প্রকাশিত: জুন ১১, ২০২৩, ১০:৪৫ পিএম
আগুনের শিখা সবসময় উপরের দিকে ওঠে। খুব স্বাভাবিক একটা ঘটনা তাই না? কিন্তু আমরা তো জানি অভিকর্ষের প্রভাবে সবকিছু নিচের দিকে নামার কথা। তাহলে আগুনের শিখা কীভাবে উপরের দিকে ওঠে। তাহলে কি আগুনের শিখার ওপর অভিকর্ষের কোনো প্রভাব নেই, নাকি আছে অন্য কোনো কারণ!
আগুনের শিখা তা যেমনই হোক না কেন, সবসময় উপরের দিকেই ওঠে। হোক সেটা মোমবাতি বা দোয়াতের আগুন কিংবা অন্যকিছুর, সবকিছুতেই একই রকম আগুনের ঊর্ধ্বগামী শিখা দেখতে পাওয়া যায়। মূলত কোনো বস্তুর সাথে অক্সিজেনের দহন বিক্রিয়া ঘটলে আগুন জ্বলে ওঠে। আবার এই দহনের জন্য প্রয়োজন জ্বালানির, যা মূলত কোনো পদার্থের অভ্যন্তরীণ হাইড্রোজেন বা কার্বন অথবা কিছু ক্ষেত্রে অন্য কোনো পদার্থ।
মূলত কোনো বস্তুকে জ্বালানোর জন্য একটি নির্দিষ্ট তাপমাত্রার প্রয়োজন হয়। কোনোভাবে ওই নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় পৌঁছাতে পারলে বস্তুতে আগুন জ্বলে ওঠে। একটি দেশলাইয়ে কাঠিতে যখন ঘষা দেয়া হয়, তখন প্রচণ্ড তাপ উৎপন্ন হয়ে তাতে আগুন ধরে যায়। এভাবেই তাপ সৃষ্টির মধ্য দিয়ে যেকোনো বস্তুতে আগুন জ্বলে ওঠে এবং দেখা যায় শিখাটি সোজা উপরের দিকে উঠে যাচ্ছে।
এদিকে আগুন যখন জ্বলে ওঠে তখন সেই দহন বিক্রিয়াটি ক্রমাগত চলতে থাকে। আর এই বিক্রিয়ার বৈশিষ্ট্য- বাতাসের অক্সিজেনের সাথে বস্তুটির জ্বালানীর বিক্রিয়ায় প্রচুর তাপ ও আলোক শক্তি উৎপন্ন হয়। সে সাথে উৎপন্ন হয় কার্বন ডাই অক্সাইড ও অন্যান্য গ্যাস। উৎপন্ন তাপে এই গ্যাস সহ অগ্নিশিখার আশেপাশের বায়ু উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। এতে করে গ্যাসগুলোর ঘনত্ব কমে যায় এবং আয়তন বেড়ে যায়। এদিকে উপরের দিকে থাকে তুলনামূলক শীতল বাতাস যা অধিক ঘনত্ব বা ভারী হওয়ার কারণে নিচের দিকে নেমে আসে এবং নিচের দিকের হালকা বাতাসকে শিখার গা বরাবর ঠেলে উপরের দিকে উঠিয়ে দেয়। এভাবে গ্যাসের ঊর্ধ্বমুখী বেগের কারণে আগুনের শিখা উপরের দিকে সরু আকৃতি ধারণ করে থাকে।
আগুনের শিখা আর তাই গ্যাসের এমন প্রবাহের কারণেই সরু আকৃতি ধারণ করে উপরের দিকে উঠে যায়। আর এর উপর অভিকর্ষের প্রভাবও রয়েছে। এছাড়া বিজ্ঞানীরা প্রমাণ করে দেখিয়েছেন , যে স্থানে অভিকর্ষ নেই- সে স্থানে আগুনের শিখা বর্তুলাকার আকৃতি ধারণ করে। কারণ সেখানে অভিকর্ষের প্রভাব না থাকায় বাতাসের এমন প্রবাহ তৈরি হয় না, ফলে আগুনের শিখা উপরের দিকে সরু আকৃতি ধারণ করতে পারে না।
এডিএস/