• ঢাকা রবিবার
    ২২ ডিসেম্বর, ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১

পরীক্ষার্থীদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ কিছু দিক-নির্দেশনা

প্রকাশিত: এপ্রিল ২৮, ২০২৩, ০৮:৪১ পিএম

পরীক্ষার্থীদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ কিছু দিক-নির্দেশনা

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

আর কদিন পর এসএসসি পরীক্ষা। পরীক্ষা নিয়ে ছাত্র-অভিভাবক অনেকেরই অনেক ভয় বা আতঙ্ক থাকে। তাদের জন্যই এই লেখা। শিক্ষার্থীরা এখন নিশ্চয়ই রিভিশন দেয়া শুরু করেছ। পরীক্ষার রুটিন দেখে কবে কোন বিষয়ের রিভিশন দিবে তা দ্রুত ঠিক করে নাও।

দুই বছর ধরে অনেক পড়েছ, তাই পরীক্ষার আগের রাতে কম পড়লেও সমস্যা হবে না। শুধু পরীক্ষার আগের রাতে পড়েই ভালো পরীক্ষা দেওয়ার মতো অবস্থা তৈরি হবে বলে আমি মনে করি না। পরীক্ষার আগের রাতে শুধু পৃষ্ঠা উল্টিয়ে পড়াগুলো রিভিশন দিবে। যাতে কী কী পড়েছ সেগুলো মস্তিষ্ককে স্মরণ করিয়ে দেওয়া হয়।

পরীক্ষার আগের রাতে ও পরীক্ষা চলাকালীন দিনগুলোতে খাবার-দাবারের দিকে বিশেষ খেয়াল রাখতে হবে। অনেকে আছে যে বিরিয়ানি বা এ ধরনের ভারী খাবার পছন্দ করে- যা মোটেই পরীক্ষার সময় স্বাস্থ্যকর নয়।

পরীক্ষার আগের রাতে তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে পড়ার পরামর্শ দিব। যাতে শান্ত মনে পরীক্ষার হলে পৌঁছাতে পার, ঠান্ডা মাথায় পরীক্ষা দিতে পার। অভিভাবকরা লক্ষ রাখবেন, পরীক্ষার্থী যেন সুস্থভাবে পরীক্ষার হলে যেতে পারে।

পরীক্ষার হলে যাওয়ার আগে কিছু বিষয় অবশ্যই খেয়াল রাখতে হয়। তা হলো, আমি প্রবেশপত্র নিলাম কিনা, প্রয়োজনীয় কলম-পেন্সিল, রাবার, এছাড়া আনুষঙ্গিক যে বিষয়গুলো আছে সেগুলো আগের রাতে ঠিকঠাক করে রাখা। যাতে পরীক্ষার দিন সকাল বেলা কোনো ধরনের তাড়াহুড়া করা না লাগে।

যারা ঢাকা শহরে থাক তাদেরকে একটি বিষয় খেয়াল রাখা বাঞ্ছনীয়, সেটা হলো ঢাকা শহরের ট্রাফিক জ্যাম। হাতে পর্যাপ্ত সময় নিয়ে বাসা থেকে বের হতে হবে, যেন পরীক্ষার কমপক্ষে ৩০ মিনিট আগে পরীক্ষার কেন্দ্রে উপস্থিত হতে পার। আর যদি দেরি হয়ে যায় তাহলে দুশ্চিন্তা না করে সুস্থিরভাবে পরীক্ষা দেওয়া শুরু করবে। পরীক্ষার প্রথমদিন অবশ্যই একটু আগে যাবে, সিট কোন কক্ষে পড়েছে তা জানার জন্য।

‘আমি উত্তর দিতে পারব’, এই আত্মবিশ্বাস নিয়ে যদি কেউ হলে ঢোকে তাহলে যে প্রশ্নই আসুক না কেন, যেভাবেই প্রশ্ন আসুক, সে উত্তর দিতে পারবে। শিক্ষার্থীরা যদি পরীক্ষাভীতি না রেখে পরীক্ষার হলে বসতে পারে, তাহলে আমার মনে হয় তারা ভালো নম্বর পেতে পারে।

