প্রকাশিত: ডিসেম্বর ১৬, ২০২২, ০২:১৩ এএম
উন্নয়ন বৈভবে বদলে যাচ্ছে বাংলাদেশ। কোথায় পৌঁছেনি উন্নয়নের আলো? সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থায় বঙ্গবন্ধু সেতুর পর বাস্তবায়িত হতে যাচ্ছে পদ্মা সেতু। উন্নত হয়েছে সড়ক যোগাযোগ। সকল মৌসুমে রাজধানী থেকে স্থল, জল ও আকাশ পথে স্বল্প সময়ে দেশের যেকোন অঞ্চলে পৌঁছানো যায়।
আরও পড়ুনঃ বিশ্বের সবচেয়ে দামি বিয়ে
ঢাকার কমলাপুর রেল ষ্টেশন থেকে দেশের বিভিন্ন গন্তব্যে প্রতিদিন ছেড়ে যায় শতাধিক ট্রেন। হযরত শাহ্জালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে শতাধিক আন্তর্জাতিক এবং আভ্যন্তরীন ফ্লাইট উঠা-নামা করে। ঢাকার সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনাল থেকে হাজার খানেক নৌযান চলাচল করে। ঢাকা সিটিতে চালু হতে যাচ্ছে দুইটি মেট্রোরেল। বসানো হচ্ছে এলিভেটেড এক্সপ্রেস ওয়ে। আনা হচ্ছে বুলেট ট্রেন। কর্ণফুলী নদীর তলদেশ দিয়ে হচ্ছে টানেল। ২০২৪ সালে চালু হবে রূপপুর পারমানবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র। তৈরী হয়েছে মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্রবন্দর। জেলা উপজেলা এবং গ্রাম পর্যায়ে চলে গেছে ইন্টারনেট। সমৃদ্ধ হয়েছে নাগরিক জীবন।
পদ্মা সেতু পেতে যাচ্ছে বাস্তব রূপ: এই সেতু নির্মাণের প্রারম্ভে দুর্নীতি নিয়ে বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে মতপার্থক্য হয়। এরপর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজস্ব অর্থায়নে সেতু নির্মাণের ঘোষণা দেন। অনেকেই এই ঘোষণাকে অবাস্তব বলে সমালোচনা করেছিলেন। ২০২০ সালের ১০ ডিসেম্বর বেলা ১২টা ২ মিনিটে ১২ ও ১৩ নম্বর পিলারের উপর বসানো হয় সর্ব শেষ স্প্যান। এরপর দৃশ্যমান হয় ছয় হাজার ১৫০ মিটারের পুরো পদ্মা সেতু। ২০২২ সালের ২৫ জুনে এই সেতু ব্যবহারের জন্য উন্মুক্ত করে সরকারীভাবে ঘোষণা করা হয়।
২০১৭ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর বসানো হয় প্রথম স্প্যান। ২০১৮ সালে বসে চারটি, ২০১৯ সালে ১৪টি, ২০২০ সালে ২২টি স্প্যান বসানো হয়। একাজে সময় লেগেছে ৩৮ মাস ১০ দিন।
সড়ক ও যোগাযোগ: বাংলাদেশের অর্থনীতির লাইফলাইনের অপর নাম ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায় চীনা কোম্পানি ১৯২ কিলোমিটার দীর্ঘ ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক চার লেনের কাজ শেষ করেছে। এই সড়কে রান আওয়ার কমেছে ৩/৪ ঘন্টা। আগে ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম যেতে কাঁচপুর, মেঘনা ও গোমতী সেতুতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা যানজটে বসে কষ্ট পোহাতে হতো। জাইকার অর্থায়নে কাঁচপুর, মেঘনা ও গোমতী সেতু নির্মিত হয়েছে। ঢাকা-চট্টগ্রামের মধ্যে বুলেট ট্রেন চালুর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যেই ঢাকা-মাওয়া সড়কের চার লেনের কাজ শেষ হয়েছে।
