প্রকাশিত: নভেম্বর ২৯, ২০২৩, ০১:৪৩ এএম
সরকারি-বেসরকারি স্কুলে ভর্তিতে ডিজিটাল লটারির ফল প্রকাশ করা হয়েছে আজ মঙ্গলবার (২৮ নভেম্বর)। আগামীকাল বুধবার (২৯ নভেম্বর) থেকে স্কুলগুলোতে ভর্তি শুরু হবে। তবে, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর থেকে ভর্তির তারিখ নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়নি। মাউশি বলছে, যেদিন থেকে স্কুলগুলো ভর্তি শুরু করবে সেদিন থেকে ৫ দিনের মধ্যে মেধাতালিকায় থাকা শিক্ষার্থীদের ভর্তি শেষ করতে হবে। এরপর প্রথম অপেক্ষমাণ তালিকা (ওয়েটিং লিস্ট) থেকে ভর্তি করাতে হবে চারদিনের মধ্যে। আর দ্বিতীয় অপেক্ষমাণ তালিকা থেকে ভর্তি করাতে স্কুলগুলো সময় পাবে ৩ দিন। তবে, এই তিন তালিকার শিক্ষার্থীদের ভর্তির জন্য স্কুলগুলোর শেষ সময় ১৪ ডিসেম্বর।
এ বিষয়ে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) পরিচালক (বিদ্যালয়) বেলাল হোসাইন সিটি নিউজ ঢাকাকে বলেন, আমরা মেধাতালিকার পাশাপাশি প্রথম ও দ্বিতীয় অপেক্ষমাণ তালিকা প্রকাশ করেছি। স্কুলগুলো আগামীকাল বুধবার থেকে ভর্তি শুরু করতে পারবে। দু’একদিন পরও শুরু করতে পারবে। তবে, ভর্তি শেষ করতে সময় পাবে ৫ দিন। এরপর প্রথম অপেক্ষমাণ তালিকার ভর্তি করাতে ৪ দিন ও দ্বিতীয় অপেক্ষমাণ তালিকার ভর্তি করাতে তিন দিন সময় দেওয়া হয়েছে। তবে, কোনোভাবেই ১৪ ডিসেম্বরের পরে ভর্তি করানো যাবে না।
এদিকে মাউশির বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ডিজিটাল লটারিতে নির্বাচিত শিক্ষার্থীদের ফলাফল শিট (অপেক্ষমাণ তালিকাসহ) এরই মধ্যে সংশ্লিষ্ট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। ফলাফল শিটের প্রথম তালিকা অনুযায়ী- আগামী পাঁচ কর্মদিবসের মধ্যে ভর্তি সম্পন্ন করতে হবে। এরপর আসন শূন্য থাকা সাপেক্ষে অপেক্ষমাণ তালিকা থেকে ভর্তি শুরু করতে হবে।
এতে জানানো হয়, প্রথম তালিকা থেকে ভর্তির পরবর্তী ৪ কর্মদিবস প্রথম অপেক্ষমাণ তালিকা থেকে ভর্তি করা হবে। তারপরের তিন দিনে দ্বিতীয় অপেক্ষমাণ তালিকা থেকে ক্রমিক নম্বর অনুসারে ভর্তি সম্পন্ন করতে হবে।
শিক্ষার্থী যাচাই যেভাবে
কেন্দ্রীয় ডিজিটাল লটারির আওতাভুক্ত সরকারি-বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধানদের https://gsa.teletalk.com.bd লিংকে প্রবেশ করে প্রতিষ্ঠানের ইউজার আইডি ও পাসওয়ার্ড দিয়ে লগইন করে ডাউনলোড অপশনে ক্লিক করতে হবে। এরপর ওই প্রতিষ্ঠানে কারা আবেদন করেছিল, সেই তালিকা পাওয়া যাবে।
ডিজিটাল লটারিতে তার প্রতিষ্ঠানের জন্য নির্বাচিত প্রথম তালিকা এবং প্রথম অপেক্ষমাণ তালিকার শিক্ষার্থীদের আবেদনসংক্রান্ত তথ্য এ লিংক থেকে যাচাই করতে পারবেন। লিংকে তথ্যাদি টাইপ করে সাবমিট করলে আবেদনকারী কতবার আবেদন করেছে, তাও জানা যাবে। এক্ষেত্রে কোনো আবেদনকারী তথ্য পরিবর্তন করে একাধিকবার আবেদন করে থাকলে ডিজিটাল লটারিতে তার ভর্তির নির্বাচন বাতিল বলে গণ্য হবে। সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান তাদের ওয়েবসাইটে এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নোটিশ বোর্ডে নির্বাচিতদের তালিকা প্রদর্শন করবেন।