পরীক্ষার হলে বসার পরে সময় ব্যবস্থাপনার দিকে খেয়াল রাখতে হবে। কতগুলো প্রশ্ন আছে, আর কতগুলো প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে, সেই হিসাবে সময় বণ্টন করে লিখতে হবে। একটা প্রশ্ন খুব ভালোভাবে লিখলাম, আর লিখে বেশি সময় নিয়ে ফেললাম। আর বাকি প্রশ্নগুলোর উত্তর ভালোভাবে দিতে না পারার চেয়ে সবগুলো প্রশ্ন সমানভাবে গুরুত্ব দিয়ে লিখলে বেশি নম্বর পাওয়া যাবে। প্রশ্নের চাহিদা অনুযায়ী সব প্রশ্নের উত্তর গুছিয়ে লিখে আসতে হবে। পরীক্ষার হলে সময় ব্যবস্থাপনা খুব গুরুত্বপূর্ণ একটা বিষয়।

অনেকে মনে করে বেশি লিখলে বেশি নাম্বার পাওয়া যাবে। ব্যাপারটি সঠিক নয়। গুরুত্বপূর্ণ হলো প্রশ্নটা বোঝা। আমি যদি প্রশ্নটা বুঝি আর সে আলোকে গুছিয়ে উত্তর লিখতে পারি, তাহলে সেটাতেই ভালো নম্বর পাওয়া যাবে। কারণ আমাকে মনে রাখতে হবে যে আমার হাতে সময় সীমাবদ্ধ। অল্প সময়ের মধ্যেই পরীক্ষার খাতায় প্রশ্নের উত্তর গুছিয়ে লিখতে হবে।

প্রশ্নের উত্তর গুছিয়ে লিখতে পারলে পরীক্ষক মূল্যায়ন করবে যে পরীক্ষার্থী প্রশ্নটি বুঝেছে কিনা, যাচাই করেছে কিনা। আমি যদি কোনো প্রশ্নের উত্তর গুছিয়ে অল্প পৃষ্ঠায় দিতে পারি আলহামদুলিল্লাহ। আবার কোনো প্রশ্নের উত্তর অনেক পৃষ্ঠায় লিখলাম, কিন্তু গুছিয়ে লিখতে পারলাম না, অপ্রাসঙ্গিক লিখলাম। তাহলে শুধু লিখে পৃষ্ঠা ভরা হবে, নম্বর বেশি উঠবে না।


আরেকটা বিষয় খুব গুরুত্বপূর্ণ, তা হলো হাতের লেখা সুন্দর ও বানান সঠিক হওয়া। পরীক্ষার খাতায় হাতের লেখা যদি স্পষ্ট বোঝা যায় তাহলে যিনি পরীক্ষক তার জন্য খাতার লেখা বুঝতে সুবিধা হবে। বানান যদি সঠিক না থাকে, পরীক্ষকের কাছে বিষয়টা বিব্রতকর মনে হয়, স্বভাবতই নম্বর কমে যায়। আরেকটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, খাতার পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা। অনেক শিক্ষার্থী খাতায় ভুল হলে একটানে কেটে দেয়, আবার অনেকে হিজিবিজি করে অনেক কালি দিয়ে কাটে। যে একটানে কেটে দেয়, সেটাও কাটা। আর যে হিজিবিজি করে অনেক বেশি কাটে সেটাও কাটা।

বেশি কাটাকটি করলে খাতাটা দেখতে সুন্দর লাগে না। একটা কথা আছে, আগে দর্শনধারী পরে গুণবিচারী। একটা খাতা যখন অনেক কাটাছেঁড়া, অনেক অগোছালো লেখা, বানান ভুল, লেখার লাইনগুলোও বাঁকা- তখন পরীক্ষক মনে করেন শিক্ষার্থী ভালো নয়। তাই নম্বর কমে আসতে পারে।

আশা করি উপরের বিষয়গুলো শিক্ষার্থীরা যদি মেনে চলে এবং অভিভাবকরা যদি তাদের বোঝাতে সক্ষম হন, আসন্ন মাধ্যমিক পরীক্ষায় শিক্ষার্থীরা আশানুরূপ ভালো ফলাফল অর্জন করতে পারবে।


এডিএস/

শিক্ষা সম্পর্কিত আরও

আর্কাইভ