• ঢাকা বৃহস্পতিবার
    ২১ নভেম্বর, ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

বরিশালের সুখ্যাতি গুঠিয়ার সন্দেশ

প্রকাশিত: ডিসেম্বর ১৪, ২০২২, ০১:১৪ এএম

বরিশালের সুখ্যাতি গুঠিয়ার সন্দেশ

ফিচার ডেস্ক

বরিশালের গুঠিয়ার সুখ্যাতি অনেক পুরোনো। আর তা সুস্বাদু এক সন্দেশের জন্য। স্বাদে অনন্য এ সন্দেশে লেগে থাকে গরুর দুধের টাটকা ঘ্রাণ। এই সন্দেশ গুঠিয়ার প্রায় অর্ধ শতাব্দীর ঐতিহ্য।

বরিশাল শহর থেকে ২২ কিলোমিটার দূরের বানারীপাড়া উপজেলার একটি ইউনিয়ন গুঠিয়া। এখানেই তৈরি হয় দেশজোড়া খ্যাতি অর্জনকারী সুস্বাদু সন্দেশ। গুঠিয়ার সন্দেশকে এখন বরিশালের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর বলা যায়। স্বাদে ও গুণে অনন্য এ সন্দেশে লেগে থাকে গরুর দুধের টাটকা ঘ্রাণ।

আরও পড়ুনঃ নাটোরের বিখ্যাত কাঁচাগোল্লা

গুঠিয়ার সন্দেশ ১৯৬২ সালে প্রথম প্রস্তুত করেন সতীশ চন্দ্র দাশ নামক একজন ময়রা। তিনি পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া জেলা হতে সন্দেশ প্রস্তুতের কৌশল শিখে আসেন। পরে দেশে ফিরে তিনি সেই কৌশলের সঙ্গে নিজের অভিজ্ঞতার সমন্বয়ে এই সন্দেশ প্রস্তুত করেন যা স্বাদে ও গুণে ভালো হওয়ায় অল্প সময়েই খ্যাতি অর্জন করে। গুঠিয়া নামক স্থানে উৎপত্তি বলে এটি গুঠিয়ার সন্দেশ নামেই পরিচিত হয়ে উঠে। গুঠিয়া সন্দেশের প্রধান বিক্রেতা বাংলাদেশ মিষ্টান্ন ভাণ্ডার। বর্তমানে গুঠিয়া ছাড়াও বরিশাল নগরীর বেশ কয়েকটি শো’রুমে এই সন্দেশ পাওয়া যায়।

গুঠিয়া সন্দেশ টাটকা থাকলে তা থেকে টাটকা গরুর দুধের সুঘ্রাণ আসবে। অত্যন্ত মুখরোচক এই সন্দেশে খাঁটি ছানা ও চিনি ছাড়া অন্য কোনো প্রকার উপকরণ থাকে না। গরুর দুধ ছাড়া অন্য কোনো দুধ দিয়ে গুঠিয়ার সন্দেশ তৈরি করা হয় না।

আরও পড়ুনঃ সুস্বাদু খাবার সিঁদুল এবং প্যালকা

গুঠিয়া সন্দেশের রেসিপি অত্যন্ত সাধারণ। পরিমাণ মত ‘আঁচ ও পাক’ই ভালো সন্দেশ তৈরির প্রধান রেসিপি। ভালো সন্দেশ তৈরি করতে খাঁটি দুধের প্রয়োজন। গুঠিয়ার সন্দেশ তৈরিতে প্রধানত গরুর দুধই ব্যবহৃত হয়। সাধারণত ৬-৭ কেজি দুধে ১ কেজি ছানা তৈরি করা হয়। এরপর দুধ থেকে ছানা কাটার পর পরই ছানার সাথে সমপরিমাণ চিনি ও ময়দা মিশিয়ে একটি বড় লোহার কড়াইতে অল্প জাল দিতে হয়। তারপর ২০ থেকে ৩০ মিনিট জ্বালে পাকিয়ে অল্প আঁচে পাঁচ মিনিট রাখলেই গুঠিয়া সন্দেশের কাঁচামাল তৈরি হয়। পাকের পর তা মিহি করা হয়। পাক কম-বেশির ওপরেই এ সন্দেশের স্বাদ ও গুণগত মান নির্ভর করে। এরপর এই ছানার মিশ্রণ পরিমাণমতো নিয়ে কাঠের ওপরে রেখে সন্দেশের আকার দেওয়া হয়। সৌন্দর্যের জন্য সন্দেশের উপর কিসমিস দেয়া হয়। সন্দেশ সাধারণত নরম হয়। কিন্তু গুঠিয়ার সন্দেশ কড়াপাকের। এ জন্য এ সন্দেশ হয় কিছুটা শক্ত ও শুষ্ক।

ভোজন বিলাসীদের কাছে গুঠিয়ার সন্দেশ লোভনীয় একটি নাম। এ খাবার দেখলে জিভে পানি আসে না এমন ভোজন বিলাসীদের সংখ্যা অতি নগন্য। মানুষ বরিশালে বেড়াতে বা কাজে এলে ফেরার সময় গুঠিয়ার সন্দেশ নিয়ে যায়। আর ধীরে ধীরে এভাবেই গুঠিয়ার সন্দেশের এর সুনাম ছড়িয়ে পড়েছে দেশের সর্বত্র।

 

 সাজেদ/

আর্কাইভ