প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২১, ২০২১, ০৬:৫০ পিএম
দক্ষিণ আফ্রিকার কেপ টাইনের কাছাকাছি একটি সৈকতে ৬৩টি বিলুপ্তপ্রায় আফ্রিকান
পেঙ্গুইনের মৃতদেহ পাওয়া গেছে। এসব পেঙ্গুইনের মৌমাছির দংশনেই মৃত্যু হয়েছে বলে দক্ষিণ আফ্রিকার পাখি সংরক্ষণবাদীরা বলছেন। সংরক্ষিত এসব পেঙ্গুইনের মৃতদেহে অন্য
কোনো আঘাতের চিহ্ন নেই।
ন্যাশনাল পার্কের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, পেঙ্গুইনের ওপর
মৌমাছির আক্রমণের বিষয়ে এবারই প্রথম জানা গেল। এই এলাকায় প্রতি বছর অন্তত ৬০
হাজার পর্যটকের ওপর হামলা করে থাকে এসব মৌমাছি।
দক্ষিণ আফ্রিকার ন্যাশনাল পার্কস এজেন্সির মেরিন বায়োলজিস্ট ড. অ্যালিসন কোক
বলেছেন, 'সাধারণত পেঙ্গুইন আর মৌমাছি সহাবস্থান করে
থাকে। বিরক্ত না করলে মৌমাছি সাধারণত কাউকে কামড় দেয় না- আমরা ধারণা করছি যে, হয়তো এই এলাকায় তাদের কোনো কলোনি বা মৌচাকে আঘাতের ঘটনা ঘটেছে। ফলে ঝাঁক বেঁধে
মৌমাছিগুলো বেরিয়ে গেছে এবং আগ্রাসী হয়ে কামড়াতে শুরু করেছে।’
তিনি আরও বলেন, 'দুঃখজনক হলো, একদল পেঙ্গুইন
তাদের পথে পড়ে গেছে।’
ময়নাতদন্তে দেখা গেছে যে,
এসব পেঙ্গুইনের চোখের
আশেপাশে অনেক কামড়ের দাগ রয়েছে এবং ঘটনাস্থলে মৃত মৌমাছিও পাওয়া গেছে।
দক্ষিণ আফ্রিকার উপকূলীয় পাখি সংরক্ষণ ফাউন্ডেশনের পশু চিকিৎসক ডেভিড রবার্টস
বলেন, 'এটা আসলে বিরল একটি ঘটনা। তবে এরকম ঘটনা আরও
ঘটবে বলে আমরা মনে করি না, এটা আসলে অপ্রত্যাশিত একটা ব্যাপার।’
ছোট আকারের জন্য আলাদা পরিচিতি রয়েছে আফ্রিকান পেঙ্গুইনের। দক্ষিণ আফ্রিকা
এবং নামিবিয়ার উপকূল ও দ্বীপে এগুলো বাস করে। যদিও এরকম কিছু কিছু পেঙ্গুইন
উত্তরের দিকে গ্যাবন পর্যন্তও দেখা গেছে।
ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর কনজারভেশন অফ ন্যাচার (আইইউসিএন) জানিয়েছে, এই প্রজাতির পাখির সংখ্যা খুব দ্রুত কমছে। বাণিজ্যিকভাবে মাছ ধরা আর পরিবেশগত
অস্থিতিশীলতা এর জন্য দায়ী বলে সংস্থাটি জানিয়েছে।
'অন্তরীপের মৌমাছি' নামে পরিচিত এই মৌমাছিগুলোও এখানকার ইকোসিস্টেম বা বাস্তুতন্ত্রের অংশ, যারা বেশ কয়েকটি সংরক্ষিত এলাকাজুড়ে বসবাস করে।
ন্যাশনাল পার্কের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, শুক্রবার আরেকটি
পেঙ্গুইনের মৃতদেহ পাওয়া গিয়েছিল কাছাকাছি ফিশ হোয়েকে, যেটির শরীরেও একই রকম মৌমাছির দংশনের চিহ্ন রয়েছে।
একটি বিবৃতিতে ন্যাশনাল পার্ক কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, তারা এখনও মৃত পেঙ্গুইনের শরীর থেকে বিষাক্ত পদার্থ এবং রোগবালাইয়ের সম্ভাবনা
পরীক্ষা করে দেখছে। সেই সঙ্গে সেখানকার পরিস্থিতির ওপরেও তারা নজর রাখছে।
শামীম/ডাকুয়া