• ঢাকা রবিবার
    ২২ ডিসেম্বর, ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১

মহানায়িকা সুচিত্রা সেনের প্রয়ান দিবস আজ

প্রকাশিত: জানুয়ারি ১৭, ২০২৩, ১০:৪৭ পিএম

মহানায়িকা সুচিত্রা সেনের প্রয়ান দিবস আজ

বিনোদন প্রতিবেদক

আজ ১৭ জানুয়ারি উপমহাদেশীয় বাংলা চলচ্চিত্রের মহানায়িকা সূচিত্রা সেনের প্রয়ান দিবস। তিনিই বাংলা চলচ্চিত্রের প্রথম অভিনেত্রী, যিনি আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব থেকে পুরস্কৃত হয়েছিলেন। তিনি মূলত বাংলা ও হিন্দি চলচ্চিত্রে অভিনয় করে খ্যাতি অর্জন করেছিলেন। বাংলা চলচ্চিত্রে উত্তম কুমারের বিপরীতে নায়িকার ভূমিকায় অভিনয় করে তিনি বিশেষ জনপ্রিয়তা অর্জন করেছিলেন।

১৯৩১ সালের ৬ এপ্রিল ব্রিটিশ ভারতের বাংলা প্রেসিডেন্সির (অধুনা বাংলাদেশ রাষ্ট্রের অন্তর্গত সিরাজগঞ্জ জেলার বেলকুচি থানার অন্তর্গত সেন ভাঙ্গাবাড়ী) গ্রাম সুচিত্রা সেনের পৈত্রিক নিবাস। পাবনা জেলার সদর পাবনায় সুচিত্রা সেন জন্মগ্রহণ করেছিলেন। তার বাবা করুণাময় দাশগুপ্ত ছিলেন এক স্থানীয় বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও মা ইন্দিরা দেবী ছিলেন গৃহবধূ। তিনি ছিলেন পরিবারের পঞ্চম সন্তান ও তৃতীয় কন্যা। পাবনা শহরেই তিনি পড়াশোনা করেছিলেন। তিনি ছিলেন কবি রজনীকান্ত সেনের নাতনী।

নীরেন লাহিড়ীর ‍‍`কাজরী‍‍` ছবির মাধ্যমে ‍‍`সুচিত্রা সেন‍‍` নামে আত্মপ্রকাশ করেন তিনি। নিজস্ব চলন-বলন আর স্টাইলে যেন ক্রমেই অনুকরণীয় হয়ে উঠেছিল সুচিত্রা সেন। তার শাড়ি পরা বা চুল বাঁধার স্টাইল ছিল তখনকার আধুনিক মেয়েদের কাছে অত্যন্ত প্রিয়। তার অভিনীত বাংলা সিনেমা ৫২টি আর হিন্দি সিনেমা মোট ৭টি। বাংলা সিনেমার পাশাপাশি হিন্দি চলচ্চিত্রের পর্দাও কাঁপিয়েছেন তিনি। চরিত্রের সীমাবদ্ধতাতেও আটকে থাকেননি মহানায়িকা। নিজেকে চ্যালেঞ্জ করেছেন বারবার। যখনই যে চরিত্রে পর্দায় এসেছেন, চোখ আটকে যাওয়ার মতন কিছু একটা সব সময়ই থাকত তার মধ্যে। সেটা ভক্তিরসে টইটম্বুর ‍‍`ভগবান শ্রীকৃষ্ণ চেতন্য‍‍`তে বিষ্ণুপ্রিয়া কিংবা ‍‍`সপ্তপদী‍‍`তে আধুনিকা ‍‍`রিনা ব্রাউন‍‍`ই হোন- সুচিত্রার জনপ্রিয়তায় ভাটা পড়েনি কখনো, সুচিত্রার মোহনীয় রূপ কমেনি একবিন্দু। হিন্দি চলচ্চিত্রে তার ক্যারিয়ার সম্পর্কে বলতে গেলে সামনে আসে দুটি নাম- ‍‍`দেবদাস‍‍` ও ‍‍`আন্ধি‍‍`। স্বপ্নের চরিত্র ‍‍`পার্বতী‍‍` হয়ে দিলীপ কুমারের বিপরীতে তার অভিনয় দিয়ে মুগ্ধতা ছড়িয়েছিলেন সুচিত্রা। গুলজারের পরিচালনায় তার অভিনয় ক্যারিয়ারের শেষ দিকে আসে ‍‍`আন্ধি‍‍`। এ ছবিতে তার বিপরীতে ছিলেন সঞ্জীব কুমার। সুচিত্রা সেনের নামের সঙ্গে যে নামটি স্মৃতির পর্দায় ভেসে ওঠে, তিনি মহানায়ক উত্তম কুমার। উত্তম-সুচিত্রার পর্দার রসায়ন কার না মন কেড়েছে! ১৯৫৪ সালের ২৬ জুন থেকে শুরু করে বহু সিনেমায় একসঙ্গে আবির্ভূত হলেও, ১৯৫৪ সালের ৩ সেপ্টেম্বর পরিচালক অগ্রদূতের ‍‍`অগ্নিপরীক্ষা‍‍` সিনেমাটিতেই তাদের জুটি সাফল্য পায় প্রথম। টানা ১৫ সপ্তাহ হলে চলেছিল এ সিনেমা।

১৯৭৮ সালে সুদীর্ঘ ২৫ বছর অভিনয়ের পর তিনি চলচ্চিত্র থেকে অবসরগ্রহণ করেন। এর পর তিনি লোকচক্ষু থেকে আত্মগোপন করেন এবং রামকৃষ্ণ মিশনের সেবায় ব্রতী হন। ২০০৫ সালে দাদাসাহেব ফালকে পুরস্কারের জন্য সুচিত্রা সেন মনোনীত হন, কিন্তু ভারতের প্রেসিডেন্টের কাছ থেকে সশরীরে পুরস্কার নিতে দিল্লি যাওয়ায় আপত্তি জানানোর কারণে তাকে পুরস্কার দেওয়া হয় নি।

২০১৪ সালের ১৭ জানুয়ারি ভারতীয় সময় সকাল ৮টা ২৫ মিনিট নাগাদ কলকাতার বেল ভিউ হাসপাতালে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে ৮২ বছর বয়সে সুচিত্রা সেনের মৃত্যু হয়। তিন সপ্তাহ আগে ফুসফুসে সংক্রমণের জন্য তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল

 

নাদিম মারজান/

আর্কাইভ