ভর্তির জন্য যেসব কাগজপত্র লাগবে
নির্বাচিত শিক্ষার্থীদের কাগজপত্র যাচাইকালীন শিক্ষার্থীর জন্মসনদের মূল কপি, জন্ম-সনদের অনলাইন কপি (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে অনলাইনে যাচাই করতে হবে)। পিতা-মাতার জাতীয় পরিচয়পত্রের (এনআইডি) মূল কপি ভালো করে দেখতে হবে।
যেসব কারণে বাদ পড়বেন নির্বাচিতরা
ভর্তির সময়ে লটারির মাধ্যমে নির্বাচিত শিক্ষার্থীদের কাগজপত্র পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে যাচাই করার নির্দেশনা দিয়েছে মাউশি। কেউ যদি মিথ্যা তথ্য দিয়ে লটারির মাধ্যমে নির্বাচিত হয়ে থাকলে (যাচাই সাপেক্ষে) তাকে ভর্তি করা যাবে না।
কোটার ক্ষেত্রে যেসব নিয়ম প্রযোজ্য
শিক্ষা মন্ত্রণালয় কর্তৃক সর্বশেষ জারি করা ভর্তি নীতিমালায় যেসব কোটা সংরক্ষিত রয়েছে, ভর্তির সময়ে ওইসব কোটায় নির্বাচিত শিক্ষার্থীদের কোটা সংশ্লিষ্ট কাগজপত্র যথাযথভাবে যাচাই করতে হবে। শুধু মুক্তিযোদ্ধা কোটা ছাড়া অন্য কোটায় শূন্য আসন পূরণ না হলে সাধারণ নির্বাচিত শিক্ষার্থীদের মধ্য থেকে অপক্ষেমাণ তালিকার ক্রমানুসারে শূন্য আসন পূরণ করতে হবে। কোনোভাবেই আসন শূন্য রাখা যাবে না।
মাউশির নির্দেশনা অনুসরণ না করে বিধিবহির্ভূতভাবে কোনো শিক্ষার্থী ভর্তি করা হলে এবং পরে তা প্রমাণিত হলে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানপ্রধানকে দায়ী থাকবেন বলেও নির্দেশনায় উল্লেখ করা হয়।
এর আগে মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বোতাম টিপে লটারি কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। ফলাফল প্রস্তুত করা হয় সম্পূর্ণ সফটওয়্যারের মাধ্যমে। এদিন দুপুর ২টার দিকে লটারির ফল আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করা হয়।
লটারির ফলাফল ই-মেইলে স্কুলপ্রধানদের কাছে পাঠিয়ে দিয়েছে মাউশি। আর শিক্ষার্থীরা কে, কোন স্কুলে ভর্তির সুযোগ পেয়েছে- সেটা আবেদনের সময় তাদের দেওয়া মোবাইল নম্বরে এসএমএস করে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। পর্যায়ক্রমে মনোনীত সবাই এসএমএস পাবে।
প্রকাশিত ফলাফলে দেখা গেছে, দেশের ৬৫৮টি সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে শূন্য আসন ছিল এক লাখ ১৮ হাজার ১০১টি। বিপরীতে আবেদন করেছিল ৫ লাখ ৬৩ হাজার ১৩ জন। তাদের মধ্যে প্রথম দফায় এক লাখ ৩৯ জনকে ভর্তির জন্য মনোনীত করা হয়েছে। এরমধ্যে ৫৩ হাজার ১১ জন ছাত্র ও ৪৭ হাজার ২৬ জন ছাত্রী। তৃতীয় লিঙ্গের রয়েছে দুজন।
অন্যদিকে বেসরকারি মাধ্যমিকে প্রথম থেকে নবম শ্রেণিতে ভর্তির সুযোগ পেয়েছে ২ লাখ ৫ হাজার ৪৮৯ জন শিক্ষার্থী। দেশের মহানগর ও জেলা সদর পর্যায়ের ৩ হাজার ১৮৮টি বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রথম থেকে নবম শ্রেণিতে তারা ভর্তির জন্য নির্বাচিত হয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানে শূন্য আসন রয়েছে ১০ লাখ ৩ হাজার ৯৯৩টি।
সিটি নিউজ ঢাকার ভিডিও দেখতে ক্লিক করুন
জেকেএস/