ঢাকা-ময়মনসিংহ চার লেন সড়ক পাল্টে দিয়েছে ময়মনসিংহ, নেত্রকোনা ও শেরপুরের যোগাযোগ ব্যবস্থা।
পায়রা নদীর ওপর সেতু, ওয়েস্টার্ন বাংলাদেশ ব্রিজ ইমপ্রুভমেন্ট প্রজেন্ট, ক্রস-বর্ডার, রোড নেটওয়ার্ক ইমপ্রুভমেন্ট প্রজেক্ট, সাসেক সংযোগ সড়ক-২, এলেঙ্গা-হাটিকুমরুল-রংপুর মহাসড়ক চার লেনে উন্নীতকরণ ও ঢাকা-খুলনা (এন-৮) মহাসড়কের যাত্রাবাড়ী ইন্টারসেকশন থেকে (ইকুরিয়া-বাবুবাজার লিংক সড়কসহ) মাওয়া পর্যন্ত মহাসড়ক, কক্সবাজার থেকে টেকনাফ পর্যন্ত ৮০ কিলোমিটার মেরিন ড্রাইভ রোডের নির্মাণ পাল্টে দিয়েছে মানুষের জীবনধারা।
২০৪১ সালের মধ্যে দেশকে উন্নত কাতারে নিতে আধুনিক, নিরাপদ এবং পরিবেশবান্ধব পরিবহন ও যোগাযোগ অবকাঠামোর ওপর জোর দিয়েছে সরকার। গত ১০ বছরে যাতায়াত ও পণ্য পরিবহনে স্বস্তি আনতে ২৭৬ টি প্রকল্পের কাজ শেষ হয়েছে। নতুন করে আরো ৩৪১টি প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ এক হাজার ১৪০ কিলোমিটার আঞ্চলিক মহাসড়ক প্রশস্তকরণ ও জেলা মহাসড়ক যথাযথ মানে উন্নীতকরণ গুচ্ছ প্রকল্প বাস্তবায়নাধীন।
হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুতুবখালী পর্যন্ত আট হাজার ৭০৩ কোটি টাকা ব্যয়ে র্যাম্পসহ ৪৬.৭৩ কিলোমিটার দীর্ঘ ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের কাজ চলছে।
রেলপথ: ২০০৯ সালের পর ভারতের ঋণে আনা হয়েছে নতুন ইঞ্জিন ও কোচ। নির্মাণ করা হয়েছে নতুন রেলপথ। রেলপথ উন্নয়নে ২০১৬-২০৪৫ মেয়াদে পাঁচ লাখ ৫৩ হাজার ৬৬২ কোটি টাকা ব্যয়ে ৩০ বছর মেয়াদি মাস্টার প্ল্যান নেওয়া হয়েছে। রেলপথ সম্প্রসারণ, নতুন রেলপথ নির্মাণ ও সংস্কার, রেলপথকে ডুয়াল গেজে রূপান্তরকরণ, নতুন ও বন্ধ রেলস্টেশন চালু করা, নতুন ট্রেন চালু ও ট্রেনের সার্ভিস বৃদ্ধি করা এবং ট্রেনের কোচ সংগ্রহ অব্যাহত রয়েছে। ঢাকা থেকে পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের কাজ দ্রুত এগিয়ে চলছে। আগামী ২০২০-২০২১ অর্থবছরে ৯০০ কিলোমিটার ডুয়াল গেজ ডাবল রেল ট্র্যাক নির্মাণ, এক হাজার ৫৮১ কিলোমিটার নতুন রেল ট্র্যাক নির্মাণ, এক হাজার ৫২৭ কিলোমিটার রেল ট্র্যাক পুনর্বাসন, ৩১টি লোকোমোটিভ সংগ্রহ, ১০০টি যাত্রীবাহী কোচ পুনর্বাসন এবং ২২২টি স্টেশনের সিগন্যালিং ব্যবস্থার মানোন্নয়নের পরিকল্পনা করা হয়েছে। কুমিল্লা বা লাকসাম হয়ে ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম পর্যন্ত ডাবল ট্র্যাক দ্রুতগতির রেললাইন নির্মাণ, ভাঙ্গা জংশন (ফরিদপুর) থেকে বরিশাল হয়ে পায়রা বন্দর পর্যন্ত রেললাইন নির্মাণ, নাভারণ থেকে সাতক্ষীরা পর্যন্ত এবং সাতক্ষীরা থেকে মুন্সীগঞ্জ পর্যন্ত ব্রডগেজ রেললাইন নির্মাণ এবং ঢাকা শহরের চারদিকে বৃত্তাকার রেললাইন নির্মাণ প্রকল্প বাস্তবায়নের উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে।
পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রচেষ্ঠায় ২০১০ সাল থেকে পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের যুগে প্রবেশ করেছে বাংলাদেশ। দেশের সবচেয়ে বড় বাজেটের এই বিদ্যৎ কেন্দ্র নির্মাণে ব্যায় হবে এক লাখ ১২ হাজার কোটি টাকা। ঈশ্বরদীতে স্থাপিত এই বিদ্যৎকেন্দ্রের দৈনিক উৎপাদন ক্ষমতা হবে দুই হাজার ৪০০ মেগাওয়াট। ২০২৪ সালে এই বিদ্যুৎকেন্দ্রটি উৎপাদনে যাবে বলে জানানো হয়েছে।
অন্যান্য উন্নয়ন: পৃথিবীর অন্যান্য উন্নত দেশের নাগরিকদের মতো বাংলাদেশের মানুষ মেট্রো রেলে চড়বে—সেই স্বপ্নও পূরণ হতে চলেছে। হেমায়েতপুর থেকে রাজধানীর আফতাবনগর, ট্রেন। হযরত শাহ্জালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে কমলাপুর রেলস্টেশন পর্যন্ত পাতাল রেলের কাজ চলছে।
কক্সবাজারের সোনাদিয়ায় যখন গভীর সমুদ্রবন্দরটি আলোর মুখ দেখেনি, তখন এর বিকল্প হিসেবে কক্সবাজারের মাতারবাড়ী এবং পটুয়াখালীর পায়রাতে গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে।
বাস ও বিমানের বাইরে রেলপথেও ঢাকা থেকে সরাসরি কক্সবাজার যাওয়ার কাজটি শুরু হয় বর্তমান সরকারের আমলে। নদীর নিচ দিয়ে টানেল বা সুড়ঙ্গপথ চট্টগ্রামের মানুষের দেখার সুযোগ হয়েছে শেখ হাসিনার বর্তমান আমলে। পুরো অবকাঠামো খাতে আমূল পরিবর্তন এসেছে গত এক দশকে।
আরও পড়ুনঃ কুমিল্লার ঐতিহ্যবাহী রসমালাই
২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর নির্বাচনের পর অর্থনীতিতে গতি আনতে মেগা প্রকল্পের পাশাপাশি ভৌত অবকাঠামো উন্নয়নে এসেছে অভূতপূর্ব উন্নতি। তৃতীয় মেয়াদে সরকার গঠনের পর অবকাঠামো উন্নয়নে নেওয়া হচ্ছে মহাপরিকল্পনা। কৃষি, শিক্ষা, বিদ্যুৎ, খাদ্য নিরাপত্তাসহ সার্বিক অর্থনীতিতে এখন সরব বিপ্লব। দেশের মানুষের একটি অংশের অর্ধাহার ও অনাহারকে বিদায় জানিয়ে এখন উন্নয়নের বাংলাদেশ। তলাবিহীন ঝুড়ির পরিবর্তে বিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেল বাংলাদেশ।
অর্থনীতি বিশ্লেষকরা বলছেন, দেশকে উন্নতির দ্বারপ্রান্তে নিতে একের পর এক মহাপরিকল্পনা গ্রহণ করছেন শেখ হাসিনা। ভৌত অবকাঠামো উন্নয়নে নেওয়া হয়েছে মেগা প্রকল্প। এসব প্রকল্পের কাজ শেষ হলে ত্বরান্বিত হবে দেশের অর্থনীতি। কর্মসংস্থানের পাশাপাশি বাড়বে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিও। অর্থনৈতিক উন্নয়নে যোগাযোগ ও অবকাঠামো উন্নয়নে জোর দিয়েছেন শেখ হাসিনা। মাতারবাড়ী বিদ্যুৎকেন্দ্রের কাজও চলছে পুরোদমে।
