প্রকাশিত: ডিসেম্বর ১৪, ২০২১, ১২:২১ এএম
ওপার
বাংলার বহুল চর্চিত আবেদনময়ী অভিনেত্রী স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়। ৪১-এ পা দিয়েও বাকিদের
থেকে নিজেকে আলাদা করে নিয়েছেন তিনি। নিজের প্রতিভায় ভর করে কলকাতা থেকে মুম্বাই পৌঁছে
গেছেন। ১৯৮০ সালে কলকাতায় জন্ম। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ইতিহাস নিয়ে পড়াশোনা শেষ করেছেন
এই নায়িকা।
বাংলা
ধারাবাহিক ‘দেবদাসী’ দিয়ে ছোট পর্দায় পা রেখেছিলেন স্বস্তিকা।
২০০২ সালে ‘হেমন্তের পাখি’ ছবির মাধ্যমে বড় পর্দায় নামেন তিনি।
১৯৯৮ সালে ১৮ বছর বয়সে রবীন্দ্রসঙ্গীতশিল্পী প্রয়াত সাগর সেনের ছেলে প্রমিত সেনের
সঙ্গে চার হাত এক হয় সন্তু মুখোপাধ্যায়ের মেয়ে স্বস্তিকার। তার বিবাহিত জীবন সুখের
ছিল না বলেই জানিয়েছিলেন অভিনেত্রী। বিয়ের দুই বছরের মাথায় স্বামীর বিরুদ্ধে বিবাহ বিচ্ছেদের
মামলা করেন তিনি। প্রমিত তাকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করতেন বলে অভিযোগও করেছিলেন
নায়িকা।
সেই
সম্পর্ক আজও আইনের খাতায় তোলা আছে। বিবাহবিচ্ছেদের পথে অন্তরায় হয়ে দাঁড়ান প্রমিত।
এর পরে স্বস্তিকা আর কোনো দিন বিয়ে করেননি। মা (গোপা মুখোপাধ্যায়), বাবা (সন্তু মুখোপাধ্যায়),
বোন (অজপা মুখোপাধ্যায়), মেয়ে (অন্বেষা)-কে নিয়েই তিনি সংসার গুছিয়ে নিয়েছিলেন। প্রমিত
এবং স্বস্তিকার একমাত্র সন্তান অন্বেষা আজ তার মায়ের বড় সম্বল।
তবে
সম্পর্ক হয়েছে। জীবনে পুরুষ এসেছে, গিয়েছে। বারবার কষ্টও পেয়েছেন স্বস্তিকা। কিন্তু
প্রেমের মতো স্বাভাবিক ও সহজ বিষয়কে কোনো দিন লুকিয়ে রাখেননি তিনি। সকলের সামনেই ভালোবেসেছেন।
পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়, সৃজিত মুখোপাধ্যায়, সুমন মুখোপাধ্যায়, জিৎ, দিব্যেন্দু মুখোপাধ্যায়,
মীর আফসার আলি—টালিউডের একাধিক পুরুষের সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়েছেন তিনি। যদিও
মীরের সঙ্গে স্বস্তিকার সম্পর্ক গুজব কি না, তা নিয়ে এখনও প্রশ্ন রয়েছে অনেকের মনে।
পর্দায়
তিনি জুটি বেঁধেছেন অনেক নায়কের সঙ্গে। কিন্তু তার পাশে যিনি সব সময়ে ছিলেন, আছেন এবং থাকবেন; তিনি অন্বেষা। স্বস্তিকার মেয়ে। ইন্ডাস্ট্রিতে এসেছিলেন কোলে মেয়ে নিয়ে। যে
সময়ের কথা হচ্ছে, সেই সময়ের সমাজে নায়িকাদের নিয়ে বিভিন্ন তত্ত্ব ছিল। অভিনেত্রীদের
বিয়ে যাওয়া মানে বয়স বেড়ে যাওয়া। সন্তান হয়ে গেলে তো আর কথাই নেই! আজ মেয়ের বয়স ২১
বছর। মা ৪১। অসমবয়সী দুই বন্ধুর বিভিন্ন মুহূর্তের ছবি বারবার নেট মাধ্যমে ভেসে ওঠে।
বাণিজ্যিক
ছবিতে নাচ-গান করেই তিনি বিখ্যাত হয়েছেন বটে। কিন্তু ধীরে ধীরে চিত্রনাট্য বেছে নেয়ার
দিকে খুঁতখুঁতে হলেন স্বস্তিকা। এক দিকে যেমন তার ঝুলিতে রয়েছে ‘মস্তান’,
‘ক্রান্তি’, ‘সাথিহারা’র মতো ছবি। অন্য দিকে রয়েছে ‘০৩৩’,
‘ভূতের ভবিষ্যৎ’, ‘আমি আর আমার গার্লফ্রেন্ডস’,
‘জাতিস্মর’, ‘তবে তাই হোক’ও।
অভিনয়
ক্ষমতার জেরে আরব সাগরের পাড়ে পৌঁছে গিয়েছেন তিনি। মুম্বাইয়ের টিনসেল নগরীতে প্রয়াত
অভিনেতা সুশান্ত সিং রাজপুতের সঙ্গে ‘ডিটেক্টিভ ব্যোমকেশ বক্সি’,
‘দিল বেচারা’ থেকে শুরু করে হিন্দি ওয়েব সিরিজ ‘ব্ল্যাক উইডো’,
‘পাতাললোক’-এ কাজ করে বিশেষ নজর কেড়েছেন।
বিতর্ক
তার ছায়াসঙ্গী। কিন্তু অভিনয় ক্ষমতা এবং ব্যক্তিজীবনে তার আত্মবিশ্বাসের জন্য দর্শকের
অফুরান ভালোবাসা পেয়েছেন।
এস/এএমকে/এম. জামান