগত উদ্যোগেও আগর বনায়নের জন্য ব্যসায়ীদের সহায়তায় ক্যাম্পেইন অব্যাহত রয়েছে। বন বিভাগ প্রতিবছর চাষিদের কাছে গড়ে ১ লাখ ২০ হাজার চারাগাছ বিক্রি করছে। বড়লেখার সুজানগর এলাকায় ব্যাক্তি উদ্যোগে গড়ে ওঠা শতাধিক নার্সারী থেকেও বিক্রি হচ্ছে চারা। এসব নার্সারি থেকে প্রতি বছর ১০ থেকে ১২ লাখ আগরের চারা বিক্রি করা হয়ে থাকে। তবে আগর চাষ নিয়ে দীর্ঘ মেয়াদী কোনো গবেষণা না হওয়ার কারনে অনেক ক্ষেত্রেই ব্যবসায়ীদের ক্ষতিগ্রস্থ হতে হচ্ছে।
ঠিক কি রকম ক্ষতি হচ্ছে একটা উদাহরন দিলেই তা পরিস্কার হয়ে যাবে। বর্তমানে সিলেট বিভাগে মোট ১২১ টি আগর কারখানা রয়েছে। এরমধ্যে বড়লেখায় ১১১টি, কুলাউড়ায় ৬টি, কমলগঞ্জে ২টি এবং সিলেট সদরে ২টি। সিলেটের দুটি ছাড়া অন্য ১১৯টি কারখানাই চলে জ্বালানী হিসাবে কাঠ ব্যবহার করে। কিন্তু কাঁচামাল সংকটের কারণে আগর কারখানাগুলো শতভাগ উৎপাদনে যেতে পারছেনা। বনবিভাগের দেওয়া তথ্য অনুযায়ি, দেশের ১২১টি কারখানার বার্ষিক উৎপাদন ক্ষমতা ১ হাজার ২০০ কেজি আগর তেল। এ জন্য প্রয়োজন বছরে ৩ থেকে ৪ লক্ষ ঘনফুট আগর কাঠ। কিন্তু বাগানগুলো থেকে প্রয়োজনীয় কাঠ পাওয়া যায়না। যার ফলে বছরে ৬ থেকে ৮ মাস সচল থাকে ফ্যাক্টরিগুলো। বাকি চারমাস উৎপাদন বন্ধ থাকে। বর্তমানে দেশে ৮০০ কেজি আগর তেল উৎপাদিত হচ্ছে। কাঁচামাল ও জ্বালানী সরবরাহ নিশ্চিত করা গেলে বারো মাসই ফ্যাক্টরিগুলো সচল রাখা সম্ভব। তখন অনায়াসে বছরে ১শ’ কোটি টাকার আগর তেল বিদেশে রপ্তানী করা যাবে।
শুধু কাচামাল সঙ্কটই নয়, আরও নানা প্রতিবদ্ধকতা এই শিল্পের অগ্রযাত্রায় বাঁধ সাধছে। আগরচাষিদের অভিযোগ, বাগানে গাছ বড় হলে তা কাটার আগে সহকারী ভূমি কমিশনার অফিস থেকে হোম পারমিট, বন বিভাগ থেকে পারমিট পাস নিতে হয়, যা অত্যন্ত কষ্টসাধ্য ব্যাপার। সরকারিভাবে আগর বিলুপ্তপ্রজাতির মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করায় উদ্যোক্তাদের বন বিভাগ, বিডিআরসহ বিভিন্ন সংস্থার কাছে জবাবদিহি করতে হচ্ছে। অনেক সময় সেটা বিরক্তিকর পর্যায়ে পৌছে। বন বিভাগের ট্রানজিট পারমিট বিধিনিষেধের কারণেও আতর-আগর উৎপাদন, পরিবহন এবং রপ্তানি ব্যাহত হচ্ছে। রপ্তানির ক্ষেত্রে আগরকে সাইটিস (কনজারভেশন অব ইন্টারন্যাশনাল ট্রেড অব এনডেঞ্জার স্পেসিস অব ওয়াইল্ড ফ্লোরা অ্যান্ড ফোনা) তালিকাভুক্ত উদ্ভিদ প্রজাতির অন্তর্ভুক্ত করার কারনে এই উদ্ভিদ বা তার অংশ থেকে সৃষ্ট কোনো পণ্য রপ্তানি কিংবা পুনঃরপ্তানি করতে হলে প্রধান বন সংরক্ষকের ছাড়পত্রের প্রয়োজন হয়। নানা জটিলতার কারণে এ ছাড়পত্র সময়মতো পাওয়া যায় না।
