প্রকাশিত: জানুয়ারি ৬, ২০২৩, ১০:৫৪ পিএম
অস্কারজয়ী সংগীতজ্ঞ এ আর রহমান আজকের অবস্থানে এসেছেন অনেক কঠিন পথ পাড়ি দিয়ে। জ্ঞান হওয়া থেকেই যেন তার জীবন জড়িয়ে গিয়েছিল সংগীতের সঙ্গে। বাবা ছিলেন তামিল সংগীত পরিচালক। মাত্র ৪ বছর বয়স থেকেই বাবার স্টুডিওতে কী-বোর্ড বাজাতে শুরু করেন তিনি।
কিন্তু বাবার কাছে বেশি শিক্ষা নেওয়ার সময় পেলেন না তিনি। মাত্র ৯ বছর বয়সে বাবাকে হারিয়ে বদলে যায় তার জীবন। সংসারে আর্থিক অনটন, বাবার বাদ্যযন্ত্র ভাড়া দিয়েই পেট চলত তখন। কিছুদিন পর থেকে, সংসার চালাতে নিজেই কাজ শুরু করেন তিনি, কিন্তু এর চূড়ান্ত প্রভাব পড়ে পড়াশোনায়।
স্কুল কামাই হতে থাকে, ক্ষতি হতে থাকে পড়াশোনারও। শেষমেষ পরীক্ষায় অনুতীর্ণ। স্কুল থেকে তার মাকে ডেকে বলা হয়, বাড়ির কাজ নয়, কিশোরের মন দেওয়া উচিত পড়াশোনায়। একটি সাক্ষাৎকারে তিনি জানিয়েছিলেন, তার মাকে বলা হয়েছিল তাকে যেন স্কুলে না পাঠিয়ে রাস্তায় ভিক্ষা করতে পাঠানো হয়। এরপরে স্কুল পরিবর্তন করে নেন তিনি।
নতুন স্কুলে পড়াশোনার সঙ্গে সঙ্গে অন্য খাতে বইতে শুরু করে তার জীবন। সংগীত তাকে ছেড়ে যায়নি কখনো।
বন্ধুদের সঙ্গে মিলে একটি ব্যান্ড তৈরি করেন তিনি। এরপরে মায়ের সঙ্গে পরামর্শ করেই স্কুলে যাওয়া বন্ধ করেন, ডুব দেন সুরের জগতে। প্রথমে কী বোর্ড বাজানো দিয়েই শুরু হয়েছিল তার ক্যারিয়ার। বিভিন্ন ব্যান্ডের সঙ্গে পিয়ানো বাজাতেন তিনি। ধীরে ধীরে একাধিক বাদ্যযন্ত্রে দক্ষ হয়ে ওঠেন।
মাস্টার ধনরাজের কাছে সংগীতশিক্ষা শুরু করেন তিনি। ১১ বছর বয়সে অর্কেস্ট্রায় যোগদান করেন তিনি। ভারতীয় টেলিভিশনের বিভিন্ন বিজ্ঞাপনে জিঙ্গেল তৈরি করে নিজের ক্যারিয়ার শুরু করেন তিনি। পাশাপাশি করতে থাকেন ছোট ছোট সংগীত পরিচালনার কাজও। ১৯৯২ সালে মণি রত্নমের ছবি ‘রোজা’-তে সংগীত পরিচালনার দায়িত্ব পান তিনি। আর তারপরেই ম্যাজিক। এই সিনেমার গান প্রত্যেক দর্শকের মন ছুঁয়ে যায়। সুরের আকাশে ঝলমল করে ওঠে এক নতুন প্রতিভার নাম, এ আর রহমান।
এরপর ঝুলিতে এসেছে একাধিক পুরস্কার। তার সুরের মূর্ছনায় মজেছেন আট থেকে আশি। আজ সেই সুরের যাদুকরের জন্মদিন। সাফল্যে শিখরে পৌঁছানোর সফরটা নেহাত সহজ ছিল না তার জন্য। আজ তিনি অনেক মানুষের কাছে অনুপ্রেরণা।
সাজেদ/