প্রকাশিত: ডিসেম্বর ১৬, ২০২২, ০৪:০১ এএম
বাংলাদেশে নামকরা মসজিদগুলোর মধ্যে ‘পাগলা মসজিদ’ অন্যতম। কিশোরগঞ্জ সদরের নরসুন্দা নদীর তীরে এটি অবস্থিত। মুসলমান ছাড়াও অন্যান্য ধর্মের লোকদের কাছেও জনপ্রিয় এই মসজিদ। মুসলিম-অমুসলিম সবাই এখানে দান করেন। তাদের বিশ্বাস-একনিষ্ঠ মনে এখানে মানত বা দান করলে রোগ-শোক, বালা-মুসিবত দূর হয়।
আরও পড়ুনঃ উন্নয়ন বৈভবে দেশ
জানা যায়, বাংলার বারো ভুঁইয়ার জমিদারদের প্রধান ঈশা খাঁর আমলে দেওয়ান জিল কদর খান ওরফে জিল কদর পাগলা নামক এক ব্যক্তি নদীর তীরে বসে নামাজ পড়তেন। পরবর্তীতে স্থানটিতে মসজিদটি নির্মিত হয়। জিল কদর পাগলার নামানুসারে মসজিদটি ‘পাগলা মসজিদ’ হিসেবে পরিচিতি পায়। অপর জনশ্রুতি অনুসারে, তৎকালীন কিশোরগঞ্জের হয়বতনগর জমিদার পরিবারের ‘পাগলা বিবি’র নামানুসারে মসজিদটির নামকরণ করা হয়।
আরও পড়ুনঃ পৃথিবী ধ্বংসের গুরুত্বপূর্ণ সব আলামত
পাগলা মসজিদের দানবাক্সে দৈনিক প্রায় লাখ টাকা জমা পড়ে। এ ছাড়াও দানবাক্স খুললেই পাওয়া যায়- স্বর্ণালংকার, বৈদেশিক মুদ্রা, অন্যান্য মূল্যবান সামগ্রী।
তিনতলা বিশিষ্ট মসজিদটিতে একটি সুউচ্চ মিনার রয়েছে। মসজিদ কমপ্লেক্সটি ৩ একর ৮৮ শতাংশ জায়গার ওপর প্রতিষ্ঠিত। ১৯৭৯ সালের ১০ মে থেকে ওয়াকফ স্টেট মসজিদটি পরিচালনা করছে।
পদাধিকারবলে পাগলা মসজিদ পরিচালনা কমিটির সভাপতি কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসক। তার তদারকিতেই মসজিদের আর্থিক ব্যবস্থাপনা পরিচালিত হয়। মসজিদের অর্থায়নে এলাকার অন্যান্য প্রাচীন মসজিদের সংস্কার ও উন্নয়ন করা হচ্ছে। এলাকায় দরিদ্র, অসহায়, অসুস্থ ও অসচ্ছল পরিবারের জন্য পাগলা মসজিদ থেকে অনুদান দেয়া হয়। লেখাপড়া, চিকিৎসা, অভাবী নারীর বিয়ের সময় সাহায্য করা এ মসজিদের গণমুখী কার্যক্রমের অংশ।
সবাই মিলে শান্তি-সহাবস্থান, জান্নাতি পরিতৃপ্তির স্থাপত্য নিদর্শন হিসেবে এই মসজিদ টিকে থাকবে অনন্তকাল। এ ক্ষেত্রে ঐতিহ্যের বিজয়কেতন উড়িয়ে তাওহিদের বার্তা শোনায় দৃষ্টিনন্দন স্থাপত্য ও ভাটি বাংলার কিংবদন্তিতুল্য ঐতিহ্য কিশোরগঞ্জের পাগলা মসজিদ।
সাজেদ/