• ঢাকা সোমবার
    ২৫ নভেম্বর, ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

যেভাবে ফাটল ধরেছিল সালমান-ঋত্বিকের বন্ধুত্বে

প্রকাশিত: জানুয়ারি ১১, ২০২২, ০৮:৫৫ পিএম

যেভাবে ফাটল ধরেছিল সালমান-ঋত্বিকের বন্ধুত্বে

বিনোদন ডেস্ক

বলিউডের জনপ্রিয় দুই সুপারস্টার সালমান খান ও ঋত্বিক রোশন। তাদের বন্ধুত্বের কথা কারও অজানা নয়। ২০০০ সালে ব্লকবাস্টার ছবি ‘কাহো না পেয়ার হ্যায়’-এর মাধ্যমে বলিউডে অভিষেক হয় ঋত্বিকের। এর আগে ঋত্বিক ছিলেন বেশ রোগাপাতলা। আর সালমান তখন তারকা হয়ে উঠছিলেন।

ঋত্বিক সিনেমা জগতে আসার পর বলিউড ভাইজান তাকে দৈহিক গড়নের ব্যাপারে পরামর্শ দিয়েছিলেন। কিন্তু ঋত্বিক প্রথম ছবিতেই বাজিমাত করেন। ‘কাহো না পেয়ার হ্যায়’ মুক্তির পর থেকে সবকিছু পাল্টে যেতে শুরু করে। তখন বাবা রাকেশকেই লোকজন ‘ঋত্বিক রোশনের বাবা’ বলে পরিচয় দিতে শুরু করেন।

বলিউডজুড়ে তখন খানদের রাজত্ব চলছিল। ঠিক সেই সময়ে ঋত্বিকের তারকা হয়ে ওঠা তার জন্য কাল হয়ে দাঁড়ায়। কেননা শাহরুখ, আমির ও সালমান— তিন খানের রাজত্বে থাবা বসিয়েছিলেন তিনি। এর আঁচ নাকি পড়েছিল ঋত্বিক এবং সালমানের বন্ধুত্বেও। অন্তত বলিউডপাড়ায় তেমনই গুঞ্জন।

২০০০ সালের আগে থেকেই সালমানের সঙ্গে বন্ধুত্ব ঋত্বিকের। ফিল্মিপাড়ায় বেড়ে ওঠা সালমান এবং ঋত্বিকের মধ্যে বন্ধুত্বের চেয়েও খানিকটা গুরু-শিষ্যের সম্পর্ক ছিল। এক দশক পর তাদের বন্ধুত্বে ভাটা পড়ে। ২০১০ সালে খ্যাতিমান নির্মাতা সঞ্জয় লীলা বানসালি পরিচালিত ঋত্বিক অভিনীত ‘গুজারিশ’ ছবি নিয়ে মন্তব্য করেন সালমান, যা ইতিবাচক নয়। আর এর কারণেই বন্ধুত্বে ভাটা।

বানসালির ‘গুজারিশ’-এ এক জাদুকরের ভূমিকায় দেখা গিয়েছিল ঋত্বিককে। তবে দুর্ঘটনায় তার হাত-পা অসাড়। ১৪ বছর ধরে হুইল চেয়ারেই দিন কাটছে। এমনকি, একটি মাছি তার নাকে এসে বসলেও তা তাড়াতে পারেন না। শরীরের সেই অবস্থাতেই রে়ডিও জকি জাদুকর। সেই ইথান মাসকারেনহাসের পরিচর্যার ভার নার্স সোফিয়া ডি’সুজার ওপর। ১২ বছর ধরে ইথানের ‘সঙ্গী’ বলতে একমাত্র সোফিয়া।

‘গুজারিশ’ মুখ থুবড়ে পড়ায় তা নিয়ে ঋত্বিককে খোঁচা দিতে ছাড়েননি সালমান। সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘আরে! ওই ফিল্মে তো মাছি উড়ে বেড়াচ্ছিল। কিন্তু কোনো মশাও তা দেখতে যায়নি। এমনকি, কোনো কুকুরও দেখেনি।’

সালমানের ওই কটূক্তি নিয়ে সিনেমাপাড়ায় আলোচনা-সমালোচনার ঝড় ওঠে। চুপ ছিলেন না ঋত্বিকও। তবে সালমানের মন্তব্যের জবাবে শালীনতা বজায় রেখেছিলেন ঋত্বিক।

ঋত্বিক তখন বলেছিলেন, ‘‘সালমান খানকে সব সময় ভালো মানুষ হিসেবেই চিনি। যার থেকে অনুপ্রেরণা পেয়েছি, যাকে তারিফ করেছি। এখনও করি। উনি সব সময়েই আমার হিরো। তা-ই থাকবেন। তবে হ্যাঁ, একজন পরিচালক বক্স অফিসে তোমার ফিল্মের মতো টাকা না কামালেই তার কাজ নিয়ে তাকে হেয় করব, হাসিঠাট্টা করব, এটা খুব একটা নায়কোচিত নয়। ‘গুজারিশ’ নিজের মতো করে চূড়ান্ত সফল। এভাবে মিস্টার বানসালির বিরুদ্ধে কেউ মন্তব্য করলে আমি খুব ব্যথিত হব।’’

সালমানকে খানিকটা উপদেশ দিয়ে ঋত্বিক বলেছিলেন, ‘আমার মতে, হিরোরা কখনও অন্যের ব্যর্থতায় আনন্দ পান না। আপনি চূড়ান্ত সফল হলে বরং আরও দয়ালু হবেন। অন্যের ব্যর্থতায় তার সঙ্গে শত্রুতার বদলে বন্ধুত্বের হাত বাড়িয়ে দেবেন। সকলকে ভালোবাসায় ভরিয়ে তুলুন। তাদের নিয়ে ঠাট্টা করবেন না। আমি এখনই ওকে ক্ষমা করে দিয়েছি। কারণ, মনে হয় যে ওর মধ্যে আসলে আমার প্রতি ভালোবাসা ছাড়া আর কিছু নেই। একটা বেহিসেবি মুহূর্তে ওই মন্তব্য করেছেন (সালমান)। পরের বার দেখা হলে উনি আমাকে জড়িয়ে ধরবেন বলেই আশা রাখি।’

যা হোক, সময় অতিবাহিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ঋত্বিক ও সালমান উভয়েই অতীতের ঘটনা থেকে বেরিয়ে এসে ভালো সম্পর্ক তৈরির সিদ্ধান্ত নেন। মাত্র কয়েক মাস আগে, ‘ওয়্যার’ ছবির প্রচারের জন্য সালমানের উপস্থাপনায় তুমুল জনপ্রিয় রিয়েলিটি শো ‘বিগ বস’-এর ত্রয়োদশ আসরে যান ঋত্বিক। এক সময়ে দেখা গেল দুজনেই বলিউডি গানের তালে কোমর দোলাচ্ছেন। কোন গান? ‘কাহো না পেয়ার হ্যায়’।

এএমকে/ডা

আর্কাইভ