প্রকাশিত: জানুয়ারি ২, ২০২২, ০১:৫৮ এএম
২০২১
মধ্য রাত দেখেছি। ঢাকা
এবং বাংলাদেশের আনন্দ দেখেছি। হাজারো আতশবাজির আলো ছড়িয়ে আকাশ
করেছিল আলোকিত। সব মানুষের কষ্ট
আনন্দ হয়ে ঝরেছে। ফানুস
হয়ে উড়ে গেছে আলো
অসীম আকাশে। ঘণ্টাব্যাপী শব্দতরঙ্গ এক বাংলাদেশ সবার
আনন্দে ২০২১ তুলে দিয়েছিল
২০২২-এর কাছে। কি
বর্ণাঢ্য আয়োজন। ভালোবাসা এবং উচ্ছ্বাস যেন
বাঙালিদের হাতে তুলে দিয়েছিল
বিশ্বজয়ের ট্রফি। করোনার নতুন নতুন ধরণ
সে উচ্ছ্বাস থামাতে পারেনি।
আমরা
বলেছি, আশা আর স্বপ্ন
পূরণের বছর। সেটিই প্রত্যক্ষ
করেছি গতকাল। তবে, ফানুসের আগুনে
কিছু ঘটনা ঘটেছে বটে।
সেটি বড় আয়োজনের উচ্ছ্বাসে
বড় ভুল বলি না।
রাস্তায় চলাচলে নিষেধাজ্ঞা ছিল, মানুষ হাঁটেনি।
বার-রেস্তোরাঁ বন্ধ ছিল, কেউ
খেতে জেদ করেনি। দেশের
আইনশৃঙ্খলা রক্ষা এবং কল্যাণে সবাই
সেটিকে ইতিবাচক মেনে নিয়েছে। ঘরে
বসে আনন্দ বিতরণের কৌশল উদ্ভাবন করেছে।
মধ্য রাতে আমরা তাই
দেখেছি। দেশের কল্যাণে পশ্চিমা দুনিয়ার সংস্কৃতি ২০২১-এর মধ্য
রাতে দেখিনি। আমরা গর্ববোধ করি,
আমাদের এই সাফল্যময় ভাবনার।
তাই, করোনার কষ্টগুলোকে উড়িয়ে দিয়েছি ফানুস আর আতশবাজিতে। রাতে
আনন্দগুলো ঝরে পড়েছে আশার
বার্তা নিয়ে। ৩১ ডিসেম্বর মধ্য
রাত প্রমাণ করেছে, এ দেশের মানুষ
দেশকে ভালোবাসে, আনন্দ করে এবং অন্যদের
আনন্দ করতে শেখায়। যেমনটি
দেখেছি ১৯৭১ সালের ১৬
ডিসেম্বর বিজয়ের মাসে। বিজয়ের দিনে।
২০২২
কেমন হবে এ প্রসঙ্গে,
ব্রিটিশ দৈনিক দ্য গার্ডিয়ান লিখেছে,
২০২২ হতে যাচ্ছে বিপদের
সঙ্গে বসবাসের একটি বছর। ব্রিটিশ
সাময়িকী ইকোনমিস্টের পূর্বাভাস- নতুন বছরে করোনায়
সারা বিশ্বে আরও ২৫ লাখ
মানুষের মৃত্যু হতে পারে। তবে
ওমিক্রনের দাপট এতটা থাকবে
না। বিবিসি’র খবরে জানা
গেছে, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালক ড. টেড্রোস আধনম
ঘেব্রেইয়েসাস বলেছেন, ‘নতুন বছর অর্থাৎ
২০২২ সালে করোনাভাইরাস মহামারিকে
পরাজিত করা যাবে।’ তিনি এই ভাইরাসের
বিস্তার রোধে একযোগে কাজ
করারও আহবান জানান। অনেকেই এমন মন্তব্য করেছেন।
আমরাও আশা রাখি, এই
চলমান ভাইরাস রোধে সক্ষম হওয়ার।
তবে, স্বাস্থ্যবিধি মেনে নেয়াটা হবে
আমাদের প্রত্যহিক কাজের একটি জরুরি বিষয়।
বাংলাদেশ
এখন একটি মধ্যম আয়ের
দেশে পরিণত হয়েছে। দেশের থলিতে বহু আন্তর্জাতিক পুরস্কার,
সুনাম ও সুফল জমা
হয়েছে। দিন দিন সাফল্য
আসছে। বাংলাদেশের উন্নয়ন এবং অগ্রগতির প্রশংসা
করছে বিশ্ব। ২০২২-এ সেই
সাফল্যকে সঙ্গে নিয়ে নতুন এক
পৃথিবীতে প্রবেশ করতে চাই। এই
দেশে এখন হায়নারা নেই।
ব্রিটিশরা নেই। ফলে, নিজের
দেশকে গড়ে তোলবার চেষ্টা
থাকবে আমাদের। ২০২২ শপথের সিঁড়িতে
সর্বস্তরের মানুষের ভাবনা হবে হিংসা উপড়ে
ফেলার। কাটাকাটি, সন্ত্রাস, ক্রোধ নয়- ভালোবাসা। পারিবারিক
বন্ধন। ধর্ষণ নয়- নিজকে আত্মহনন
নয়, ভাঙনের জোগালি নয়- দেশের জন্য
হতে চাই, বীরযোদ্ধা। সামনে
থাকবে আমাদের স্বাধীনতা। আমরা ভাই ভাই,
বাংলাদেশ আমাদের। ২০২২ সুন্দর দেশ
বানাতে স্বপ্ন দেখাবে- এটাই নতুন বছরের
প্রথম অঙ্গীকার। আজ সবাইকে নিয়ে
একসঙ্গে বলি, ‘নতুন সূর্য আলো
দাও, আলো দাও’।
নূর/ডা