একজন অর্থনীতি বিশ্লেষক সিটি নিউজকে বলেন, বর্তমান সরকার বড় বড় প্রকল্প নেওয়ার ফলে বিদ্যুতে ব্যাপক উন্নতি হয়েছে। এখন চাহিদার প্রায় শতভাগ বিদ্যুৎ উৎপাদন সম্ভব হচ্ছে। মেট্রো রেলের কাজ চলছে। এসব প্রকল্প শেষ হলে অর্থনীতিতে বড় প্রভাব পড়বে।’
বিদ্যুৎ : ২০৪১ সালের মধ্যে ৬০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের মহাপরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। বর্তমানে ক্যাপটিভ ও নবায়নযোগ্য বিদ্যুৎসহ উৎপাদন ক্ষমতা ২৪ হাজার মেগাওয়াট। দেশের ৯৬ শতাংশ মানুষ বিদ্যুৎ সুবিধার আওতায় আনা হয়েছে। মাথাপিছু বিদ্যুৎ উৎপাদন ৫১০ কিলোওয়াট-ঘণ্টা। বর্তমানে ১৬ হাজার ৮৭৫ মেগাওয়াট ক্ষমতার ৪৮টি বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণাধীন। দুই হাজার ৭৮৫ মেগাওয়াট ক্ষমতার ১২টি বিদ্যুৎকেন্দ্রের চুক্তিস্বাক্ষর প্রক্রিয়াধীন। তা ছাড়া ৬৫০ মেগাওয়াট ক্ষমতার ছয়টি বিদ্যুৎকেন্দ্রের দরপত্র প্রক্রিয়াধীন। অদূর ভবিষ্যতে আরো ১৯ হাজার মেগাওয়াট ক্ষমতার ১৬টি বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার।
পায়রা, রামপাল, মাতারবাড়ী এলাকাকে পাওয়ার হাব হিসেবে চিহ্নিত করেছে সরকার। রামপালে এক হাজার ৩২০ মেগাওয়াট, মাতারবাড়ীতে এক হাজার ২০০ মেগাওয়াট, পায়রায় এক হাজার ৩২০ মেগাওয়াট প্রকল্পের কাজ এগিয়ে চলছে। মহেশখালীতে কয়লাভিত্তিক ১০ হাজার মেগাওয়াট ক্ষমতার বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের পরিকল্পনা করেছে সরকার। ভারত থেকে এক হাজার ১৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানি করা হচ্ছে। নেপাল থেকে ৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আনার বিষয়টি চূড়ান্ত করা হয়েছে। নবায়নযোগ্য জ্বালানিভিত্তিক ৬২৮ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদিত হচ্ছে। আরো এক হাজার ২২১ মেগাওয়াট ক্ষমতার বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণাধীন। প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছাদে সৌর প্যানেল স্থাপনের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। ৫৮ লাখ সোলার হোম সিস্টেম স্থাপন করা হয়েছে। বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন ও গ্রিড সাবস্টেশনের ক্ষমতা বাড়ানো, গ্রাহকসংখ্যা বৃদ্ধি, বিতরণ লাইন বৃদ্ধি করে সামগ্রিক সিস্টেম লস কমানো হয়েছে। কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের দ্রুত কাজ এগিয়ে চলছে। গ্যাস সংকট মোকাবেলায় এলএনজি টার্মিনাল স্থাপনের ব্যবস্থাও করা হয়েছে।
গ্যাস উৎপাদন: স্থলভাগ ও সমুদ্র এলাকায় স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি গ্যাস অনুসন্ধানের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। বর্তমানে গ্যাস উৎপাদন প্রায় দুই হাজার ৫২২ মিলিয়ন ঘটফুট। ২০২১ সালের মধ্যে বাপেক্স ১০৮টি কূপ খননের পরিকল্পনার অংশ হিসেবে ২৯টি কূপ খনন সম্পন্ন করেছে। গ্যাসের অপচয় রোধ ও জ্বালানি দক্ষতা বাড়াতে ঢাকা মহানগরী ও চট্টগ্রাম এলাকায় দুই লাখ ৬০ হাজার পি-পেইড গ্যাস মিটার স্থাপন করা হয়েছে।
নৌপরিবহন : নদীমাতৃক দেশ হিসেবে অভ্যন্তরীণ যোগাযোগের ক্ষেত্রে নৌপথকে গুরুত্ব দিয়ে আওয়ামী লীগ সরকার নানামুখী উদ্যোগ নিয়েছে। নৌ দুর্ঘটনা হ্রাস ও নৌনিরাপত্তা বাড়ানোর পাশাপাশি নৌপথের নাব্যতা বৃদ্ধি, নৌবন্দরগুলোর উন্নয়ন ও সমন্বিত ড্রেজিং কার্যক্রম হাতে নিয়েছে সরকার। ২৪ হাজার কিলোমিটার নৌপথের মধ্যে ২০ হাজার ৪০০ কিলোমিটার হারিয়ে গেছে। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ১১ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে ৫৩টি নৌপথ খননের কাজ চলছে। এক হাজার ২৭০ কিলোমিটার উদ্ধার ও প্রায় তিন হাজার একর জমি পুনরুদ্ধার করা হয়েছে। নদীর তীরে ভূমি দখলমুক্ত রাখতে বুড়িগঙ্গা, তুরাগ ও শীতলক্ষ্যা নদীর তীরে ব্যাংক প্রকেটশনসহ ২০ কিলোমিটার ওয়াকওয়ে নির্মাণ করা হয়েছে। আরো ৫০ কিলোমিটার ওয়াকওয়ে নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে। অভ্যন্তরীণ নৌপথের ৫৩টি রুটে ক্যাপিটাল ড্রেজিং ও অন্যান্য নাব্যতা উন্নয়ন কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে। দেশের সমুদ্রবন্দরগুলোর পণ্য হ্যান্ডলিং সক্ষমতা বৃদ্ধি ও মান আন্তর্জাতিক পর্যায়ে উন্নীতকরণের লক্ষ্যে নতুন কনটেইনার টার্মিনাল, ওভারফ্লো কনটেইনার ইয়ার্ড, বে-টার্মিনাল, বাল্ক টার্মিনাল নির্মাণ ও জলযান সংগ্রহের পরিকল্পনা নিয়েছে সরকার।
আকাশপথের উন্নয়ন: দেশের আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরগুলোর যাত্রী ও কার্গো হ্যান্ডলিং সক্ষমতার মান ও পরিধি বৃদ্ধির অংশ হিসেবে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তৃতীয় টার্মিনাল নির্মাণকাজ চলমান। কক্সবাজার ও সৈয়দপুর বিমানবন্দরকে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে উন্নীতকরণের কাজ দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলছে।
বাগেরহাট জেলায় খানজাহান আলী বিমানবন্দর নির্মাণসহ যশোর, সৈয়দপুর ও বরিশাল বিমানবন্দর এবং রাজশাহীর শাহ মখদুম বিমানবন্দরের সম্প্রসারণ ও নবরূপায়ণের পরিকল্পনা নিয়েছে সরকার।
সাজেদ/