প্রকাশিত: নভেম্বর ১৫, ২০২২, ০৬:১৭ পিএম
গৌরাঙ্গ চক্রবর্তী’ নামে অনেকেই চিনেন না। যার জন্ম ১৯৫০ সালে বাংলাদেশের বরিশাল জেলায়। নাম এবং জন্মস্থান জানার পর যে কেউ জানতে চাইবেন তিনি কে? তিনি আর কেউ নন, ওপার বাংলা এবং বলিউডের জনপ্রিয় অভিনেতা এবং এ সময়ের একজন ‘মিঠুন চক্রবর্তী’। তিনি দীর্ঘ সময় ধরে ভারতীয় চলচ্চিত্রে ‘ডিসকো ড্যান্সার’ এবং ‘মিঠুন দা’ নামে খ্যাতি পেয়েছেন।
একাধারে টালিউড, বলিউড আর দক্ষিণী সিনেমায় সমান জনপ্রিয় মুখ। করেছেন হিট হিট অনেক সিনেমা। তিনি মিঠুন এবং সবার দাদা। যার থলিতে রয়েছে অসংখ্য পুরস্কার ও সম্মাননা। আর সেই সঙ্গে তার ক্যারিয়ারজুড়ে ছিল বিভিন্ন স্ক্যান্ডাল। প্রেম কেলেঙ্কারি, নারী বিতর্ক, রাজনৈতিক বিতর্ক আর সেই সঙ্গে সফল একজন অভিনেতা। এখন তিনি সিনেমা কম করলেও নিয়মিত ভারতীয় সাচের রিয়েলিটি শো-গুলোর বিচারকের দায়িত্ব পালন করছেন।
তিনি একজন অসাধারণ গুণী অভিনেতা। ক্যরিয়ারের শুরুতে অপমান-লাঞ্ছনা আর অভুক্ত অবস্থায় কেটেছে তার অনেক সময়। তার গায়ের রং শ্যামবর্ণ হওয়ায় একসময় সিনেমার পরিচালকরা তাকে এড়িয়ে যেতেন। এ অবস্থায় ঘরে বসে তাকে কান্নাকাটি করতে হয়েছে। নীরবে- নিভৃতে একাকী কেঁদেছেন অন্যকে বুঝতে দেননি। নিজের জীবনের এই কঠিন বাস্তব সময়ের কথা তিনি শেয়ার করলেন সবার সঙ্গে।
ভারতের অন্যতম জনপ্রিয় নাচের রিয়েলিটি শো ‘সা রে গা মা পা লিটল চ্যাম্পস’ অনুষ্ঠানে তিনি মুখ খুললেন। স্মরণ করলেন, ফাটাকেষ্ট খ্যাত মিঠুন চক্রবর্তী তার জীবনের চড়াই-উতরাইয়ের দিনগুলোর কথা। মিঠুন চক্রবর্তী জানান, ‘যে সব দিন আমি দেখেছি, আমি চাই না যে আর কেউ ওই দিনগুলো দেখুক। আমি চাই না আমার মতো কষ্টের মধ্যে কেউ জীবন অতিবাহিত করুক। আমাকে আমার বর্ণের কারণে বারবার অপমান করা হয়েছে। আর এই অপমান বেশ কিছু বছর ধরে চলেছিল। আমার জীবনে এমন অনেক দিন গেছে, যখন আমি খালি পেটে শুয়েছি। আর কোথায় রাত কাটাব, ভেবে কেঁদে ফেলতাম।’
তিনি আরও বলেন, ‘একদিন খাবার জুটলেও পরে কী খাব বা কোথায় শুতে পারব, তা নিয়ে চিন্তায় পড়ে যেতাম। এমনকি অনেক দিন গেছে যখন আমি ফুটপাতে ঘুমিয়েছি।’ মিঠুন আরও বলেন ‘আমি চাই না, আমার জীবনকে নিয়ে ছবি নির্মাণ করা হোক। কারণ, আমার জীবন কাউকে অনুপ্রাণিত করবে বলে মনে হয় না। বরং আমার কাহিনী মানুষকে মানসিকভাবে ভেঙে দিতে পারে।’ উল্লেখ্য, মৃগয়া (১৯৭৬) চলচ্চিত্রের মাধ্যমে তার অভিষেক ঘটে। এ ছবির মাধ্যমেই তিনি `সেরা অভিনেতা` হিসেবে ভারতের `জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার` লাভ করেন। তিনি এ পর্যন্ত ৩০০ টিরও অধিক হিন্দী সিনেমায় অভিনয় করেছেন।
কিউ/এসএই/এএল