প্রকাশিত: ডিসেম্বর ১, ২০২২, ১২:০০ এএম
বগুড়ার ঐতিহ্যবাহীদইস্বাদে ও গুণে অতুলনীয় হওয়ায় দেশ ও দেশের বাইরে খুবই জনপ্রিয়। এর খ্যাতি মূলত ব্রিটিশ আমল থেকে সর্বত্র ছড়িয়ে পরে। ষাটের দশকের প্রথম ভাগে বৃটেনের রানী এলিজাবেথ থেকে শুরু করে মার্কিন মুল্লুকেও গিয়েছে বগুড়ার দই।
বগুড়ার দইয়ের ইতিহাস শুরু হয় ১৯৪৭ সালে দেশভাগের পরপরই বগুড়ারই শেরপুর উপজেলা থেকে।
স্থানীয়দের মতে সনাতন ঘোষ সম্প্রদায় দই তৈরি করে বগুড়াকে দেশের সর্বত্র পরিচিত করে তুলেছিল। তবে সেই ঘোষদের হাতে এখন আর দইয়ের বাজার নেই। এটি চলে গেছে মুসলিম সম্প্রদায়সহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ীদের অধীন।
জানা যায় বগুড়ার শেরপুরে প্রথম দই তৈরি হয় প্রায় আড়াইশ’ বছর আগে। তৎকালীন বগুড়ার শেরপুরের ঘোষ পরিবারের ঘেটু ঘোষ প্রথম দই তৈরি আরম্ভ করেন। টক দই তৈরি থেকে বংশ পরম্পরায় তা চিনিপাতা বা মিষ্টি দইয়ে রূপান্তরিত হয়। আর কালের বিবর্তনে স্বাদের বৈপরীত্যের কারণে দইয়ের বহুমুখী ব্যবহার শুরু হয়। টক দই দিয়ে মেজবানের রান্না ও ঘোল তৈরি হয়। অতিথি আপ্যায়নে চলে মিষ্টি দই।
দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের প্রসিদ্ধ সব খাবারের মতো বগুড়ার দই যেকোনো প্রান্তে এক নামে যে কেউ চেনেন। সারাদেশে এর সুনাম আজ অবধি রয়েছে।
বগুড়ার দই এখন ঢাকায় পাওয়া যায়। তবে স্বাদের মধ্যে বিস্তর ফারাক আছে। ঐতিহ্যবাহী বগুড়ার দইয়ের প্রসার বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এত বেশি ব্র্যান্ড চলে এসেছে যে বাইরের কেউ সহজে আসল বগুড়ার দই চিনতে ভুল করেন, ফলে অনেকেরই বগুড়ার দই নিয়ে ভুল ধারণা চলে আসে।
বগুড়ার মিষ্টি ব্যবসায়ী দেবাশীষ ঘোষ জানান, বগুড়ার দই নকলের ভিড়ে হারিয়ে যাচ্ছে। এখন বহু ব্র্যান্ড আছে এগুলোর কোনটা আসল আর কোনটা নকল তা বোঝা দায়।
উল্লেখযোগ্য কয়েকটি আসল দইয়ের প্রতিষ্ঠান হলো হোটেল আকবরিয়ার দই, হোটেলসাউদিয়ারদই,হোটেল শ্যামলীর দই, সেলিম হোটেলের দই, রফাতের দই, মহররম আলীর দই, বগুড়া দইঘরের দই, গৌরিগোপাল দধি ভাণ্ডারের দই-এগুলোই বেশ নামকরা।
তারপরও সংশয়ে থাকতে হয় এটা আসল দই তো? দেশের প্রসিদ্ধ সব মিষ্টি দ্রব্যাদির জায়গায় এখন নকলের হাট বসেছে। এর মধ্য দিয়েই টিকে আছে দেশময় প্রসিদ্ধ বগুড়ার দই।
সাজেদ/