প্রকাশিত: ডিসেম্বর ১৭, ২০২২, ১১:০৬ পিএম
পানিকে কেন্দ্র করেই মানবসভ্যতার বিকাশ। যে কারণে বেশিরভাগ প্রাচীন সভ্যতা নদী বা সমূদ্রের তীরে গড়ে উঠেছে। আবার বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগে এই পানিই গিলে খেয়েছে প্রাচীন অনেক শহরকে। পানির নিচে এগুলোর খোঁজ পাওয়া গেলেও অনেক কিছুই অজানা আছে আমাদের।
আরও পড়ুনঃ পুরান ঢাকার ঐতিহ্যবাহী বাকরখানি
ইতিহাসের পাতা থেকে উঠে আসা এসব শহরের রহস্যও কিন্তু বেশ নজরকাড়া। কেউ জানে না ঠিক কেন পানির নিচে ডুবে আছে একটি পুরো শহর। কেউ জানে না কখন হয়েছিলো এমন শহরের উৎপত্তি। শুধু জানে, শহর কেবল আকাশের নিচেই নয়, পানির নীচেও আছে। আজ আমরা এমনি একটি শহরের হারিয়ে যাওয়া গল্প বলবো।
পশ্চিম কিউবার কাছে সমুদ্রের দুই হাজার ফুট নিচে একটি শহর লুকিয়ে আছে। সমুদ্রের তলদেশে পাওয়ায় এই শহরের নাম দেয়া হয়েছে ‘আন্ডার গ্রাউন্ড সিটি অফ কিউবা’। তবে, আশ্চর্যজনক হলো- এত বড় একটা শহর সমুদ্রের তলায় পড়ে রয়েছে এ কথা ২০০১ সালের আগে কেউ জানতো না।
২০০১ সালে কিউবার পশ্চিম প্রান্তে সমুদ্রের তলদেশে জরিপ চালায় এডভান্সড ডিজিটাল কমিউনিকেশন নামে কানাডিয়ান এক কোম্পানি। আর এর নেতৃত্ব দেন ইঞ্জিনিয়ার পলিন ও তার স্বামী পল ওয়েজে ওয়েগ।
জরিপ করার সময় সমুদ্রের তলদেশে অদ্ভুত কিছু স্থাপত্য তাদের চোখে পড়ে। এ বিষয়ে অনুসন্ধান করতে শুরু করলে তাদের চোখে পড়ে সমুদ্রের তলদেশে থাকা বৃহত্তর একটি শহরের। এর পরই বিশ্ববাসীর সামনে সে শহর সম্পর্কে জানানো হয়। সেখানকার প্রাচীন স্থাপনার ছবি ও ভিডিও প্রকাশ করা হয়।
পানির নিচের প্রাচীন স্থাপনার কথা প্রকাশের পর আরো অনুসন্ধান শুরু করে বিভিন্ন বিশেষজ্ঞরা। তাদের অনুসন্ধানে সেখানে খুঁজে পাওয়া যায় পিরামিড বাড়ি-ঘর, বারান্দা, রাস্তাঘাট থেকে শুরু করে আরও নানান উন্নত স্থাপনা।
আরও পড়ুনঃ মাটির নিচের পৃথিবীতে বাস করেন যারা
গবেষণায় জানা গেছে- এটি কোনো ছোটখাটো শহর নয় বরং একটা গোটা সভ্যতা। মাটির আকৃতি দেখে জানা যায়, এটা এক সময় মাটির ওপরের সভ্যতা গড়ে উঠলেও কোনো কারণে সমুদ্রের তলদেশে চলে যায়। এই শহর নিয়ে রয়েছে নানা প্রশ্ন।
বিশেষজ্ঞদের মতে, কিউবার এই সুন্দর প্রযুক্তিভিত্তিক শহরটি সমুদ্রের তলদেশে ডুবে যেতে সময় লেগেছিল প্রায় ৫০ হাজার বছর। অথচ এতো বছর আগে উন্নত প্রযুক্তি বা চিন্তাভাবনা কীভাবে করে ছিল সেই সময়ের মানুষ? অনেকের ধারণা- প্রাচীন সময়ে এরকম এক উন্নত সভ্যতা গড়ে তোলার প্রযুক্তি কারও জানা ছিল না। এই সভ্যতা গড়ে তোলার কৃতিত্ব অনেকেই ভিনগ্রহের প্রাণীদের ই মনে করেন। আবার অনেকে মনে করেন- এটি ইতিহাসের পাতায় উল্লেখিত আটলান্টিস শহর। কারণ প্রাচীন কাব্যে উল্লিখিত আটলান্টিসের সাথে এই শহরের বেশ কিছু মিল খুঁজে পাওয়া গেছে। সবমিলিয়ে নানা প্রশ্ন থাকলেও এখনও মানুষ এই শহর সম্পর্কে পুরোপুরিভাবে জানতে পারেনি।
সাজেদ/