• ঢাকা শুক্রবার
    ২২ নভেম্বর, ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

যেখানে স্বপ্নকে ছুঁয়ে যায়

প্রকাশিত: অক্টোবর ৩০, ২০২২, ০৪:৩৪ পিএম

যেখানে স্বপ্নকে ছুঁয়ে যায়

নাজমা পারুল

একেবারে স্বপ্নকে ছুঁয়ে ছুঁয়ে দেখা! পাহাড়ী এলাকা অথচ আধুনা ধারায় সমৃদ্ধ! পাহাড় কেটে কেটে রেল, সড়কের আঁকা-বাঁকা পথ। শান্ত নদীর প্রবাহ চতুর্দিকে। তার উপর দিয়ে দৃষ্টি নন্দন city cat ferry-র চলাচল। পাখির অজস্র কলতান। গাছে গাছে বুনো ফুলের সৌন্দর্য ও সুবাসের মাদকতা। এক নিমিষেই হারিয়ে যাওয়া এখানে। সব মিলিয়ে স্বপ্নের মায়াবী জগৎ। মা-মাতৃভূমির উষ্ম আলিঙ্গন ছাড়া এখানে হারিয়ে যাওয়ার কিছু নেই। ভীষণ শান্ত অথচ গতিশীল জীবনপ্রবাহ এখানে। কঠিন শিলার মতো মাটি, কোথাও খুব উঁচু কোথাও নিচু। এমন rock solid মাটিতেও বাহারি ফুলের পরিস্ফুটন মনকে নাচিয়ে নেয়। উহ্ অসহ্য রকম সুন্দর প্রকৃতি এখানে। গায়ে কাঁটা লাগা অনুভূতি ঘুরে-ফিরে খুঁজে ফেরে শেষ স্বাদ। আহা এর বুঝি শেষ নেই। আকুল অনুভূতিকে যদি কাব্যে প্রকাশ করি তবে বলতেই হয়, চাই না, চাই না মরিতে এই সুন্দর ভূবনে। এখানেই হারিয়ে যাই আনন্দ আর আহ্লাদে। কী অপরূপ সৌন্দর্যের গাঁথুনি এখানে। মন বলে হারিয়ে যাই, ফুরিয়ে যাই।

এমন অসাধারণ বৈচিত্র্য কখনো ধরা দেয়নি জীবনে। শীতের শেষ সময় তবুও এখানে শীতের আমেজ রয়েছে। মাখামাখি প্রকৃতির সঙ্গে মানুষের। সেপ্টেম্বরে এ দেশে প্রবেশ করেই নানা রকমের ফুলের বৈচিত্র্য দেখে আমি মুগ্ধ হয়ে যাই। সেই সঙ্গে পাখির প্রকারভেদ! খুবই মনুষ্য বান্ধব পাখিগুলো। কাছে এসে কথা বলতে চায়।

অস্ট্রেলিয়াতে মোট ৬টি অঙ্গরাজ্য আছে। এই ৬টি অঙ্গরাজ্যের মধ্যে দ্বিতীয় বৃহত্তম রাজ্য হচ্ছে কুইন্সল্যান্ড। কুইন্সল্যান্ডের রাজধানীর নাম ব্রিসবেন!

ব্রিসবেন, অস্ট্রেলিয়ার এই শহরকে আমি যেন দেখতে পাচ্ছি রঙ্গিন চশমা চোখে দিয়ে! অসংখ্য নতুন জাতের ফুল যা কখনো হয়নি দেখা। আমাকে নাড়া দিয়ে যায় সেই প্রথম দিন থেকেই! কিছু ফুলের ঘ্রাণের মাদকতা আমাকে বেহুশ করে দিয়েছে। এমন মাদকতায় সম্বিত ফিরে পাই ক্ষণিকের মধ্যেই।

এখানে আছে প্রকৃতির উজাড় করা ভালোবাসার আলিঙ্গন! শহুরে অথচ নিস্তব্ধ জীবনপ্রবাহ। যানবাহনের হর্ন বা শব্দ নেই কোথাও! কোথাও যেন নেই কেউ- শুধু আমি একাকী খুঁজে যাই স্রষ্টার অকৃপণ দানের রহস্য। এর কোনো শেষ নেই আসলে! অনেক বল্লেও হবে না শেষ! সভ্যতার সাক্ষী সুদৃশ্য দালানগুলো পাহাড়ী উঁচু-নিচু অসমতল ভূমিকে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে মাথা উঁচু আছে। দেখে মনে হয় যেন মানুষেরই জয়গান গেয়ে যাচ্ছে ইট-পাথরের প্রাণীগুলো।

একবার এখানে এলে মহুয়ার নেশা হয়ে যায় থাকবার। এখানে যেন আকাশ-মাটি মিতালি করেছে। পাহাড়ী পথে ছড়িয়ে দিয়েছে ভালোবাসার ঘ্রাণ। এই গভীর সিগ্ধতা সুন্দর কেটে ট্রেন যাবে নতুন কোনো শহরে। বলতেই হয়, সেলুকাস বিচিত্র এই দেশ।

 

এআরআই

আর্কাইভ