প্রকাশিত: মার্চ ৫, ২০২৩, ০৩:৫৬ পিএম
শাহরুখ খান এবং করণ জোহর জুটি মানেই দুর্দান্ত বক্স অফিস আর কাল্ট ক্লাসিক সিনেমার সমোরোহ। ‘কুছ কুছ হোতা হ্যায়’, ‘কাভি খুশি কাভি গাম’, ‘মাই নেম ইজ খান’ শাহরুখের ক্যারিয়ারের অন্যতম চলচ্চিত্র। করণ জোহরের ক্যারিয়ারেও সোনার পালক জুটিয়ে দিয়েছে এই সিনেমাগুলো। তবে এই জুটির আরেকটি চলচ্চিত্র সেভাবে সফলতা দেখাতে পারেনি। বরং মুখ থুবড়ে পড়েছে বক্স অফিসে!
শাহরুখ খানের সঙ্গে পরপর দুটো ব্লকবাস্টার হিট উপহার দিয়েছিলেন পরিচালক করণ জোহর। ‘কুছ কুছ হোতা হ্যায়’ এবং ‘কাভি খুশি কাভি গাম।’ কিন্তু এই জুটির তিন নম্বর সিনেমাটি সেই সময় ভারতীয় বক্স অফিসে মুখ থুবড়ে পড়ে। ২০০৬ সালে মুক্তি পেয়েছিল করণ জোহরের ‘কাভি আলবিদা না কেহেনা’। বিবাহিত শাহরুখ-রানীর পরকীয়া প্রেমের গল্প নিয়ে এই চলচ্চিত্র। শুরু থেকেই এই সিনেমা নিয়ে বন্ধু করণকে সচেতন করেছিলেন আদিত্য চোপড়া। পরকীয়ার মতো বিষয়কে ভারতীয় দর্শক ভালোভাবে নেবে না, শুরুতেই আন্দাজ করেছিলেন তিনি। এত দিন পর করণ স্বীকার করে নিতে বাধ্য হলেন, ভুল ছিল না আদিত্য চোপড়ার দূরদৃষ্টি!
সম্প্রতি সাংবাদিক অনুপমা চোপড়ার পডকাস্ট শোতে করণ জোহর ‘কাভি আলবিদা না কেহনা’র পরকীয়া দৃশ্য নিয়ে কথা বলতে গিয়ে বলেন, ‘এর পেছনে একটা বিরাট গল্প রয়েছে।’
করণ বলেন, আমি একটা সিকোয়েন্স শুট করছিলাম। বিরাট লোকেশনে কাজ চলছে। হঠাৎ আদির (আদিত্য চোপড়া) ফোন এলো। বলল, ‘এই শোন, আমি না গত কয়েক দিন ধরেই ভেবে চলেছি, আর এই ভাবনা আমার মাথা থেকে সরছে না। আমার মনে হয় শাহরুখ-রানীর সে,ক্স করা উচিত না। কারণ ভারতীয় দর্শকরা সেটা মানবে না। ওদের একটা জায়গা অব্দি পৌঁছানো উচিত, এরপর নিজেদের ভুল বুঝে সরে যাওয়া উচিত। কারণ এই ঘনিষ্ঠতা নিয়ে ওরা অনুতপ্ত।’
করণ জানান, ২০০৪ সালে বাবাকে হারানোর পর একটু ‘বিদ্রোহী’ হয়ে উঠেছিলেন তিনি। কারণ যশ জোহর কোনো দিন তাঁকে ‘কাভি আলবিদা না কেহনা’র মতো সিনেমা তৈরির অনুমতি দিতেন না, যা ভারতীয় সংস্কৃতির সঙ্গে খাপ খায় না। তাই বন্ধুর কথা না শুনে মুখের ওপর করণ জানিয়ে দেন, ‘না, আমি তো ওই দৃশ্য দেখাব। এটা কী করে হতে পারে যে কেউ সম্পর্কে থাকবে আর সেক্স করবে না? সেই নিয়ে ফোনে আমাদের তুমুল ঝগড়া হয়। আমি একটু বিদ্রোহী হয়ে উঠেছিলাম। কিন্তু পরে যখন আমি বসে সিনেমাটি দেখেছি, আমি উপলব্ধি করেছি, আদি ঠিক বলেছিল। ব্যাবসায়িক দিক থেকে আদির কথা ঠিক ছিল। ওদের প্রেমটা দর্শক অনেক সহজভাবে গ্রহণ করত যদি ওরা (শাহরুখ-রানী অভিনীত চরিত্র) শারীরিক সম্পর্কে না জড়িয়ে পড়ত।’
‘কাভি আলবিদা না কেহনা’তে বিবাহিত দম্পতি হিসেবে দেখানো হয়েছিল শাহরুখ খান ও প্রীতি জিনতাকে। অন্যদিকে স্বেচ্ছায় ছেলেবেলার বন্ধু অভিষেককে বিয়ে করেন রানী মুখার্জি। তবে স্ত্রী, ছেলেকে ভুলে রানীর সঙ্গে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়েন শাহরুখ। দাম্পত্য সম্পর্কের টানাপড়েন নিয়েই এগিয়েছিল এই সিনেমার চিত্রনাট্য। বিদেশের বক্স অফিসে ভালো ফল করলেও ভারতীয় দর্শক সিনেমাটি মেনে নিতে পারেনি। এর জেরেই ফ্লপ হয় ‘কাভি আলবিদা না কেহনা’।