যার ফলে তৈরি হয় দীর্ঘসূত্রিতা, একারনে সংশ্লিষ্টদের ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। আগর-আতর রফতানি বৃদ্ধি করতে হলে এই পদ্ধতি সহজ করতে হবে। সেইসঙ্গে মানসম্পন্ন আতর তৈরির জন্য একটি আগর-আতর গবেষণা ইনস্টিটিউটও স্থাপন করাও জরুরি। কারন নানা জাতের আতর রয়েছে পৃথিবীতে। কিন্তু কোন জাতের আগর গাছ লাগালে উৎপাদন অধিক হবে, কম সময়ে উৎপাদিত হবে পণ্য তার কোনও সঠিক ধারণা নেই এই অঞ্চলের চাষিদের। এ কারনে এই শিল্পের অগ্রগতির জন্য সরকারকেই উদ্যোগ নিতে হবে। আগর-আতর শিল্পের অগ্রযাত্রায় সকল প্রতিবন্ধকতা দূর করতে বাণিজ্য মন্ত্রলায়কে এগিয়ে আসতে হবে। করতে হবে সুনির্দিষ্ট নীতিমালা। কারন নীতিমালা না থাকায় রপ্তানি খাতে বড় অবদান রাখতে পারছেনা এই শিল্প। রপ্তানির ক্ষেত্রে আইনি জটিলতার কারণেই মধ্যপ্রাচ্যসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অবৈধপথে আগর-আতর রপ্তানি হচ্ছে। আর এতে করে সরকার প্রতিবছর বিপুল পরিমাণ রাজস্ব হারাচ্ছে।
তবে সবচেয়ে যেটা জরুরী সেটা হচ্ছে পূর্ণাঙ্গ শিল্প হিসেবে আগর-আতর শিল্পকে স্বীকৃতি প্রদান। যদিও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগর-আতরকে ক্ষুদ্র শিল্প হিসেবে ঘোষণা দিয়েছেন, কিন্তু ব্যবসায়িদের দাবি-রপ্তানীমুখি এই পণ্যকে পূর্ণাঙ্গ শিল্পের মর্যাদা প্রদান করার। তা না হলে ব্যাংকঋণ, বিদ্যুৎ ও গ্যাস সংযোগ প্রাপ্তির ক্ষেত্রে উৎপাদনকারীরা শিল্প-সুবিধা গ্রহন করতে পারবে না। এই খাতকে অগ্রসর করতে হলে প্রথমেই পূর্ণাঙ্গ শিল্পের স্বীকৃতি দিতে হবে। ব্যবাসায়ী এবং চাষিদের দাবির প্রতি একাত্মতা পোষণ করে বলতে চাই, দ্রুততরসময়ে আগর-আতর শিল্পকে পূর্ণাঙ্গ শিল্পের ঘোষণা দেওয়া হোক। তাহলে বর্তমানে যে মাত্রায় সুবাস ছড়াচ্ছে আগর-আতর তা বেড়ে যাবে কয়েকগুন। আর সেই সুবাস যেমন দেশের অর্থনীতির চাকাকে গতিশীল করবে তেমনি বয়ে আনবে সুনাম।
সাজেদ/