• ঢাকা রবিবার
    ২৪ নভেম্বর, ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

এবার ‘বদলে যাওয়ার গল্পে’ পরীমণি

প্রকাশিত: জানুয়ারি ১০, ২০২৩, ১১:১৪ পিএম

এবার ‘বদলে যাওয়ার গল্পে’ পরীমণি

বিনোদন ডেস্ক

স্বামী শরীফুল রাজের সঙ্গে দাম্পত্যকলহ, মাদক মামলাসহ নানা বিষয় নিয়ে আলোচিত ঢাকাই সিনেমার নায়িকা পরীমণি। তবে, ব্যক্তিজীবনের টানাপোড়েনের মধ্যেও বরাবরই পেশাদারীত্বের প্রতি শ্রদ্ধাশীল দেখা গেছে পরীকে। মাতৃত্বকালীন ছুটির সময়েও তাকে দেখা গেছে ছবির প্রচারণায়। সম্প্রতি স্বামী রাজের সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদের গুঞ্জনের মধ্যে তিনি নেমেছেন ছবির প্রচারণায়। তবে, ভক্তদের জন্য সুখবর হলো-দ্বন্দ্ব ভুলে ফের এক হয়েছেন রাজ-পরী।

এই সুখবরের মধ্যেই আরেকটি সুখবর দিলেন পরীমণি। জানালেন, “চলো বদলে যাই” নাম নতুন সিনেমার কেন্দ্রীয় চরিত্রে পাওয়া যাবে তাকে,।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে নিজের ভেরিফায়েড পেজ থেকে দেওয়া পোস্টে বিষয়টি নিশ্চিত করেন পরীমণি।

এরপর বিষয়টি নিয়ে তিনি সংবাদমাধ্যম প্রথম আলোকে বলেন, “গল্পটা শুনেই ভালো লেগে যায়। তাই পরিচালককে সঙ্গে সঙ্গে হ্যাঁ বলে দিয়েছি। আমার কেন জানি মনে হয়েছে, এমন একটি গল্পই আমি বেশ কিছুদিন ধরে খুঁজছিলাম। বদলে যাওয়ার এই গল্প সবাইকে ভাবাবে। আমিও এমন একটি গল্পের শুটিং শুরুর অপেক্ষায় রইলাম।”

সিনেমাটি পরিচালনা করবেন আবু রায়হান জুয়েল। মুক্তির অপেক্ষায় থাকা পরীমণি অভিনীত আরেক সিনেমা “অ্যাডভেঞ্চার অব সুন্দরবন”–এরও নির্মাতা তিনি।

নতুন সিনেমার বিষয়ে আবু রায়হান জুয়েল প্রথম আলোকে বলেন, “এক তরুণী ও এক তরুণের জীবনের সংগ্রামের গল্প নিয়ে সিনেমা। গল্প শুনে একবাক্যে রাজি হয়েছেন পরীমণি। প্রধান দুই চরিত্রের একটিতে পরীমণি থাকছেন, অপর চরিত্রে কে থাকছেন—এখনো তা চূড়ান্ত হয়নি।”

ফেব্রুয়ারি মাসে বাকি শিল্পীদের নাম ঘোষণার পাশাপাশি ছবি সংশ্লিষ্ট সবকিছু আনুষ্ঠানিকভাবে জানাবেন। আর জুলাই–আগস্টে শুটিং শুরু করবেন।  

আগামী ২০ জানুয়ারি মুক্তি পাচ্ছে পরীমণি অভিনীত সিনেমা “অ্যাডভেঞ্চার অফ সুন্দরবন”। বর্তমানে এ সিনেমার প্রচারণায় ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন তিনি।

উল্লেখ্য, গত বছরের ১০ জানুয়ারি পরীমণি ও রাজ জানান তারা গত বছরের ১৭ অক্টোবর বিয়ে করেছেন। একই দিনে ঘোষণা করেন, সন্তান আসছে তাদের ঘরে। এরপর ২২ জানুয়ারি পারিবারিক আয়োজনে বিয়ের আনুষ্ঠানিকতাও করেন তারা। ১০ আগস্ট পরীমণির কোলজুড়ে আসে রাজ্য।

গত শুক্রবার (৩১ ডিসেম্বর) রাত ১২টা ৪০ মিনিটে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ব্যক্তিগত একাউন্ট থেকে দেওয়া এক স্ট্যাটাসে তিনি লিখেছেন, “হ্যাপি থার্টিফার্স্ট এভরিওয়ান! আমি আজ রাজকে আমার জীবন থেকে ছুটি দিয়ে দিলাম এবং নিজেকেও মুক্ত করলাম একটা অসুস্থ সম্পর্ক থেকে। জীবনে সুস্থ হয়ে বেঁচে থাকার থেকে জরুরি আর কিছুই নেই।”

