প্রকাশিত: মে ১১, ২০২১, ০৭:১৬ পিএম
জনি
আর সারা কিউট কাপল।
জনির মতে সারা হলো
তার লাকিচার্ম। তাই তারা নিয়ম
করে রোজ একবার দেখা
করে। কিন্তু এই দেখাদেখিতেই বাদ
সাধল লকডাউন। বাসা থেকে সারার
বের হওয়া বন্ধ। জনিও
তাই সারা দিন বিরক্ত
হয়ে থাকে।
জনির
রুমমেট রাকিব মজা করে বলে,
সারা হচ্ছে আসলে ময়ূরের পালক।
যেই পালক খসে গিয়েছে
তাই জনি কাকের মতো
চেঁচাচ্ছে। এর মাঝেই আসে
জনির জন্মদিন। সারা বলে আজ
সে জনির সাথে দেখা
করবেই। বাইরে কোথাও দেখা করা করোনার
জন্য আনসেফ তাই সে জনির
বাসায় আসবে। এ কথা শুনেই
জনির মাথায় ভেসে ওঠে দজ্জাল
বাড়িওয়ালা দিদারের কথা। লোকটা জীবনে
বিয়ে করেনি আর মেয়েদের কেন
যেন সহ্য করতে পারে
না। রাকিব উপায় বের করে,
দিদার প্রতিদিন বিকেলে মাঠে যায় জগিং
করতে। ওই ২ ঘণ্টার
মধ্যে সারা যদি এসে
চলে যায়, তাহলে সমস্যা
নেই। সারা খুশি হয়,
সে বান্ধবীর বাসায় যাবে বলে ম্যানেজ
করে নেবে।
জন্মদিনের
দিন জনির বাসায় আসে
সারা। রাকিব সারাকে কমপ্লেন করে, সারার সাথে
দেখা না হওয়ায় জনি
কী ভী ভাবে তার
ওপর অত্যাচার করেছে। সারা জনিকে কান
ধরে উঠবস করায়। হাসিঠাট্টার
মধ্যেই কেক কাটার আয়োজন
হয়। জনি মোমবাতিতে ফুঁ
দেয়ার আগেই, নিচে হৈ-হুল্লোড়
শোনা যায়। জনি ভাবে
দিদার আঙ্কেল চলে এলো নাকি!
রাকিব নিচে দেখতে যায়।
জনি সারাকে লুকাতে ব্যস্ত হয়ে পড়ে। রাকিব
এসে বলে, এই এলাকায়
করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে।
গলির দুই দিকেই বাঁশ
বেঁধে দিয়েছে। পরের নির্দেশনা পাওয়া
পর্যন্ত, এলাকাতে কেউ ঢুকতে বা
বেরোতে পারবে না।
সারার
মুখ কাঁদো কাঁদো হয়ে যায়। সে
বলে, না আমি এখানে
থাকব না, আমার মা-বাবা খুন করে
ফেলবে। জনিও মাথায় হাত
দিয়ে বসে পড়ে। সারাকে
বলে তুমি এখানে থাকতে
পারবেও না। দিদার আঙ্কেল
তোমাকে দেখলে আমাদের খুন করে ফেলবে।
এর মাঝেই দিদার এসে সরাসরি জনিদের
বাসাতেই ঢোকে। সারাকে লুকানো হয় ওয়াশরুমে। দিদার
করোনা নিয়ে নানা রকম
গল্প শুরু করে, এ
দিকে সারার বাথরুমে করুণ অবস্থা। রাকিবের
আন্ডার ওয়ার ঝোলানো, প্যানে
কী যেন লেগে আছে।
এসব দেখে সারার বমি
পায়। বমির শব্দ হলে,
রাকিব গলায় আঙুল দিয়ে
বমি করতে শুরু করে
যাতে দিদারের সন্দেহ না হয়।
দিদার
টিভি চালাতে বলে, নিউজ দেখবে।
জনিকে চা করতে বলে।
এর মাঝেই সে ওয়াশরুমে যেতে
গেলে জনি কোনো মতে
আটকায়। সারাকে বের করে জনি
লুকায় বেডরুমে। দিদার আবার সিগারেট খাবে
বলে বেডরুমের ব্যালকনিতে যায়। এভাবেই চলতে
থাকে টম অ্যান্ড জেরির
খেলা। শেষে জনি আর
রাকিব দিদারকে তার ঘরে পাঠায়,
কিন্তু হাঁফ ছাড়ার সুযোগ
পায় না।
সারার
বাসা থেকে ফোন এলে
রাকিব বান্ধবী সেজে মেয়ের গলায়
কথা বলে। সারা বলে,
এভাবে বাবা-মাকে বেশিক্ষণ
থামানো যাবে না। রাত
বেশি হলে বাবা বান্ধবীর
বাসায় চলে যাবে না
হলে বান্ধবীর বাবাকে ফোন দেবে। তিনজনেই
টেনশনে পড়ে। রাকিব বলে,
যদি বান্ধবীর বাবাকে পাওয়া যায় তাহলে আজ
রাতটা সামলানো যাবে আর ভোরে
লুকিয়ে সারাকে দিয়ে আসা যাবে।
জনি বলে, বাবা কই
পাবো! রাকিব ভয়ে ভয়ে বলে
দিদার। শেষে তিনজনে দিদারের
কাছে যায়, কিন্তু দিদার
সারার ওপর এতটুকুও চিৎকার
না করে, ওদের সাহায্য
করবে বলে।
জনিরা
জানতে পারে দিদার ছোটবেলায়
যাকে ভালোবাসত তার নাম ছিল
সারা। পরে সারা তাকে
ছ্যাঁকা দিয়ে ছিল। সারা
করুণ মুখে বলে সে
জনিকে ছ্যাঁকা দেবে না। দিদার
খুশি হয়ে ফোনে কথা
বলে সারার বাবাকে সামলায় আর জনিরা মিথ্যা
বলেছে বলে সারা রাত
ছাদে ঘুমানোর শাস্তি দেয়। শেষে সারাকে
রাতে জনিদের ঘরে থাকতে বলেন
আর যখন ইচ্ছা আসার
অনুমতি দেন। তিনি সকালে
নিজে সারাকে বাড়ি দিয়ে আসবেন
কথা দেন। বাড়িওয়ালার চাপ
মুক্তির জন্য জনিরা সারাকে
থ্যাংকস দেয়। মশার কামড়
খেতে খেতে ছাদে জনি
স্বপ্নে ডুবে যায়, দেখে
তার আর সারার বিয়েতে
কাজি সেজেছে দিদার।
মুনতাহা
বৃত্তার রচনা ও রাইসুল
তমালের পরিচালনায় 'লকডাউন প্রেম' শিরোনামের ঈদের একটি নাটকে
জুটি বেঁধেছেন জোভান ও সাফা কবির।
ঈদের তৃতীয় দিন রাত ১১টা
৫ মিনিটে আরটিভিতে প্রচারিত হবে নাটকটি।
সবুজ/এম. জামান