• ঢাকা শনিবার
    ২৩ নভেম্বর, ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

মান্না দে’র প্রয়াণ দিবস আজ

প্রকাশিত: অক্টোবর ২৪, ২০২১, ০৮:৫৩ পিএম

মান্না দে’র প্রয়াণ দিবস আজ

বিনোদন ডেস্ক

আধুনিক বাংলা গানের জগতে সব স্তরের শ্রোতার কাছে মান্না দে অত্যন্ত প্রিয় একটি নাম। হিন্দি, বাংলা, মারাঠি, গুজরাটিসহ অজস্র ভাষায় সঙ্গীতচর্চা করেছেন তিনি। বৈচিত্র্যের বিচারে তাকেই হিন্দি গানের ভুবনে সবর্কালের সেরা গায়ক হিসেবে স্বীকার করা হয়। উপমহাদেশীয় এই কিংবদন্তি কণ্ঠশিল্পীর প্রয়াণ দিবস আজ। ২০১৩ সালের ২৪ অক্টোবর মৃত্যুবরণ করেন তিনি।

দীর্ঘদিনের ক্যারিয়ারে মান্না দে সাড়ে তিন হাজারেরও বেশি গান রেকর্ড করেন। তার গাওয়া অসংখ্য কালজয়ী গান এখনও শ্রোতা-ভক্তদের মুখে মুখে।

মান্না দের আসল নাম প্রবোধ চন্দ্র দে। ১৯১৯ সালের ১ মে কলকাতায় জন্মগ্রহণ করেন তিনি। ডাক নাম মানা থেকে তিনি মান্না হয়ে ওঠেন। বৈচিত্র্যের বিচারে তাকে ভারতীয় গানের ভুবনে সবর্কালের অন্যতম সেরা গায়ক হিসেবে স্বীকার করেন সঙ্গীত বোদ্ধারা। তার স্মরণে উত্তর কলকাতায় তার বাসস্থানের কাছে মর্মর মূর্তি স্থাপন করা হয়েছে।

মাত্র ২৩ বছর বয়সে ১৯৪২ সালে কাকা কৃষ্ণ চন্দ্র দে'র হাত ধরে বলিউডের সিনেমায় অভিষেক হয় মান্না দে'র। কাকার সঙ্গীত পরিচালনায় 'তামান্না' সিনেমায় প্রথম একটি ডুয়েট গানে কণ্ঠ দেন তিনি। একক গায়ক হিসেবে 'রামরাজ্য' সিনেমায় প্রথম সুযোগ আসে। ১৯৪৩ সালে সেই সিনেমায় 'গায়ি তু তো গায়ি সীতা সতী' গানে কণ্ঠ দেন তিনি।

১৯৫০ সালের 'মাশাল' সিনেমার মাধ্যমে শচীন দেববর্মণের সঙ্গে মান্না দে'র জুটি তৈরি হয়। ভারতজুড়ে মান্না দে জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন ১৯৫৩ সালে 'দো বিঘা জমিন' সিনেমা মুক্তির পর। সলিল চৌধুরীর সুর ও সংগীতে এই সিনেমার গানেই জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন তিনি।

২০০৫ সালে বাংলাভাষায় তার আত্মজীবনী জীবনের জলসাঘরেপ্রকাশিত হয়। পরে এটি ইংরেজিতে মেমরিজ কাম এলাইভ’, হিন্দিতে ইয়াদেন জি ওথিএবং মারাঠি ভাষায় জীবনের জলসাঘরেনামে অনূদিত হয়েছে। মান্নাদে'র জীবন নিয়ে জীবনের জলসাঘরেনামে একটি তথ্যচিত্র ২০০৮ সালে মুক্তি পায়। মান্না দে সঙ্গীত একাডেমি মান্না দের সম্পূর্ণ আর্কাইভ বিকশিত ও রক্ষণাবেক্ষণ করছে। রবীন্দ্র ভারতী বিশ্ববিদ্যালয়, কলিকাতা সঙ্গীত ভবনে মান্না দের সঙ্গীত সংরক্ষণের উদ্যোগ নিয়েছে।

সঙ্গীত জগতে মান্না দের অসামান্য অবদানের কথা স্বীকার করে ভারত সরকার ১৯৭১ সালে পদ্মশ্রী, ২০০৫ সালে পদ্মবিভূষণ এবং ২০০৯ সালে দাদাসাহেব ফালকে সম্মান দিয়েছে। ২০১১ সালে পশ্চিমবঙ্গ সরকার তাকে রাজ্যের সর্বোচ্চ অসামরিক সম্মান বঙ্গবিভূষণপ্রদান করে।

যদি কাগজে লিখ নাম, কতদিন দেখিনি তোমায়, খুব জানতে ইচ্ছে করে, সবাই তো সুখী হতে চায়, আবার হবে তো দেখা, এই কূলে আমি আর ওই কূলে তুমি, তীর ভাঙা ঢেউ আর নীড় ভাঙা ঝড়, পৌষের কাছাকাছি রোদমাখা সেই দিন, শাওন রাতে যদি, সে আমার ছোট বোন, জানি তোমার প্রেমের যোগ্য আমি তো নই, ক ফোঁটা চোখের জল, কফি হাউসের সেই আড্ডাটা আজ আর নেইসহ বহু কালজয়ী ও শ্রোতাপ্রিয় গান তিনি উপহার দিয়ে গেছেন বাংলা গানের রাজ্যে।

২০১৩ সালের ৮ জুন ফুসফুসের জটিলতার জন্য মান্না দে ব্যাঙ্গালোরে একটি হাসপাতালের আইসিইউ-তে ভর্তি হন। তার পরের দিন ৯ জুন তার মৃত্যুর গুজব রটে। ডাক্তাররা এই গুজবের অবসান ঘটান এবং নিশ্চিত করেন যে তিনি তখনও বেঁচে আছেন। তবে তার অবস্থার বেশ অবনতি হয় এবং আরও কিছু নতুন জটিলতা দেখা দেয়। পরে ডাক্তাররা তার অবস্থার কিছুটা উন্নতি হয়েছে বলে জানিয়েছিলেন। অবশেষে মান্না দে ২৪ অক্টোবর ২০১৩ সালে ব্যাঙ্গালোরে মৃত্যুবরণ করেন।

জেডআই/ডাকুয়া

আর্কাইভ