এরপর বিষয়টি নিয়ে সাংবাদিকদের তিনি জানান, ইতোমধ্যেই শরীফুল রাজের বাসা ছেড়েছেন তিনি। শিগগিরিই পাঠাবেন বিবাহবিচ্ছেদের নোটিশ।

রবিবার ভোর ফের তিনি ফেসবুকে একটি পোস্ট দেন। সেখানে রক্তামাখা বিছানা ও বালিশের দুটি ছবি পোস্ট করে ইঙ্গিত দেন সংবাদ সম্মেলনের।

রবিবার বিকেল ফের আরেক ফেসবুক পোস্টে পরীমণি লিখেন, “একটা সম্পর্কে পুরোপুরি সিরিয়াস বা খুব করে না চাইলে একটা মেয়ে, বাচ্চা নেওয়ার মতো এত বড় সিদ্ধান্ত নিতে পারে না কখনোই।”

তিনি আরও লিখেন, “ আমার জীবনের সবটুকু চেষ্টা যখন এই সম্পর্কটাকে ঠিকঠাক টিকিয়ে রাখা তখনই আমাকে পেয়ে বসা হলো। যেন, শত কোটি বার যা ইচ্ছে তাই করলেও সব শেষে ওই যে আমি মানিয়ে নেই এটা রীতিমতো দারুণ এক সাংসারিক সূত্র হয়ে দাঁড়ালো। আমি জোর দিয়ে বলতে পারি আমাদের এই সম্পর্ক এত দিন আমার এফোর্টে টিকে ছিলো শুধু। কিন্তু বারবার গায়ে হাত তোলা পর্যায়ে পৌঁছালে কোনো সম্পর্কই আর সম্পর্ক থাকেনা। স্রেফ বিষ্ঠা হয়ে যায়।”

ছেলের মুখের দিকে তাকিয়ে সবকিছু সহ্য করেছেন জানিয়ে  পরীমণি লিখেন, “রাজ্যের দিকে তাকিয়ে বার বার সব ভুলে যাই। সব ঠিক করার জন্যে পড়ে থাকি। কিন্তু তাতে কি আসলেই আমার বাচ্চা ভালো থাকবে! না । একটা অসুস্থ সম্পর্ক এত কাছে থেকে দেখে দেখে ও বড় হতে পারে না। তাই আমি, রাজ্য এবং রাজের মঙ্গল এর জন্যেই আলাদা হয়ে গেলাম।”

স্ট্যাটাসে পরীমণি বলেন, “রাজ এখন শুধু আমার প্রাক্তন‍‍`ই না,আমার ছেলের বাবাও। তাই রাজ্যের বাবার সন্মান রাখতে পাবলিকলি আর বাকি কিছু বলছি না আমি। তবে আমার ওপর তার আর তার পরিবারের কোনো অসুস্থ আচরণ বা হার্মফুল কিছু করার চেষ্টা করলে আমি কঠোর সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হবো।”

স্ট্যাটাসে সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে পরীমণি বলেন,  “সম্মানিত গণমাধ্যমকর্মী যারা রয়েছেন আপনারা নিশ্চয়ই আমার মানসিক অবস্থা বুঝতে পারবেন আশা করছি। আমাকে একটু সময় দিন। শারীরিক ভাবেও আমি বিধ্বস্ত।”

শেষে তিনি লিখেন, “রাজ্য তার বাবা মাকে একসাথে নিয়ে বড় হতে পারলো না এর থেকে কষ্টের আর কি হতে পারে আমার কাছে……!”

এরপর রাজ সাংবাদিকদের বলেন, “আমি এখন চুপচাপ আছি। কিছু বলতে চাইছি না। এই পরিস্থিতিতে আমার এখন একা থাকা দরকার। পরে এসব ব্যাপারে কথা বলব।”

আত্মপক্ষ সমর্থন না করলে ভুল-বোঝাবুঝির সুযোগ থেকে যায় কিনা, তা জানতে চাইলে রাজ বলেন, “ভুল বুঝলে বুঝুক। তবে আমি স্পষ্ট বলি, আমি কোনো ভুল করিনি।”

তাদের সম্পর্ক যে আর টিকছে না, সেটিও স্পষ্ট করেন রাজ। সম্পর্ক জোড়া লাগবে কিনা, এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, “না, আর হবে না।”

এরপর হঠাৎই রাজ তার ফেসবুক পোস্টে লেখেন, “হ্যালো গডফাদারস অ্যান্ড গং। আই ওয়ান্ট টু নো ইউ গাইজ। আই লাইভ ইন ঢাকা, আই উড লাভ টু চিয়ার্স।”

আর্কাইভ