প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ৬, ২০২১, ০৩:১২ পিএম
ঢাকাই চলচ্চিত্রের অনেক জনপ্রিয় তারকাই
দর্শকদের কাঁদিয়ে চিরবিদায় নিয়েছেন। তাদের মধ্যে অন্যতম চিত্রনায়ক সালমান শাহ। তার চলে
যাওয়ার ২৫ বছর আজ।
কিন্তু এত বছরেও তার
মৃত্যু নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্বে ভক্তকুল। ক্ষণজন্মা নায়কের চলে যাওয়া মানতে
নারাজ অনেকেই। অপমৃত্যু নাকি হত্যা, তা
নিয়ে রয়েছে ভিন্নমত। এত বছরেও অনাস্থায়
আটকে আছে সালমান শাহ
হত্যা মামলা।
১৯৯৬
সালের ৬ সেপ্টেম্বর এই
দিনে মারা যান ‘কেয়ামত
থেকে কেয়ামত’ ছবির এ নায়ক।
ওই ঘটনায় প্রথমে অপমৃত্যুর মামলা করেন সালমান শাহের
বাবা কমরউদ্দিন আহমদ চৌধুরী। ছেলেকে
হত্যা করা হয়েছে, এমন
অভিযোগ এনে ১৯৯৭ সালের
২৪ জুলাই অপমৃত্যুর মামলাটি হত্যা মামলায় রূপান্তর করার আবেদন জানান
কমরউদ্দিন। এই অভিযোগের বিষয়টি
তদন্ত করতে পুলিশের গোয়েন্দা
শাখাকে (সিআইডি) নির্দেশ দেন আদালত।
সিআইডি
ছাড়াও একাধিক তদন্ত সংস্থা তাদের চূড়ান্ত তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলও করেন। তবে এসব চূড়ান্ত
প্রতিবেদন মেনে নিতে পারেনি
তার পরিবার ও ভক্তরা। এ
দিকে আদালতের প্রতিটি ধার্য তারিখে আদালতের সামনে সালমান শাহ হত্যার বিচারের
দাবিতে মানববন্ধন করে ভক্ত-অনুরাগীরা।
সর্বশেষ
২০২০ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি আদালতে
৬০০ পৃষ্ঠার একটি চূড়ান্ত প্রতিবেদন
জমা দেন মামলার তদন্ত
কর্মকর্তা পিবিআই’র পুলিশ পরিদর্শক
সিরাজুল ইসলাম। চূড়ান্ত প্রতিবেদনে তদন্ত কর্মকর্তা উল্লেখ করেন, চিত্রনায়ক সালমান শাহ পারিবারিক কলহের
জের ধরে আত্মহত্যা করেন।
সর্বশেষ
গত ৩১ আগস্ট ঢাকার
মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মামুনুর রশিদের আদালতে মামলাটি চূড়ান্ত প্রতিবেদন গ্রহণের জন্য ধার্য ছিল।
কিন্তু সালমান শাহর মা লন্ডনে
থাকায় নারাজি দাখিলে সময়ের আবেদন করেন তার আইনজীবী
ফারুক আহমেদ। আদালত সময় আবেদন মঞ্জুর
করে শুনানির জন্য আগামী ৩১
অক্টোবর দিন ধার্য করেন।
এর
আগে সালমান শাহর বাবার করা
হত্যা মামলার তদন্ত শেষে ১৯৯৭ সালের
৩ নভেম্বর আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেয় সিআইডি। প্রতিবেদনে
এ ঘটনাকে আত্মহত্যা বলে উল্লেখ করা
হয়। ওই বছরের ২৫
নভেম্বর ঢাকার সিএমএম আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন গৃহীত হয়। তবে সিআইডির
এই তদন্ত প্রতিবেদন প্রত্যাখ্যান করে সালমানের বাবা
কমরউদ্দিন আহমদ চৌধুরী রিভিশন
মামলা করেন।
২০০৩
সালের ১৯ মে মামলাটি
বিচার বিভাগীয় তদন্তে পাঠান আদালত। এরপর প্রায় ১৫
বছর মামলাটি বিচার বিভাগীয় তদন্তে ছিল। ২০১৪ সালের
৩ আগস্ট ঢাকার সিএমএম আদালতের বিচারক বিকাশ কুমার সাহার কাছে বিচার বিভাগীয়
তদন্তের প্রতিবেদন দাখিল করেন মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট
ইমদাদুল হক। এ প্রতিবেদনে
সালমান শাহের মৃত্যুকে অপমৃত্যু হিসেবে উল্লেখ করা হয়।
২০১৪
সালের ২১ ডিসেম্বর সালমান
শাহের মা নীলা চৌধুরী
ছেলের মৃত্যুতে বিচার বিভাগীয় তদন্ত প্রতিবেদন প্রত্যাখ্যান এবং ওই প্রতিবেদনের
বিরুদ্ধে নারাজি দেবেন বলে আবেদন করেন।
২০১৫ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি নীলা
চৌধুরী ঢাকা মহানগর হাকিম
জাহাঙ্গীর হোসেনের আদালতে বিচার বিভাগীয় তদন্ত প্রতিবেদনের বিষয়ে নারাজির আবেদন দাখিল করেন।
নারাজি
আবেদনে উল্লেখ করা হয়, আজিজ
মোহাম্মদ ভাইসহ ১১ জন তার
ছেলে সালমান শাহের হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকতে পারেন।
মামলাটি এরপর র্যাব
তদন্ত করে। তবে র্যাবের মাধ্যমে তদন্তের আদেশের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ মহানগর দায়রা জজ আদালতে একটি
রিভিশন মামলা করে।
২০১৬
সালের ২১ আগস্ট ঢাকার
বিশেষ জজ ৬-এর
বিচারক ইমরুল কায়েশ রাষ্ট্রপক্ষের রিভিশনটি মঞ্জুর করেন। পরে র্যাবকে
মামলাটি আর তদন্ত না
করার আদেশ দেন। এরপর
থেকে মামলাটি তদন্তের দায়িত্বে আছে পুলিশ ব্যুরো
অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।
টিআর/এম. জামান