বিনোদন ডেস্ক
চলে গেলেন বাংলা সঙ্গীতের গবেষক, মিষ্টি আরেক গানের পাখি সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়। মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৭.৩০ মিনিটে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৯০ বছর।
সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়ের মৃত্যুর সঙ্গে সঙ্গে বাংলা গানের স্বর্ণযুগের শিল্পীদের শেষ তারকাটিও নিভে গেল। আধুনিক বাংলা গানের শ্রেষ্ঠ কণ্ঠশিল্পীদের মধ্যে হেমন্ত মুখোপাধ্যায়, মান্না দে, শ্যামল মিত্র, মানবেন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়রা আগেই পরপারে পাড়ি জমিয়েছেন। এবার সন্ধ্যা-প্রদীপও নিভে গেল।
গত ২৭ জানুয়ারি (বৃহস্পতিবার) নিজ বাড়িতে অসুস্থ হয়ে পড়েন প্রবাদপ্রতিম এ সঙ্গীতশিল্পী। এরপর তাকে কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তার ফুসফুসে সংক্রমণ হয়েছিল। অসুস্থ হয়ে হাসপাতাল থেকে আর বাড়ি ফেরা হলো না তার।
বাংলা গানের স্বর্ণযুগের অন্যতম কিংবদন্তি সঙ্গীতশিল্পী সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়। ১৯৩১ সালের ৪ অক্টোবর দক্ষিণ কলকাতার ঢাকুরিয়ায় জন্মগ্রহণ করেন সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়। ৫০ বছরেরও বেশি সময় নানা ভাষায় সিনেমার প্লেব্যাক করেছেন তিনি। সিনেমার গানের পাশাপাশি বাংলা আধুনিক গান ও ধ্রুপদী সঙ্গীতেও তিনি ছিলেন সমান পারদর্শী। উস্তাদ বড়ে গুলাম আলি খাঁর শিষ্যা ছিলেন তিনি।
সঙ্গীত শিক্ষায় সন্ধ্যার প্রধান গুরু ছিলেন তার দাদা রবীন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়। ১৯৪৫ সালে মাত্র ১৪ বছর বয়সে প্রথম গান রেকর্ড করেন তিনি। কলম্বিয়া থেকে প্রথম রেকর্ড করা গান গিরীন চক্রবর্তীর কথায় ও সুরে 'তুমি ফিরায়ে দিয়াছ' ও 'তোমার আকাশে ঝিলমিল করে'। এরপর আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি গুণী এই শিল্পীকে
মৃত্যুর আগে কিংবদন্তি এই শিল্পী পেয়েছেন অসংখ্য সম্মাননা। ১৯৭১ সালে 'জয়জয়ন্তী' ও 'নিশিপদ্ম' সিনেমায় গান গেয়ে জাতীয় পুরস্কার পেয়েছেন তিনি। ১৯৯৯ সালে লাইফটাইম অ্য়াচিভমেন্টের জন্য ভারত নির্মাণ পুরস্কার পান। ২০১১ সালে বঙ্গবিভূষণ সম্মান পান তিনি। ২০২২ সালে তাকে 'পদ্মশ্রী' দিতে চেয়েছিল কেন্দ্রীয় সরকার, কিন্তু এতদিন সে সম্মান তাকে না দেয়ায় অভিমানে পদ্মশ্রী প্রত্যাখ্যান করেন ‘গীতশ্রী’ খ্যাত এই শিল্পী।
জীবনে একের পর এক মাইলস্টোন অতিক্রম করেছেন সন্ধ্যা মুখোপাধ্য়ায়। সাফল্যের চূড়ায় থেকেও বরাবরই সাধারণ জীবন-যাপন করতেন তিনি। তার মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে ভারতসহ উপমহাদেশের শিল্পীমহল।
এমএএম/ডাকুয়া
ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন