প্রকাশিত: ডিসেম্বর ১৬, ২০২২, ১২:১৭ এএম
রাজকন্যে ও রাজপুত্রের বিয়ে অনেকদিন মনে রাখবে গোটা দুনিয়া। ভারতের ইস্পাতশিল্পের ধনকুবের লক্ষ্মী মিত্তালের মেয়ে বানিশা মিত্তাল ও অমিত ভাটিয়ার বিয়ের কথা বলছি। এ বিয়েটা বিশ্বের সবচেয়ে দামি বিয়ের তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে।
ধুমধাম করে বিয়ে করার স্বপ্ন ছিল ভারতের ইস্পাত সম্রাট লক্ষী মিত্তালের মেয়ে বানিশার। মেয়েকে কথাও দিয়েছিলেন বাবা। তার মেয়েকে দেয়া সেই কথা অক্ষরে অক্ষরে পালন করেছিলেন ভারতের ইস্পাত সম্রাট লক্ষী মিত্তাল। এ বিয়েতে খরচ করে হয়েছিল ৬ কোটি ৬০ লাখ ডলার বা ৫০০ কোটি ভারতীয় রুপির বেশি।
আরও পড়ুনঃ ‘দেশের মানুষের ভাগ্যের উন্নয়ন হয়, যখন আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকে’
২০০৪ সালে মিত্তালের একমাত্র মেয়ে বানিশার বিয়ে হয় প্যারিসে। ঐতিহাসিক ভার্সেই প্রাসাদকে মিত্তাল পরিণত করেছিলেন এক রাজকীয় বিয়ে বাড়িতে! ২৩ বছর বয়সী রাজকন্যার বিয়ে দিয়েছিলেন ব্যাংকার অমিত ভাটিয়ার সঙ্গে। অমিত সোর্ডফিশ ইনভেস্টমেন্টের মালিক। বিয়ের পোশাক বানিয়েছিলেন দুনিয়ার সেরা ডিজাইনাররা। কোরিওগ্রাফার ফারাহ খান শিখিয়েছিলেন নাচের ঝটকা। লুভর মিউজিয়ামের উল্টোদিকে বসেছিল সংগীত-এর আসর। জাভেদ আখতার লিখেছিলেন নাটক। যাতে অভিনয় করেছিল গোটা মিত্তাল পরিবার।
পরের দিন ভার্সেই প্রাসাদে হয় এনগেজমেন্ট। উত্তাল ড্যান্সিংয়ের সঙ্গে ছিল ফরাসি অপেরা। অতিথিরা আপ্যায়িত হয়েছিলেন লা গ্রন্ড হোটেলে। মেহেদি অনুষ্ঠানের জন্য লো বিস্টলকে মনোরম উদ্যানে পরিণত করা হয়েছিল।
বানিশাকে মেহেদি পরাতে ভারত থেকে উড়ে গিয়েছিলেন শিল্পীরা। উড়ে গিয়েছিলেন শাহরুখ খান‚ রানি মুখার্জি‚ জুহি চাওলা‚ সাইফ আলি খান। কয়েক লাখ রুপি খরচ করে অভিনীত হয়েছিল হাস্যকৌতুক নাটক।
ঐতিহাসিক ভ্য লো ভক্নতে এস্টেটে বসেছিল বিয়ের আসর। ভারত থেকে শিল্পীরা গিয়ে বানিয়েছিলেন উদ্যানের সরোবরে নকল পদ্ম। সেই প্রস্ফুটিত পদ্মে বসে বিয়ে সম্পন্ন করেছিলেন বানিশা-অমিত।
আরও পড়ুনঃ পৃথিবী ধ্বংসের গুরুত্বপূর্ণ সব আলামত
মণ্ডপ সাজাতে হল্যান্ড থেকে গিয়েছিলেন ফ্লোরিস্টরা। অতিথিদের রাজকীয়ভাবে রাখার জন্য তাতে খরচ হয়েছিল কয়েক কোটি রুপি। বিয়ের রাতের আকর্ষণ ছিল ঐশ্বরিয়া রাইয়ের নাচ।
তবে বিয়ের মেনু ছিল সম্পূর্ণ নিরামিষ। কলকাতা থেকে শেফ মুন্না মহারাজ গিয়ে রান্নার দায়িত্ব নিয়েছিলেন। ভার্সেই প্রাসাদকে চতুর্দশ লুইয়ের রাজত্বকালের থেকে কোনো অংশে কম করেননি কনের বাবা লক্ষ্মী মিত্তাল।
কিন্তু কপাল পুড়লো তার মেয়ের। ২০০৫ সালে হওয়া বিশ্বের এই মহার্ঘ্যতম স্বপ্নসম বিয়ে দীর্ঘস্থায়ী হলো না। এক দশক পূর্ণ হওয়ার আগেই তছনছ হয়ে গেল সেই সংসার। বিবাহ বিচ্ছেদ মামলা গড়ালো আদালতে। শেষ পর্যন্ত ২০১৪ সালে আলাদা হয়ে যান বানিশা-অমিত।
উল্লেখ্য, লক্ষ্মীনারায়ণ মিত্তাল একজন ভারতীয় ইস্পাত ব্যবসায়ী। তিনি বিশ্বের বৃহত্তম ইস্পাত প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান আর্সেলরমিত্তালের চেয়ারম্যান এবং প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা। মিত্তাল ইউরোপের প্রথম এবং বিশ্বের পঞ্চম শীর্ষ ধনী এবং তার ব্যক্তিগত সম্পদের মূল্যমান ২৮.৭ বিলিয়ন ইউএস ডলার বা ১৯.৩ বিলিয়ন ইউরো।
সাজেদ/