প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ২৮, ২০২৩, ০৩:০৬ এএম
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) নবীন শিক্ষার্থী ফুলপরিকে নির্যাতন ও বিবস্ত্র করে ভিডিও ধারণের ঘটনায় সত্যতা মেলায় ছাত্রলীগের সহসভাপতি সানজিদা চৌধুরী অন্তরা সহ ৫ জনকে হল থেকে স্থায়ী বহিষ্কার করেছেন দেশরত্ন শেখ হাসিনা হল প্রশাসন।
আগামী বুধবার বেলা ১২ টার মধ্যে হল ত্যাগের নির্দেশ দেন বহিষ্কৃত শিক্ষার্থীদের।
সোমবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) বিকাল ৪ তার দিকে দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. শামসুল আলম সাংবাদিক সম্মেলনে এ তথ্য জানায়।
দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলের তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে উক্ত ঘটনার সত্যতা মেলে। এর ভিত্তিতে শেখ হাসিনা হলের জরুরী সভায় ছাত্রলীগের সহসভাপতি অন্তরা সহ ৫ শিক্ষার্থীকে হল থেকে স্থায়ী বহিষ্কার করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। এ সভায় উপস্থিত ছিলেন ড. মোঃ আহসানুল হক, ড. মোঃ নূরুল ইসলাম, ইসরাত জাহান, আসমা সাদিয়া রুনা ও মৌমিতা আক্তার।
এ বিষয়ে উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মাহবুবুর রহমান বলেন, উপাচার্য মহোদয় আসলে আমরা বসে বিশ্ববিদ্যালয়ে শৃঙ্খলা বিষয়ক যে আইন কানুন আছে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবারের কোনো সদস্যকে অসম্মান করা বা লাঞ্ছিত করা কখনই কাম্য নয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের যে বিধিবিধান আছে সেটা পর্যালোচনা করেই প্রতিপালন করা হবে। নিয়মশৃঙ্খলা সংক্রান্ত একটি কমিটি রয়েছে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে আমিও চাই সর্বোচ্চ শাস্তি হোক।
এ বিষয়ে তদন্ত কমিটির আহবায়ক অধ্যাপক ড. আহসানুল হক বলেন, আমরা হল তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন গতকাল সন্ধ্যায় জমা দিয়েছি। আজকে দুপুর সাড়ে ১২ টা থেকে দীর্ঘক্ষণ আলোচনা হয়েছে। তদন্ত কমিটি সত্যতা পেয়েছে। সত্যতার আলোকে ৫ অভিযুক্তের আবাসিকতা বাতিল করা হয়েছে। এই হলের সাথে তাদের কোনো সংশ্লিষ্টটা থাকবে না এই সুপারিশ করা হয়েছে। হল তদন্ত কমিটি ৫ জনের সম্পৃক্ততা পেয়েছে যে ফুলপরীকে শারীরিক এবং মানষিক নির্যাতন করেছে। প্রায় ত্রিশ জনের সাক্ষাৎকার নিয়েছি এবং ৮০ পৃষ্ঠার অধিক বিস্তৃত তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছি। তিনি আরও বলেন রাত ১২ টা থেকে আনুমানিক রাত সাড়ে ৩ টা পর্যন্ত ঘটনা সংঘটিত হয়েছে। এর মধ্যে ১২ টা থেকে ২.৬ পর্যন্ত দোয়েল ১ রুমে নির্যাতন করা হয়েছে। তারপর সেখান থেকে বের করে ডাইনিং রুমে সাড়ে ৩টা পর্যন্ত নির্যাতন করা হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদনে বিবস্ত্র করার নির্যাতন এবং শরীরে আলপিন ফুটানোর বিষয়টিও উঠে এসেছে। এছাড়াও যে ভিডিও করেছে সে দাবি করেছে তার মোবাইল ফোন হারিয়ে গেছে।
মোবাইল ফোন উদ্ধারের জন্য প্রক্টর বরাবর চিঠি দেওয়া হয়েছে। তবে মোবাইল ফোন যদি লুকিয়ে রাখে তবে সেটি পাওয়া দুষ্কর। সময় বেশি লাগার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন এত বিস্তৃত তদন্ত প্রতিবেদন লেখা এবং সবকিছু পুঙ্খানুপুঙ্খ ভাবে যাচাই বাছাই করার কারণে একটু সময় লেগেছে। পুরো ঘটনার সারসংক্ষেপ শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত লিখিত আকারে দিয়েছি। সেই সাথে গুরুত্বপূর্ণ পর্যবেক্ষণ ও সংযুক্ত করেছি। কোথায় কোথা কোন কোন ঘটনাগুলো ঘটেছে।সত্যতা পেয়েছি এর আগে প্রকাশ করিনি সেক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত গুলো বাস্তাবায়ন করা কঠিন হতো।
সাজেদ/